কম ক্ষতিগ্রস্ত মুদ্রার তালিকায় বিশ্বে দ্বিতীয় টাকা

1000/500 taka

কোভিড পরিস্থিতি শেষ হতে না হতেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কয়েকটি তেল রপ্তানিকারী দেশ ছাড়া পৃথিবীর সব দেশেই ডলারের বিপরীতে মুদ্রার মূল্যমান ব্যাপকভাবে কমেছে।

সাম্প্রতিককালে ডলারের বিপরীতে নিজস্ব মুদ্রার মূল্যমান কম হ্রাস পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে এশিয়াসহ গোটা বিশ্বে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে আর বিশ্বের সব উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম স্থানে।

আর একই সময়ে কয়েকটি তেল রপ্তানিকারী দেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সব দেশের মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটি পরিচালিত এক গবেষণা থেকে এ তথ্য উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।

শনিবার (২১ মে) বিকেলে ধানমন্ডির বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির কার্যালয়ে দলের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সভায় তিনি এ গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, এই তথ্য নিঃসন্দেহে প্রমাণ করে যে, রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতি কে এক মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছেন।

গবেষণায় দেখানো হয়, বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান কমেছে ৩ দশমিক ৪১ শতাংশ, ভারতীয় রুপির কমেছে ৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ, পাকিস্তানী রুপির কমেছে ৩০ দশমিক ৬৩ শতাংশ, নেপালি রুপির কমেছে ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ, মায়ানমার কিয়াটের কমেছে ১২ দশমিক ৬৭ শতাংশ, চীনা উয়েনের ৫ দশমিক ৪ শতাংশ,

থাই বাথের ৯ দশমিক ৬৬ শতাংশ, জাপানি ইয়েনের ১৭ দশমিক ৩২ শতাংশ, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ানের ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ, মালয়েশিয়ান রিঙ্গিতের ৩ দশমিক ৯ শতাংশ, ফিলিপিনো পেসোর ৯ শতাংশ, তাইওয়ান ডলারের ৬ দশমিক ৪ শতাংশ, সিঙ্গাপুর ডলারের ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ,

ব্রুনাই ডলারের ৩ দশমিক ৬০ শতাংশ, লাও কিপ এর (লাওস) ৪১ শতাংশ, টার্কিশ লিরার ৮৯ দশমিক ৩৭ শতাংশ, মিসরিয় পাউন্ডের ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ, দক্ষিণ আফ্রিকান রেন্ড কমেছে ১৩ দশমিক ৬৬ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ান ডলারের কমেছে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশ,

নিউজিল্যান্ড ডলারের কমেছে ১০ দশমিক ৭৭ শতাংশ, ব্রিটিশ পাউন্ডের ১১ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ইউরোর কমেছে ১৩ দশমিক ৪০ শতাংশ, সুইস ফ্রাঙ্কের কমেছে ৮ দশমিক ৫৫ শতাংশ, সুইডিশ ক্রোনারের ১৯ দশমিক ৬৭ শতাংশ, নরওয়েজিয়ান ক্রোনের কমেছে ১৬ দশমিক ৫৪ শতাংশ,

ডেনিশ ক্রোনের ১৫ দশমিক ৩৯ শতাংশ, পোলিশ জেলাটির ১৮ দশমিক ৭৪ শতাংশ, কানাডিয়ান ডলারের ৬ দশমিক ৩২ শতাংশ, আর্জেন্টাইন পেসোর ১১ দশমিক ৫ শতাংশ, চিলিয়ান পেসোর কমেছে ১৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

গবেষণায় দেখানো হয়, ব্রাজিল এবং কয়েকটি তেল রপ্তানিকারী দেশ ছাড়া পৃথিবীর প্রায় সকল দেশের মুদ্রার বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান বৃদ্ধি পেয়েছে। যেসব কারেন্সির বিপরীতে বাংলাদেশি টাকার মূল্যমান বৃদ্ধি পেয়েছে তাদের মধ্যে জাপানি ইয়েনের বিপরীতে বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ দশমিক ৮৬ শতাংশ,

ইউরোর বিপরীতে ১০ দশমিক ৯৪ শতাংশ, ভারতীয় রুপির বিপরীতে ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ব্রিটিশ পাউন্ডের বিপরীতে ৮ দশমিক ০৭ শতাংশ, অস্ট্রেলিয়ান ডলারের বিপরীতে ৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ, চীনা উয়েনের বিপরীতে ১ দশমিক ৩২ শতাংশ,

কানাডিয়ান ডলারের বিপরীতে ২ দশমিক ৯৪ শতাংশ, দক্ষিণ কোরীয় ওয়ানের বিপরীতে ৯ দশমিক ৩৮ শতাংশ, ডেনিশ ক্রোনের বিপরীতে ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, আর্জেন্টাইন পেসোর বিপরীতে ২১ দশমিক ৬৯ শতাংশ, সুইস ফ্রাঙ্কের বিপরীতে ৪ দশমিক ৯২ শতাংশ,

নিউজিল্যান্ড ডলারের বিপরীতে ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, কোভিড পরবর্তী সময়ে ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সারা বিশ্ব একটা গভীর অর্থনৈতিক সংকট ও অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।

এই সময়ে বিএনপি এবং তাদের সহযোগীরা বাংলাদেশে নানা গুজব ও অপপ্রচার ছড়িয়ে দেশে অস্থিরতা সৃষ্টি করে দেশের বড় ক্ষতি করতে চাচ্ছে। তারা দেশবিরোধী অপশক্তি। আমাদের জাতীয় স্বার্থে এদের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এক মজবুত ভিতের উপর দাঁড় করিয়েছেন। শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের আকাশচুম্বী সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে দেশবিরোধী শক্তি এই অপপ্রচার চালাচ্ছে। এরা বাংলাদেশের ধ্বংস চায়।

ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্যরা জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে অতন্ত্র প্রহরীর মতো কাজ করবে এবং এই অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ প্রতিটি ডিজিটাল প্লাটফর্মে সক্রিয় থেকে এই অশুভ শক্তির নানা মিথ্যাচার ও অপপ্রচার প্রতিহত করবে।

সভায় বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট নিয়ে নানা অপপ্রচারের বিরুদ্ধে তথ্য উপস্থাপন করেন তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানির চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সব টেলিভিশন চ্যানেল এই স্যাটেলাইটের সেবা নিচ্ছে।

যার ফলে রাষ্ট্র বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। আমাদের নিজস্ব স্যাটেলাইট ব্যবহার না করলে এই অর্থ বিদেশি কোন কোম্পানিকে দিতে হতো। তাই বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট কোন মুনাফা অর্জন করছে না- এটি একটি জঘন্য মিথ্যাচার এবং অপপ্রচার।

তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য এবং বাংলাদেশ বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান বলেন, কৃষি, শিল্প, যোগাযোগ, ভৌত কাঠামো খাতসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি ক্ষেত্রে অসীম দক্ষতার পরিচয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যতই ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার হোক না কেন, বাংলাদেশকে আর দাবিয়ে রাখা যাবে না। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ তার নিজস্ব মহিমায় এগিয়ে যাবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য এবং তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য প্রফেসর ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বাংলাদেশ নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে। বাংলাদেশকে ব্যর্থ করার জন্য ষড়যন্ত্রকারীরা নতুন নতুন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এই ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া যাবে না। এটিই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনা। সূত্র : ঢাকাপোস্ট