‘ফয়সালা রাজপথেই হবে’, ফখরুলের হুঁশিয়ারি

mirza fokrul
ফাইল ছবি

‘হারিয়ে যাওয়া’ রাজনৈতিক স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনার ফয়সালা ‘রাজপথেই হবে’ বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপি আয়োজিত আলোচনা সভায় এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তৃতীয় বর্ষে ‘ভোটাধিকার হরণের কালো দিবস’ শিরোনামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আজকে স্বাধীনতার ৫০ বছর হয়েছে। অনেকে অনেক কিছু বলেন। আওয়ামী লীগ সব সময় বলে উন্নয়ন। অনেক উন্নয়ন করে ফেলেছি।

কিন্তু আমরা রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারিয়ে ফেলেছি। এই স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে আনতে হলে, আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সুসংগঠিত করতে হলে এবং গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হলে

এবং বেগম খালেদা জিয়াকে যদি বের করে আনতে চাই, তারেক রহমানকে যদি ফিরিয়ে আনতে চাই তাহলে আন্দোলন, আন্দোলনের কোন বিকল্প নেই।

আসুন এই মুহুর্ত থেকে আমরা এগিয়ে যাই, ঐক্য সৃষ্টি করি। রাজপথেই ফয়সালা হবে। দুর্নীতি মামলায় আদালতের রায়ে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার ইস্যুটি নিয়েও কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি চাই। এটা আমাদের এক নম্বর কথা। কেন চাই? কারণ তিনি একমাত্র নেত্রী যিনি গণতন্ত্রকে প্রতিষ্ঠা করবার জন্য ৯ বছর রাজপথে সংগ্রাম করেছেন। উড়ে এসে জুড়ে বসে মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী হন নাই। মানুষকে সঙ্গে নিয়ে হয়েছেন।

আর গণতন্ত্রের প্রতি আস্থা ও বিশ্বাস এত বেশি যে তিনি এখন পর্যন্ত বন্দি, হাসপাতালে আছেন, অত্যন্ত জটিল দুরুহ রোগে আক্রান্ত হয়ে আছেন এবং তার চিকিৎসকরা বলছেন- তাকে বাইরে নেয়া ছাড়া উপায় নেই। কিন্তু তিনি মাথা নত করছেন না।

খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য ‘বড় বড় লড়াই’ ও ‘সংগ্রাম’ করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই লড়াই আমরা করে চলেছি। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতার আসার পর থেকে ষড়যন্ত্র করে এখান থেকে রাজনীতিকে বিতাড়িত করার চেষ্টা করছে, তার বিরুদ্ধে আমরা তো লড়াই করে যাচ্ছি।

আমরা এখনও লড়াই করছি। জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে আমাদের এই লড়াই এখন বেগবান হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, এই লড়াই অতি অল্প সময়ে মধ্যে একটা দুর্বার গণ আন্দোলনে পরিণত হবে।

এই গণআন্দোলনের মধ্যে দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে সক্ষম হব, আমরা আমাদের গণতন্ত্রকে উদ্ধার করতে সক্ষম হব। বিএনপি মহাসচিব বলেন, এক এগারোর ঘটনা যে ঘটেছে। এই ১/১১ এর আগে থেকেই ২০০১ সালে বিএনপি জোটকে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছে।

তারপর থেকেই কিন্তু এ চক্রান্ত শুরু হয়েছে। যে কথা দাদা (গয়েশ্বর চন্দ্র রায়) বললেন, এটা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটা পুরোপুরিভাবে বাংলাদেশকে একটা বিরাজনীতিকরণের একটি প্রক্রিয়া।

সংসদে বিরোধী দল বলতে এখনও কিছু নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের মনে থাকার কথা, ১/১১ পরে ফখরুদ্দিন-মঈনউদ্দিনের যে স্লোগানটা ছিলো, মাইনাস টু। পরে সেটাকে শেখ হাসিনা তাদের সঙ্গে আঁতাত করে মাইনাস ওয়ানে নিয়ে এসেছেন।

অর্থাৎ বুঝতে হবে, ওখানে যেন রাজনীতি না থাকে। সেই প্রক্রিয়ায় কিন্তু এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি, ছাত্র সংসদে এখন কোনো নির্বাচন হয় না। ডাকসুতে একবার হয়েছে, আবার বন্ধ হয়ে গেছে। যে সংসদটা আছে, সেই সংসদে বিরোধী দল বলতে কিছু নেই।

সরকারি কর্মকর্তারা এখন একেবারে আকাশে উঠে গেছে’ মন্তব্য করে ফখরুল বলেন, ‘রাজনৈতিক ও আওয়ামী লীগের নেতাদের কোনো মূল্যই নেই।

একজন ওসি সরাসরি বলেন, আপনারা কে? আপনাদের তো আমরাই বানিয়েছি। অর্থাৎ রাজনীতিটা পুরোপুরি ভাবে সরিয়ে দিয়ে সামরিক আমলাতান্ত্রিক একটা ব্যবস্থা এখানে চালু করার ব্যবস্থা হয়েছে।

২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ২০১৮ সালে প্রধান ভূমিকা কে পালন করেছেন? এইচ টি ইমাম। তিনি পুরোপুরিভাবে একটা আমলা।

তাকে দায়িত্ব দিয়ে দেয়া হয়েছিল সমস্ত আমলাদেরকে একখানে করে এই ব্যবস্থা…। আমরা যারা নির্বাচন করেছি, আমরা খুব ভালো করে জানি, এর প্রধান ভূমিকা, মাঠে যারা কাজ করেছে- সেটা হচ্ছে পুলিশ।