চীনকে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার করছে বাংলাদেশ

সিঙ্গাপুর এবং শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরের স্থবিরতা এড়িয়ে ইউরোপ-আমেরিকায় পণ্য পাঠাতে চীনকে বিকল্প পথ হিসেবে বেছে নিয়েছে বাংলাদেশ।

হংকংসহ চীনের দক্ষিণাংশের বন্দরগুলোর সঙ্গে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হবে চলতি মাসেই।সুইজারল্যান্ড  ভিত্তিক একটি শিপিং প্রতিষ্ঠান ৬টি জাহাজের অনুমতি চাইলে প্রথম পর্যায়েই দুটির অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। যাত্রাপথে ১৩ দিন কমে আসায় আশার আলো দেখছেন গার্মেন্টস ব্যবসায়ীরা।

আসন্ন মৌসুমে বাংলাদেশ থেকে রফতানি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি। কিন্তু শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরের অর্থনৈতিক স্থবিরতা আর সিঙ্গাপুর বন্দরের কনটেইনার জট জটিলতা সৃষ্টি করেছে দেশের তৈরি পোশাক রফতানিতে।

এই দুটি বন্দরকেই ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হিসেবে ব্যবহার করে ইউরোপ-আমেরিকায় বাংলাদেশ থেকে পণ্য পাঠানো হয়। বিজিএমইএর প্রথম সহসভাপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের যদি পণ্য পাঠাতে দেরি হয় অর্থাৎ সেলস ফল করে তাহলে বায়াররা বিভিন্ন অজুহাত দেখাবে।

বিশেষ করে ডিসকাউন্ট চাইবে তারা। এতে করে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বে। স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ১৩ দিনের মধ্যে সিঙ্গাপুর কিংবা শ্রীলংকার কলম্বো বন্দরে কনটেইনার আনা নেয়া করলেও এখন দ্বিগুণ সময় লাগছে। এ অবস্থায় বিকল্প পথ চীনকে ব্যবহারের অংশ হিসেবে সরাসরি জাহাজ চলাচলের প্রস্তুতি নিয়েছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক শিপিং প্রতিষ্ঠান মেডিটেরিয়ান শিপিং কোম্পানি।

চলতি মাসেই প্রতিষ্ঠানটি চারটি এবং আগামী মে মাস থেকে এই রুটে ছয়টি জাহাজ চালু করতে চায় প্রতিষ্ঠান টি। মূলত জাহাজগুলো হংকং-চীনের ইয়াংটিয়াং এবং শেকু বন্দর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসা-যাওয়া করবে।

প্রয়োজনে যাত্রাপথে ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দর হিসাবে মালয়েশিয়ার তাঞ্জুম পালাপাস এবং সিঙ্গাপুর বন্দর হয়েও আসতে পারবে। মেডিটেরিয়ান শিপিং কোম্পানির হেড অব অপারেশন অ্যান্ড লজিস্টিক আজমীর হোসাইন চৌধুরী বলেন, সরাসরি কার্গোগুলো চলে আসায় কমপক্ষে ১২-১৫ দিন সময় কম লেগেছে।

ইতোমধ্যে দুটি জাহাজকে চলাচলে অনুমতি দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি আবেদনগুলোও প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে। আর যাত্রাপথের সময় অর্ধেকে নেমে আসায় বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠানের অর্ডার আরও বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, চীন-চট্টগ্রাম সরাসরি রুট চালু হওয়ায় অনেক খানি সময় বেচে যাবে। এতে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবেন।

বিজিএমইএর সহসভাপতি রাকিবুল আলম চৌধুরী বলেন, পণ্যজটের কারণে বড় অঙ্কের একটি টাকা আমাদের গচ্চা দিতে হয়। নতুন রুট চালু হলে অতিরিক্ত এই খরচটি কমে আসবে।

সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে আগামী ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বেঙ্গল এক্সপ্রেস নামে যাত্রা শুরু করবে মেডিটেরিয়ান শিপিংয়ের এসব জাহাজ। সূত্র: সময় সংবাদ