মানুষের জন্য কিছু করে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য: মেয়র লিটন

একটি শিশৃু হেরে গেলে বেনাপোল হেরে যাবে, একটি শিশু হেরে গেল দেশ হেরে যাবে। ওদের জয় পরাজয়ের সাথে বেনাপোলের জয় পরাজয় দেশের জয় পরাজয় ও সন্মান মর্যদা মিশে আছে। তাই শুধু নিজের সন্তান নয় বাড়ির আশে পাশে যে সকল অসচ্ছল শিশু রয়েছে তাদেরও দেখ ভালের দায়িত্ব এই নগরবাসীর বিত্তবানদের উপর বর্তায়।

এই পৌর সভা এবং সমাজের বিত্তবান শ্রেনীর মানুষের দায়িত্ব পিছিয়ে পড়া পরিবারের সন্তানদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিশ্চিত করা। আমি আমার দায়িত্বকালীন সময় পৌর সভার উন্নয়নের জন্য সাধ্য ও সামর্থ্য মত চেষ্টা করেছি।

আরো উন্নয়নের জন্য এবং হাসপাতাল পার্ক নির্মাণ ও সংকট কালীন সময়ে পানি ধরে রাখার জন্য ওয়ার ট্রিটমেন্ট প-ান্ট ওভার ট্যাংকের জন্য কাজ চলছে । কথাগুলো বললেন বেনাপোল পৌর সভার মেয়র, ও প্রশাসকের দায়িত্বভার অর্পন – গ্রহণ ও পৌর পরিষদের বিদায় সংবর্ধন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য মেয়র আশরাফুল আলম লিটন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১ টার সময় বেনাপোল পৌর কনফারেন্সরুমে পৌর সভার আয়োজনে পৌর
সভার দায়িত্বভার বুঝে নেয়ার অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রশাসক হিসাবে শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নারায়ন চন্দ্র পাল।

সদ্য বিদায়ী বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, আমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য
পৃথিবীতে এসেছি। আবার চলে যাব। তার আগে যে কয়দিন আমরা বেঁচে থাকব সমাজের মানুষের জন্য কিছু করে যাওয়া আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আমার প্রায় এক যুগ দায়িত্ব থাকার মধ্যে আমি বেনাপোল পৌর সভায় প্রায় ১ শত বিঘা সম্পদ ক্রয় করেছি। তৈরী হয়েছে এই সময় বেনাপোল শহরের প্রবেশদ্বারে দৃষ্টি নন্দন গেইট। বাস টার্মিনাল, ট্রাক টার্মিনাল পৌর বিয়ে বাড়ি সহ অসংখ্য রাস্তাঘাট ক্লাব। আমার দায়িত্ব কালিন সময় আমি শুন্য হাতে দায়িত্ব নেই।

বসার কোন স্থান ছিল না। একটি ভাড়া বাসায় পৌর সভার কার্যক্রম চলত। মানুষ ছিল টাক্স বিমুখ। আমি ইমামদের সাথে বৈঠক করে তাদের বুঝিয়ে শুরু করি ট্যাক্স সহ অন্যান্য উন্নয়নের কার্যক্রম।

এই পৌর সভার কিছু বিত্তবান মানুষ ছাড়া বর্তমানে সকল শ্রেনী পেশার মানুষ পৌর ট্যক্স প্রদান করেন। আমার উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় রয়েছে এই পৌর সভায় ৬ হাজার স্কয়ার ফিটের একটি বাড়ি ভাড়া নিয়ে হাসপাতালে কার্যক্রম শুরু।

যা আগামি তিন থেকে ৫ বছরের মধ্যে নতুন
ডিজাইনে ৬ কোটি টাকা ব্যায়ে ১৬ তলা ভবন নির্মান হবে। সারা বাংলাদেশে মাত্র ১১টি সিটি কর্পোরেশন ও পৌর সভায় এই আধুনিক হাসপাতাল নির্মান হবে তার মধ্যে রয়েছে যশোর এর বেনাপোল।

