আগলা গায়ে টিকা দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মী, মাঝে মধ্যে বিড়িও টানছেন!

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আগলা গায়ে নারীদের টিকা দিচ্ছেন মাঝে মধ্যে বিড়িও টানছেন এক স্বাস্থ্য কর্মী।তার গায়ে জড়ানো নেই কোনো শার্ট।পরনে আছে শুধু কালো একটি প্যান্ট। এভাবে খালি গায়ে নারীদের শরীরে দিচ্ছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে টিকা।

টিকা নিতে আসা নারীদের একটু চাপ কমলেই টিকাকেন্দ্রের চেয়ারে বসেই টানছেন সিগারেট! রোববার দুপুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।সরেজমিনে দেখা যায়, রোববার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মধ্যে করোনার টিকা দেওয়া হচ্ছে।

নারী-পুরুষদের জন্য নেই কোনো আলাদা বুথ।এ সময় একজন নার্স ও কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট শহিদুল ইসলাম খালি গায়ে নারীদের টিকা দিচ্ছেন। এ সময় বেশ কয়েকজন নারীকে অস্বস্তিতে পড়তে দেখা গেছে।

টিকা নেয়ার শেষে কেউ কেউ বলছেন, সরকারি হাসপাতালে এভাবে খালি গায়ে টিকা দেয়া এর আগে কোনোদিন দেখিনি।এমনকি এর কিছুক্ষণ আগেই শহিদুল ইসলাম টিকাকেন্দ্রের একটি চেয়ারে বসেই ধূমপান করেছেন। এ সময় তার পাশে টিকা প্রদানে সহায়তাকারী রেড ক্রিসেন্টসহ হাসপাতালের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

ধূমপান করার সময় পাশেই টিকা দেয়ার দৃশ্য দেখা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে প্রায় দুপুর ১টা পর্যন্ত তিনি খালি গায়ে টিকা দিয়েছেন। এর মধ্যে তিনি একবার ধূমপানও করেছেন।

হাসপাতালে আসা লালন মন্ডল নামের একজন জানান, একজন সরকারি কর্মচারী কোনোভাবেই খালি গায়ে দায়িত্ব পালন করতে পারেন না। এমন অবস্থায় তিনি আবার নারীদের শরীরে করোনার টিকা পুশ করছেন।সময় পেলেই তিনি টিকাকেন্দ্রে বসেই ধূমপান করছেন।

এ ঘটনায় তার উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত বলে আশা করে ভুক্তভোগী চিকিৎসা সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষ ।করোনা টিকা নিতে আসা মাহমুদা বেগম নামে এক নারী জানান, তাকে খালি গায়ে এক ব্যক্তি টিকা দিয়েছেন। এটা তার কাছে অস্বস্তিকর একটা অবস্থা।

যা একদমই দায়িত্ব জ্ঞানহীনতার একটি পরিচয়!কবিতা দাস নামের আরেক নারী জানান,আমি সরকারি হাসপাতালে খালি গায়ে কারোও দায়িত্ব পালন করতে এই প্রথম দেখলাম। এমন খালি গায়ে টিকা দেওয়ার বিধান যদি না থাকে তাহলে ওই ব্যক্তিকে উপযুক্ত শাস্তি হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) শহিদুল ইসলাম বলেন, গায়ের শার্ট ঘেমে ভিজে গিয়েছিল। তাই খুলে রোদে শুকাতে দিয়েছিলাম। এজন্য কিছু সময় খালি গায়ে টিকা দিয়েছি। আবার যখন লোকজনের চাপ কম ছিল, তখন একটু দূরে বসে ধূমপান করেছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অরুন কুমার জানান, খালি গায়ে সরকারি কোনো দায়িত্ব পালন করার নিয়ম নেই।

তাছাড়া পাবলিক প্লেসে বসে ধূমপান করার কোন বিধানও নেই। চাকরি বিধি অনুযায়ী যদি তিনি কোনো ধরনের অবহেলা করে থাকেন, তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।