জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বজুড়ে বাড়বে সংঘাত

জলবায়ু পরিবর্তন ও তার প্রভাবে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও ক্ষয়ক্ষতির কারণে আগামী দশকগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মধ্যে সংঘাত বাড়বে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।

গতকাল বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এসব শঙ্কার কথা জানিয়েছে বৈশ্বিক থিংকট্যাংক ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিস।

সংস্থাটি বলছে, দিনদিন জনসংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি খাদ্যের নিরাপত্তাহীনতা, পানির সংকট এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগও বাড়ছে। তাই জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর প্রভাবে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতির কারণে আগামী দশকগুলোতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষের মধ্যে সংঘাত বাড়বে।

প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য উৎস থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য নিয়েছে আইইপি। সংস্থাটির ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার পরিচালক সার্জ স্ট্রোব্যান্টস জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা ৩০টি দেশকে শনাক্ত করা হয়েছে,

যেখানে প্রায় ১২৬ কোটি মানুষের বাস। গত এক দশকে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপর্যয় সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে এসব দেশে। আর সেখানকার মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশ এরই মধ্যে খাদ্য, পানি ও আবাসন সংকটের মধ্যে পড়েছে, যার প্রভাবে সংঘাতও বাড়ছে।

সম্পদের অভাব-সম্পর্কিত তিনটি মানদণ্ড এবং বন্যা, খরা ও ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রাসহ পাঁচটি দুর্যোগের ওপর ভিত্তি করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে আইইপি।

সংস্থাটির পরিচালক স্ট্রোব্যান্টস বলেন, পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখে থাকা দেশগুলোর পুরো ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার ঝুঁকি বোঝার জন্য আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন পর্যন্ত যাওয়ার দরকার নেই, শুধু এই আটটি পরিবেশগত হুমকির প্রভাবই তা বোঝার জন্য যথেষ্ট।

স্ট্রোব্যান্টস আরও বলেন, সংগৃহীত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত কয়েক বছর বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে সংঘাত ছড়িয়ে পড়ার যে প্রবণতা, সেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট দুর্যোগ ও সংকটের প্রত্যক্ষ ভূমিকা রয়েছে।

আইইপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে অতিরিক্ত মাত্রায় ব্যবহার করা হচ্ছে জীবাশ্ম জ্বালানি, ধ্বংস করা হচ্ছে বনাঞ্চল, যা দ্রুতগতিতে জলবায়ু পরিবর্তনের পাশাপাশি বাড়িয়ে তুলছে এর থেকে সৃষ্ট নানা সংকটও।

আর এসব কারণেই ভবিষ্যতে দেশ, জাতি, মানুষ-নির্বিশেষে একে অপরের সঙ্গে সংঘাতে ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদি বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি। এই তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান এখন সপ্তম।