ভোট এলে ভারতবিরোধী স্লোগান দেয় বিএনপি

hasan mahmud
ফাইল ছবি

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত দেশে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে। ভোট এলে হিন্দু সম্প্রদায়কে ভোটকেন্দ্রে যেতে বারণ করে এই বিএনপি-জামায়াত।

সারাদেশে পূজামণ্ডম, মন্দির ও হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনাকে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা নয়, বাংলাদেশের চেতনার মূল বেদিমূলে হামলা বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) দুপুরে সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।

কুমিল্লা ও রংপুরে সরকারের ইন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটেছে, সরকার বিরোধী দলশূন্য দেশ চায়—বিএনপির এমন বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই দেশে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল থাকুক। আমরা মনে করি শক্তিশালী বিরোধী দল গণতন্ত্রকে সংহত করে।

কিন্তু আমরা চাইলেও দুঃখজনক হচ্ছে, বিএনপি শক্তিশালী হতে পারছে না। বিএনপির জোট থেকেও নাকি পালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপির রাজনীতিও বেশ কয়েকজন ইতোমধ্যে ছেড়ে দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় কমিটির কয়েকজন ঘোষণা দিয়ে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি, স্থিতি, শান্তি—এটি অবশ্যই সরকার চায়। যে কোনো সরকারের সেটিই কামনা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ রচিত হয়েছে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খিস্ট্রান সবার মিলিত রক্তস্রোতের বিনিময়ে। একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ রচনা করার জন্য। এটি যেমন বাংলাদেশের মূল চেতনার বেদিমূলে হামলা, এটি সরকারের ওপরও হামলা। কারণ, এই হামলার পরে তারা সরকারকে দোষারোপ করতে চেয়েছিল।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, একটি সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের যে ভালো সম্পর্ক সেটি নষ্ট করতে চায়। একই সঙ্গে এক ঢিলে দুই পাখি মারার মতো করে তারা সরকারের সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের সম্পর্ক নষ্ট করা এবং পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট করার উদ্দেশ্যে হামলাগুলো করেছে। যে কোরআন শরিফ রেখেছিল, সে ধরা পড়লে বোঝা যাবে কার ইন্ধনে সে এটি করেছে।

বিভিন্ন জায়গায় মন্দির ও পূজামণ্ডপে যারা হামলা করেছে তারা গ্রেফতার হয়েছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তদন্তে আরও তথ্য বেরিয়ে আসছে। সবকিছু যখন দিবলোকের মতো স্পষ্ট হবে তখন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুখটা চুপসে যাবে।

কুমিল্লার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়। বাংলাদেশের কোনো সম্প্রদায়ের মানুষ সাম্প্রদায়িক নয়। দুষ্কৃতকারীরা এই বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটিয়েছে। এর পরে যে পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছিল, সরকার সেটি দমন করতে সক্ষম হয়েছে।

আমরা রাজনৈতিকভাবেও জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছি। যারা ষড়যন্ত্র করেছিল তারা কিন্তু আরও ষড়যন্ত্র করবে। কারণ, এর আগেও তারা ষড়যন্ত্র করেছিল। তাদের ষড়যন্ত্র ও কুচক্র বন্ধ হয়েছে বলে আমি মনে করি না।

বিএনপি বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা মনে করে, তাদের প্রথম পরিচয় হচ্ছে কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিস্টান। আমাদের প্রথম পরিচয় আমরা বাঙালি। আর দ্বিতীয় পরিচয় কে হিন্দু, কে মুসলিম, কে বৌদ্ধ, কে খ্রিস্টান।

আওয়ামী লীগ অসম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাস করে এবং এই বাংলাদেশকে পরিপূর্ণভাবে বাহাত্তরের সংবিধানের আলোকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। ভোট এলেই বোঝা যায় কারা সম্প্রদায়িক বিভাজনের রাজনীতি করে।