নির্মাণ হবে জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রচেষ্টায় একটি পরিচ্ছন্ন কর্মী নিবাস। এছাড়া ৮ কোটি ৪০ লাখ টাকায় নির্মান হবে ওভার ট্যাংক। যা সংকটকালীন সময়ে ব্যবহার হবে। এর ফাইল সৌদি আরব সরকারের কাছে রয়েছে। সংশিষ্ট মন্ত্রনালয়ে ইতিমধ্যে আমি চিঠি দিয়েছি।

পৌর সভার হাকর নদী খনন করে পরিবশে ফিরিয়ে আনা হবে। যার জন্য ইতিমধ্যে পাশ হয়েছে ৫ কোটি টাকা । অতি দ্রুত টেন্ডার হবে। কারন সবুজ পানি আমাদের পরিবেশ এর জন্য প্রয়োজন।

দেশের ৬৪ টি জেলায় সরকার নির্মান করবে ৬৪ টি পার্ক। তার মধ্যে যশোর জেলার বেনাপোলে ও নির্মান হবে একটি আধুনিক মানের পার্ক। তিনি আরো বলেন একজন মানুষ শুধু জনপ্রতিনিধি সরকারের উচ্চপর্যায় গেলে কাজ আনতে পারে না। এবং সব উন্নয়ন করতে পারবে এটা ভুল কথা।

তার কারন তার থাকতে হবে ব্যক্তিগত সম্পর্ক, স্বদিচ্ছা, যোগাযোগ ও মানসিকতা। আপনারা এরকম মানুষ দেখে জন প্রতিনিধি নির্বাচন করবেন। আপনারা জানেন বেনাপোল পৌরসভা কে পিছিয়ে দেয়ার জন্য কিছু মানুষ রয়েছে এবং চেষ্টা ও করেছে।

আমি কিন্তু সে দিকে সময় নষ্ট না করে বেনাপোল পৌর সভাকে এগিয়ে নিয়ে দেশ বিদেশে সন্মানের জায়গায় নিয়ে গেছি। আমি এই পৌর সভার প্রতিটি পাড়ায় মহল-ায় অলি গলিতে এল ইডি বাল্ব লাগিয়েছি। এক শ্রেনীর মানুষ বিরোধিতার জন্য সে সব্ লাইট ভেঙ্গে ফেলেছে ।

সবশেষে তিনি বলেন এই পৌরসভায় আমি মুল্যবান মানুষ না। একজন হাজার কোটি টাকার মানুষ ও যে মুল্যবান না তার চেয়ে মুল্যবান আপনারা। কারন আমরা যা দিতে পারব না এই পৌরসভা আপনাদের দিতে পারবে। এই পৌর সভার সকল সম্পদের মালিক আপনরা।

আজ প্রশাসক নিয়োগ হচ্ছে। কাল মেয়র আসবে আবার চলে যাবে কিন্তু আপনারা থাকবেন । তাই এই সম্পদের মালিক আপনারা। এরপর মেয়র শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পৌরসভার নতুন প্রশাসক হিসাবে যোগদানের জন্য দায়ত্ব অর্পন করেন।

এবং উত্তরীয় পরিয়ে ও ফুল দিয়ে নতুন অতিথিকে বরন করে নেন। নতুন প্রশাসক নারায়ন চন্দ পাল ও মেয়র আশরাফ‚ল আলম লিটনকে ফুলের তোড়া তুলে দিয়ে দায়িত্ব বুঝে নেন। এবং উভয়ে গ্রহন ও অর্পন ফাইলে স্বাক্ষর করেন।

পৌর সভার প্রধান সহকারী আব্দুল-াহ আলম মামুন রনি বলেন আমি সারাদেশের পৌর সভার
একজন নেতা হিসাবে দেখেছি ৩২৭ টি পৌরসভায় ৫ থেকে ৬ মাস বেতন ভাতা বকেয়া। আমাদের পৌর সভায় মেয়র সাহেব চলে যাওয়ার সময় কোন বেতন ভাতা বাকি নেই। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পৌর সচিব সাইফুল ইসলাম।