আফগান নারীদের শিক্ষা নিশ্চিতে উদ্যোগ নিন: জাতিসংঘে মালালা

আফগান মেয়েদের স্কুলে যাওয়া ও নারী শিক্ষকদের পড়ানোর অনুমতি নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী মালালা ইউসুফজাই।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে তিনি এ আহ্বান জানান বলে ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তন দেশটির নারীদের ওপর কেমন বিরূপ প্রভাব ফেলবে, তাও জাতিসংঘকে জানান মালালা।

ওই সময় মালালা তার নিজের অভিজ্ঞতা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সব মেয়ের স্কুলে যাওয়ার অধিকারের পক্ষে সোচ্চার আমি।

১৫ বছর বয়সে এক বন্দুকধারী স্কুলবাস থামিয়ে আমার নাম ধরে ডাকে। তারপর আমাকে গুলি করা হয়।আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিলে আফগান মেয়েরা তার মতোই ভোগান্তির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেন তিনি।

মালালা মনে করেন, তালেবানের সঙ্গে যেকোনো দেশের সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বশর্ত আফগানিস্তানে নারীদের অধিকার সমুন্নত রাখা। এই বার্তা তালেবানকে এখনই দেয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে জানান তিনি।

দীর্ঘ দুই দশক পর ক্ষমতায় এসে এরই মধ্যে নারীদের স্কুলে যেতে নিরুৎসাহিত করছে তালেবান। তাদের ঘরে থাকতে বাধ্য করা হচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে জাতিসংঘে আফগান নারীদের শিক্ষার বিষয়ে ফের জোর দিলেন।

২০১২ সালের ৯ অক্টোবর পাকিস্তানে নারীশিক্ষা প্রসারে কাজ করা মালালাকে তালেবানের এক সদস্য গুলি করে। ২০১৪ সালে সবচেয়ে কম বয়সী হিসেবে শান্তিতে নোবেল পান তিনি।

শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠায় নারীশিক্ষাকে শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে স্বীকৃতি দিতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি বৃহস্পতিবার আহ্বান জানান মালালা।

একই সঙ্গে আফগান নারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানানো হয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের আফগানিস্তানের নারী ইস্যুতে দ্রুত উদ্যোগ নেয়ার প্রসঙ্গে মালালা বলেন, নিজেদের ভবিষ্যৎ নিজেরাই বেছে নেয়ার অধিকারের দাবিতে আফগান নারীরা বিক্ষোভ করছেন।

কাবুলে তাদের বিক্ষোভ কাঁদানে গ্যাস, বন্দুকের বাঁট ও লাঠিচার্জ করে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে নারীশিক্ষা প্রসারে কাজ করা মালালা জানান, আফগানিস্তানের নারী শিক্ষক ও অধিকারকর্মীরা দেশটির শিক্ষাব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় গত ২০ বছর ধরে তৃণমূল পর্যায় থেকে কাজ করেন।

মালালা বলেন, তাদের বিরামহীন প্রচেষ্টার কারণে গত বছর আফগানিস্তানে স্কুলে ভর্তি হওয়া শিশুদের মধ্যে ৩৯ শতাংশই মেয়ে। এই অগ্রগতি এবং ওই মেয়েদের ভবিষ্যৎ এখন হুমকির মুখে।