নাটক করতেই দুদকে গেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

আওয়ামী লীগ নেতাদের বিভিন্ন দুর্নীতির খতিয়ান নিয়ে বিএনপি নেতারা দুর্নীতি দমশন কমিশনে গেছেন, এমন খবরের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য-সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি নেতারা নাটক করতে দুদকে গেছেন।

সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে পিআইবি সোহেল সামাদ সাংবাদিকতা পুরস্কার ২০২০ প্রদান অনুষ্ঠান শেষে তিনি এই মন্তব্য করেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা যখন দুর্নীতি নিয়ে কথা বলে তখন মানুষের মধ্যে হাস্যরসের সৃষ্টি হয়। সত্যিকার অর্থে বিএনপি নাটক করতেই দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদকে গেছে।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি টেলিভিশনে দেখলাম, দুর্নীতিতে যারা বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলো তাদের পক্ষ থেকে আলাল-দুলালরা দুদকে গেছেন।

আমি মনে করি দুদক বরং তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে হাওয়া ভবনের মাধ্যমে যে লুটপাট হয়েছে এবং তাদের কারণে কিভাবে দেশ দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সে তথ্যটা পাবে।

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে কারাগারে যাওয়া মুন্সীগঞ্জের শিক্ষক জামিন পেয়েছেন গত রোববার। সারাদেশে তোলপাড় তোলা সেই প্রসঙ্গটি নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ওই ঘটনার পেছনে কারও হাত থাকতে পারে।

তিনি বলেন, হৃদয় মন্ডলের পুরো ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক, অনভিপ্রেত। তিনি জামিনে মুক্তির পরও বলেছেন তার বিরুদ্ধে সেখানকার শিক্ষকদের একটি আভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র হয়েছে। আমি মনে করি, এর পেছনে আরও কারও হাত থাকতে পারে।

পাকিস্তানের নির্বাচন পদ্ধতি গণতন্ত্রের জন্য আদর্শ- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা এত দিন ধরে বলে আসছিলাম বিএনপি এবং তার মিত্রদের কাছে পাকিস্তানই হচ্ছে আদর্শ।

তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন দেশটাকে পাকিস্তানের সাথে কনফেডারেশন করতে, কিন্তু পারেন নাই। তারা যে এখনও পাকিস্তানকে অনুসরণ করেন, দেশটাকে পাকিস্তানি ভাবাদর্শে নিয়ে যেতে চান, সেটি মির্জা ফখরুল সাহেব গতকাল খোলসা করেছেন।

এর আগে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসানের হাতে পিআইবি- সোহেল সামাদ পুরস্কার ২০২০ এর সম্মাননা স্মারক, অভিজ্ঞানপত্র ও চেক তুলে দেন।

তথ্যমন্ত্রী তার বক্তব্যে সৈয়দ বদরুল আহসানকে সুলেখক, সজ্জন এবং নিখাদ ভদ্রলোক হিসেবে আখ্যায়িত করে অভিনন্দন জানান। ১৯৯৯ সাল থেকে সাংবাদিকতায় এই পুরস্কার প্রবর্তনের জন্য প্রয়াত সাংবাদিক সোহেল সামাদের পরিবারকে এবং সহযোগিতার জন্য পিআইবিকে ধন্যবাদ দেন।

তিনি বলেন, গুণী সাংবাদিক তৈরি করার ক্ষেত্রে এ ধরণের পুরস্কার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: মকবুল হোসেন, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট- পিআইবি’র মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ, পিআইবি-সোহেল সামাদ পুরস্কারপ্রাপ্ত বিশিষ্ট সাংবাদিক সৈয়দ বদরুল আহসান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। সৈয়দ বদরুলের সহধর্মিণী সৈয়দা জাকিয়া ও পিআইবি কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

১৯৫৪ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারি জন্মগ্রহণকারী সৈয়দ বদরুল আহসান তার চার দশকের সাংবাদিকতায় এশিয়ান এজ, নিউ নেশন, মর্নিং সান, বাংলাদেশ অবজারভার, ইনডিপেনডেন্ট, নিউজ টুডে এবং ডেইলি স্টার পত্রিকায় কাজের পাশাপাশি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, সাউথ এশিয়া মনিটরসহ বিভিন্ন দেশের সংবাদপত্রে নিয়মিত কলাম লিখেছেন।

১৯৯৭ থেকে ২০০০ সাল অবধি লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে প্রেস মিনিস্টারের দায়িত্ব পালন করেন তিনি। ‘ফ্রম রিবেল টু ফাউন্ডিং ফাদার : শেখ মুজিবুর রহমান’, ‘গ্লোরি এন্ড ডিসপেয়ার: দ্য পলিটিকস অভ তাজউদ্দীন আহমেদ’, ‘দ্য হিস্ট্রি মেকারস ইন আওয়ার টাইমস’ তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ।