জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশসমূহকে তাদের প্রচেষ্টাসমূহ অব্যাহত রাখতে হবে।
মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি ও রোহিঙ্গাদের ওপর সৃষ্ট নৃশংসতম অপরাধের দায়বদ্ধতা নিরুপন করা এক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরি।
জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটির সাধারণ বিতর্কে বক্তব্যকালে তিনি এ কথা বলেন। মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) জাতিসংঘের স্থায়ী মিশন থেকে এ তথ্য জানানো হয়।
রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। এমনকি ভ্যাকসিনের উপযোগী সব রোহিঙ্গাদের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিন দিচ্ছে।
তবে দীর্ঘমেয়াদী এ সমস্যার সমাধান নিহিত রয়েছে নিজভূমি মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের ওপর। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও আঞ্চলিক দেশসমূহকে মিয়ানমার সঙ্কটের সমাধানে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলমান ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক বার্ষিক রেজুলেশন নিয়ে এ কমিটিতে আমরা ওআইসি ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করে যাবো।
সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশের অগ্রাধিকার বিষয়গুলো তুলে ধরেন ফাতিমা। রোহিঙ্গা সঙ্কট ছাড়াও তৃতীয় কমিটিতে বাংলাদেশ যেসব বিষয়গুলোকে বিশেষ গুরুত্ব দেবে তা হলো:
ভ্যাকসিন সমতা নিশ্চিতকরণ, নারীর ক্ষমতায়ন এবং নারীর বিরুদ্ধে সহিংসতা রোধ, শিক্ষাসহ শিশুদের সব অধিকারের সুরক্ষা, অভিবাসী কর্মীদের কল্যাণ ও অধিকারের সুরক্ষা এবং জাতীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে মানবাধিকার সমুন্নত ও সুরক্ষিত রাখা।
নাজুক পরিস্থিতিতে নিপতিত মানুষের ওপর কোভিড-১৯ যে অসামঞ্জস্যপূর্ণ প্রভাব ফেলেছে তা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত। তিনি এ সঙ্কট কাটিয়ে উঠতে সামগ্রিক ও টেকসই পুনরুদ্ধারের ওপর জোর দেন এবং এক্ষেত্রে বৃহত্তর একতা, সহযোগিতা ও সমন্বয়ের আহ্বান জানান।
ফাতিমা বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ভেতরে ও বাইরে ইতোপূর্বে বিদ্যমান অসমতা ও ব্যবধানকে এ কোভিড আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, কোভিড অতিমারি থেকে পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে গৃহীত কর্মসূচিতে যাতে কেউ বাদ না পড়ে তা নিশ্চিত করতে এ কমিটি ভূমিকা রাখবে।
