বাদশাহ আব্দুল্লাহকে খুন করেন সৌদি যুবরাজ!

সৌদি আরবের সাবেক বাদশাহ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আজিজকে হত্যা করেছেন বর্তমান যুবরাজ মোহম্মদ বিন সালমান—এমন অভিযোগ করেছেন সৌদি আরবের একজন সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা।

নিজের বাবা বাদশাহ সালমানকে দ্রুত ক্ষমতায় বসানোর জন্য এ কাজ করেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে যুবরাজ সালমানের বিরুদ্ধে।

সাদ আল জাবরি যিনি কানাডায় নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন তিনি ২০১৪ সালে সিবিএস নিউজকে দেওয়া ৬০ মিনিটের সাক্ষাৎকারে জানান, মোহাম্মদ বিন সালমান গর্ব করেন যে, তিনি সেই সময়ে বাদশাহ আব্দুল্লাহকে হত্যা করেছেন।

ওই সময়ে সালমান তার বাবার রাজ দরবারের প্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। এরপর ২০১৫ সালে বাদশাহ আব্দুল্লাহর মৃত্যুর পর তিনি ক্ষমতায় বসেন। আল জাবরি সে সময় মোহাম্মদ বিন সালমানকে সতর্ক করে বলেছিলেন, তার কাছে এমন ভিডিও আছে, যা অনেক গোপন তথ্য জানাতে পারে।

আল জাবরি বলেন, তিনি মারা গেলে এই ভিডিও প্রকাশ করা হবে। এটা ছিল সালমানকে চাপ দেয়ার সর্বশেষ প্রচেষ্টা। আল জাবরিকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য তার দুই সন্তানকে সৌদি আরবে আটকে রাখা হয়েছে। আবার তিনি যদি ফিরে আসেন তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হবে।

তিনি বলেন, মোহাম্মদ বিন সালমান ততদিন শান্তি পাবেন না যতদিন না আমি মারা যাই। কারণ, তিনি ওই ভিডিও নিয়ে অনেক ভয়ে আছেন। তিনি একজন সাইকোপ্যাথ কিলার। ২০১৮ সালে জামাল খাশোগির মৃত্যুর পর বিশ্বজুড়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েন মোহাম্মদ বিন সালমান।

২০১৪ সালের বৈঠকে মোহাম্মদ বিন নায়েফও উপস্থিত ছিলেন যিনি তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন। আল জাবরি বলেন, মোহাম্মদ বিন সালমান বলেছেন, তিনি তার বাবাকে দ্রুত ক্ষমতায় আনার জন্য বাদশাহ আব্দুল্লাহকে হত্যা করেছেন।

সে সময় সালমান বলেন, আমি বাদশাহ আব্দুল্লাহকে হত্যা করতে চাই, আমি রাশিয়া থেকে একটি বিষাক্ত হাতের রিং নিয়ে এসেছি, যা একবার তার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করলেই যথেষ্ঠ। আল জাবরি দাবি করেন, বিষয়টি পরে সৌদি রাজ পরিবার ধামাচাপা দেয়। তবে ওই ভিডিও রেকর্ডিং এখনো সংরক্ষিত আছে।

এদিকে সৌদি সরকার সিবিএস নিউজকে বলেছে, আল-জাবরি তার অপরাধ লুকানোর জন্য বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে বিভ্রান্তি তৈরির সৃষ্টির চেষ্টা করছে। আল জাবরি যে এই প্রথম নতুন চাপ সৃষ্টি করছে, তা নয়। ২০২০ সালের মার্চ থেকে তার ছেলে ও মেয়েকে আটকে রাখা হয়েছে।

সৌদি কোর্ট তার ছেলে ও মেয়েকে যথাক্রমে নয় ও সাড়ে ছয় বছরের সাজা ঘোষণা করেছে। তার বিরুদ্ধে যে সম্পদ জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে, সেই অভিযোগের ভিত্তিতে কানাডার বিচারক তার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।