খালেদা জিয়ার মাঝে শিক্ষার আলো নেই: হানিফ

mahabubul alam hanif
ফাইল ছবি

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ এমপি বলেছেন, মানবতার কারণে দণ্ড স্থগিত রেখে বেগম খালেদা জিয়াকে বাসায় চিকিৎসা নেয়ার সুযোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সেই বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার জন্য গ্রেনেড হামলা চালিয়েছিলেন। জাতির পিতার শাহাদাতবার্ষিকীর দিনে মিথ্যা জন্মদিন পালন করে প্রতিহিংসা দেখিয়েছেন। শিক্ষা না থাকলে মানবিকতা থাকে না। খালেদা জিয়ার মাঝে যে শিক্ষার আলো নেই তা তিনি বারবার প্রমাণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আগামীর বাংলাদেশ: আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। গোলটেবিল আলোচনার আয়োজন করে বিবার্তা২৪ডটনেট ও জাগরণ টিভি।

মাহবুবউল আলম হানিফ বলেন, শিক্ষার আলো মানুষের মধ্যে মানবিকতা তৈরি করে। বেগম খালেদা জিয়া এতটাই নিষ্ঠুর ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর গ্রেনেড হামলার পর পার্লামেন্ট রসিকতা করে উনি বলেছিলেন, শেখ হাসিনাকে কে মারতে যাবে?

উনি নিজেই ভ্যানিটি ব্যাগে করে এই গ্রেনেড নিয়ে গেছেন। এত নিষ্ঠুর ছিলো তার রসিকতা। তারপরও জননেত্রী শেখ হাসিনা মানবতা দেখিয়েছেন। কারণ তার মাঝে শিক্ষার আলো আছে। তিনি বলেন, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষার মাধ্যমে জাতি গঠন হয়।

আমাদের সমাজে নীতি-নৈতিকতা অনেক অবক্ষয় হয়েছে। অনৈতিকতা প্রতিরোধ করার জন্য আমাদেরকে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। আমাদের এতই দুর্ভাগ্য, অনৈতিক কাজকে কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় সেজন্য নতুন নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করতে হচ্ছে।

প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেগুলো রোধ করার চেষ্টা করতে হচ্ছে। শিক্ষা জীবনের শুরু থেকেই নৈতিক শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন। প্রাথমিক শিক্ষায় নীতি-নৈতিকতা শিখাতে পারলে আমরা এই অনৈতিকতা থেকে বের হয়ে আসতে পারবো।

হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধু শিক্ষাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। শিক্ষাকে প্রাধাণ্য দিয়ে দেশ গড়ার ভাবনা করেছিলেন। যুদ্ধের পর সীমিত সম্পদের দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছিলেন। ১ লাখ ৪০ হাজারের মতো শিক্ষককে সরকারিকরণ করেছিলেন।

শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজিয়ে গোটা জাতিকে সুশিক্ষিায় শিক্ষিত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যা করে রাষ্ট্র ক্ষমতা দখল করা হয়েছিলো।

সে সময়ে আঘাতটা শিক্ষা উপরও এসেছিলো। এরপর বিএনপি-জামায়াত সরকারের আমলে প্রাইমারি, হাই স্কুলের শিক্ষা ব্যবস্থার অধঃপতন ঘটেছিলো। মেধাহীন শিক্ষকদের অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা দেশে মেধা ধরে রাখতে পারি না। এই মেধাটা চলে যাওয়ার বড় একটি কারণ ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থীরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ কম পায়।

তাই স্বাভাবিকভাবে বাইরে চলে যাচ্ছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে বিদেশে গিয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিয়ে অনেকে আর দেশে আসেন না। আমরা তাদের কাজে লাগাতে পারছে না। আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভিসি, প্রো-ভিসিদেরকে টেন্ডারের ব্যাপারেও সময় দিতে হয়।

এসব হলে শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব নয়। এটার পরিবর্তন হওয়া দরকার। তিনি বলেন, আমাদের দেশে শিক্ষাকে লাভজনক হিসেবে পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। পড়ালেখা করে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার কথা বলা হয়। মানুষের সেবার মানসিকতা তৈরি করা হয় না।

অর্থবিত্তের দিকে মানুষকে লোভ থেকে আমাদের মধ্যে অনিয়ম, অনৈতিকতা বাড়ছে। শিক্ষা মনকে উন্মুক্ত করে। চিন্তা-চেতনার প্রসার করে জীবনকে আরো সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করে।

তাই শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। শিক্ষার আলো না থাকলে ধর্মান্ধতার সৃষ্টি হয় উল্লেখ করে হানিফ বলেন, ইসলামের ইতিহাস পড়ে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ কম।

বিষয় নিয়ে নতুন করে চিন্তা ভাবনা করা দরকার। যেসব বিষয় পড়লে আউটকাম আসবে, দেশের উপকার হবে সেসব বিষয় পাঠ্যক্রমে যুক্ত করার চিন্তা করা দরকার।

মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষায় যারা আছেন তাদেরকে নিয়ে হেফাজতে ইসলাম নানা কমকান্ড চালাচ্ছে, ধর্মীয় অনুভূতি কাজে লাগিয়ে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এসবের কারণ একটাই তাদের মধ্যে শিক্ষার আলোটা পুরোপুরি পৌঁছাতে পারেনি।