সবার টিকা নিশ্চিতে জাতিসংঘে আহ্বান জানাবেন প্রধানমন্ত্রী

momen
ফাইল ছবি

জাতিসংঘের ৭৬ তম সাধারণ অধিবেশনে ধনী গরীব নির্বিশেষে সব দেশের জন্য কোভিড ভ্যাক্সিন নিশ্চিত করতে আহ্বান জানাবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বৃহস্পতিবার ১৬ সেপ্টেম্বর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রধানমন্ত্রীর জাতিসংঘ সফর নিয়ে করা এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মালদ্বীপ ও ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি, ইইউ প্রেসিডেন্ট ও জাতিসংঘ মহাসচিবের সাথে আলাদা বৈঠক করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এবারের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদল খুব ছোট আকারে গঠন করা হয়েছে। এ বছর সাধারণ বিতর্কের প্রতিপাদ্য কোভিড-১৯ থেকে পরিত্রাণ পাবার কৌশল।

এ সফরে প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ও জাতিসংঘ মহাসচিবের আমন্ত্রণে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।

এই সভায় প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কার্যক্রম তুলে ধরবেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি নিরসনে সম্মিলিত বৈশ্বিক উদ্যোগের আহবান জানাবেন।

২০ সেপ্টেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তর চত্বরে বৃক্ষরোপন করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সাইড ইভেন্টে অংশগ্রহণ করার কথা আছে। ইতোমধ্যে এই অনুষ্ঠান আয়োজনে ওআইসি,আসিয়ান এবং ইইউ দেশগুলোর পক্ষ থেকে সাড়া পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ছাড়াও গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, তুরস্ক, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এবং ওআইসি অনুষ্ঠানটির সহ-আয়োজক।

আমরা রোহিঙ্গা সমস্যার পঞ্চম বছরে পদার্পণ করেছি কিন্তু পাঁচ বছরে এক জনকেও মিয়ানমারে পাঠানো সম্ভব হয় নি। অথচ বাংলাদেশের জন্য রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তন এক নম্বর অগ্রাধিকার ইস্যু।

এই সাইড ইভেন্টের মাধ্যমে এই বক্তব্যই আমরা বিশ্ববাসীর কাছে পৌছে দিতে চাই। শুধু ঐতিহাসিক নয় সত্যিকার অর্থে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বিশ্ব যেনো আমাদের পাশে দাড়ায় বাংলাদেশ সেই আহবান জানাবে।

২৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ ফুড সিস্টেম সামিট শীর্ষক উচ্চ-পর্যায়ের সভায় প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন। খাদ্য খাতে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য সাফল্য তুলে ধরার জন্য এই সম্মেলন হবে একটি অনন্য উপলক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী উক্ত সভায় অংশগ্রহণ করে, প্রযুক্তিগত সহযোগিতা, কৃষি গবেষণা ও উন্নয়ন, টেকসই উৎপাদন, খাদ্য বিতরণ এবং সঞ্চয়ের ক্ষেত্রে বিভিন্ন অংশীজনদের মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ব্যাপারে বিশ্ব নেতৃত্বকে আহবান জানাতে পারেন বলে আশা করা যাচ্ছে।

প্রতি বছরের মত এবারও, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে একটি অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করবেন। কোভিড মহামারির প্রেক্ষিতে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে এ সভা অনুষ্ঠিত হবে।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী প্রতিবারের ন্যয় বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা যাচ্ছে।প্রধানমন্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের আয়োজনে একটি গোল টেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করবেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও এসময় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন উপস্থিত ছিলেন। জাতিসংঘের ৭৬তম সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে দু’সপ্তাহের সরকারি সফরে শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন প্রধানমন্ত্রী।

২০২০ সালের মার্চে করোনার প্রাদুর্ভাবের পর এটি প্রধানমন্ত্রীর প্রথম বিদেশ সফর হতে যাচ্ছে। সূচি অনুযায়ী, ফিনল্যান্ডের হেলসিঙ্কিতে ১৭-১৮ সেপ্টেম্বর দু’দিনের যাত্রা বিরতির পর ১৯ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী।

১৯-২৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিনি নিউইয়র্কে অবস্থান করবেন এবং ২৪ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ অধিবেশনে ভাষণ দেবেন তিনি। জাতিসংঘে দেওয়া এটি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৮তম ভাষণ।

নিউইয়র্কে সরকারি সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডিসি সফর করবেন। তিনি ২৫ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করবেন। ৩০ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার ওয়াশিংটন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। ফিনল্যান্ডে যাত্রা বিরতির পর ১ অক্টোবর দেশে ফিরবেন তিনি।