বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ৪৭৬ কোটি টাকার প্রকল্প আসছে

bojropat - biddut

বজ্রপাতে মৃত্যু ঠেকাতে ৪৭৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. এনামুর রহমান।

তিনি আরো জানান, এ প্রকল্পের আওতায় বজ্রপাতের ৪০ মিনিট আগে সতর্কবার্তা দেয়ার যন্ত্র কেনা হবে। একই সঙ্গে বজ্রপাত থেকে বাঁচতে আশ্রয়কেন্দ্র করা হবে।

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এ সব তথ্য জানান। আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ও ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির ৫বছর পদার্পণ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. মোহসীনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বজ্রপাতের আগে মেঘের মধ্যে গুড়ুগুড়ু ডাক হয়। পজিটিভ-নেগেটিভ চার্জগুলো তৈরি হয়। চার্জ তৈরি হওয়ার ৪ মিনিট পরই বজ্রপাত হয়। এজন্য গুড়ুগুড়ু ডাক শুনলে যাতে মানুষ ঘরে থাকে বা মেঘ দেখে ঘরে যেতে পারে।

সেই সচেতনতা তৈরির কাজ করা হবে। তিনি আরো বলেন, আধুনিক বিশ্বে বজ্রপাতের ক্ষেত্রেও সাইক্লোনের মতো আগাম সতর্কবার্তা দেয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। কতগুলো মেশিন তৈরি করা হয়েছে যেগুলো ৪০ মিনিট আগেই শনাক্ত করতে পারে বজ্রপাত হবে এবং কোথায় হবে সেটা বলতে পারে।

তাই বজ্রপাতের ক্ষেত্রে আর্লি ওয়ার্নিং দেয়ার মেশিনগুলো আনা হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালে বজ্রপাতকে দুর্যোগের তালিকায় যুক্ত করা হয়। বর্তমানে দুর্যোগের ১৬টি ক্যাটাগরি রয়েছে। বজ্রপাত বাড়তে থাকায় বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।

প্রাথমিকভাবে বজ্রপাত প্রবণ অঞ্চলগুলোতে, বিশেষ করে হাওর-বাওড় এলাকায় গুরুত্ব বেশি দেওয়া হচ্ছে। এই সিগন্যালটা যাতে একটি অ্যাপের মাধ্যমে স্থানীয় মানুষের মোবাইলে ম্যাসেজ আকারে যেতে পারে, সেই কাজও করা হবে।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, আমরা যতগুলো মৃত্যুর খবর জেনেছি, সবগুলো খোলা মাঠ ও হাওরের মধ্যে। শহরে যারা ঘরবাড়িতে বসবাস করে তারা বজ্রপাতে মৃত্যুবরণ করে না। তাই খোলা মাঠ ও হাওরে বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রের মতো বজ্রপাত আশ্রয়কেন্দ্র করার পরিকল্পনা করেছি।

তিনি বলেন, আমরা ডিজাইন করেছি, এক ডেসিমেল জায়গায় একটা পাকা ঘর থাকবে। প্রত্যেক ঘরে একটি করে লাইটনিং অ্যারেস্টার দেয়া হবে। যাতে ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মধ্যে সতর্কবার্তা শোনার পর মানুষ সেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারে।

বজ্রপাত না হওয়া পর্যন্ত তারা অপেক্ষা করবে। তিনি আরো বলেন, এই আশ্রয়কেন্দ্রগুলো বহুমুখী হবে। এখানে কৃষক ও মৎস্যজীবীরা সকালে নাস্তা করতে পারবেন। দুপুরে খেতে পারবেন। ঝড়-বৃষ্টিতে আশ্রয় নিতে পারবেন। কেউ চাইলে বিশ্রামও নিতে পারবেন বলে জানান তিনি।

প্রকল্পের কাজ কবে শুরু হবে- জানতে চাইলে এনামুর রহমান বলেন, প্রকল্প প্রণয়ন করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় এর সম্ভাব্যতা যাচাই করছে, সেই রিপোর্ট আসলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর কাজ শুরু হবে।