মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাসে পাসপোর্ট জটিলতা নিয়ে প্রবাসীদের ভিড়

মালদ্বীপে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে বলা হয়, যাদের বৈধ ভিসা ও ওয়ার্ক পারমিট নাই তাদের দ্রুততার সঙ্গে ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ করে মালদ্বীপে বৈধভাবে কাজ করার জন্য।

বৈধকরণ প্রক্রিয়ার সুযোগে যদি কেউ বৈধ ভিসা বা ওয়ার্ক পারমিট সংগ্রহ না করেন, তবে তার বিরুদ্ধে মালদ্বীপের আইন অনুযায়ী কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

নতুন পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা পেতে যেসব কাগজাদি প্রয়োজন গতকাল শনিবার দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতেও বলা হয়েছে, পাসপোর্টের পুরোনো ফটোকপি, জন্ম নিবন্ধনের ফটোকপি, এনআই আইডির ফটোকপি,

একটি পাসপোর্ট সাইজের ছবি, পাসপোর্ট ফি বাবদ ১১০ মার্কিন ডলার এবং বাংলাদেশে পরিবারের যে মোবাইল নম্বরটি চালু আছে সেই নম্বরটা নিয়ে সরাসরি হাইকমিশনার অফিসে গিয়ে জামা দিতে হবে।

এবং কি বলা হয় দ্রুত পাসপোর্ট সংগ্রহ করে বৈধকরণের জন্য যে যেখানে কাজ করছেন আপনাদের মালিককে ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রিতে আবেদন করতে বলেন।

এমন সুখবর শুনে আজ সকাল থেকে হাজারেরও বেশি সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী নতুন পাসপোর্ট বানানোর জন্য বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে ভিড় করেছে।

প্রবাসীদের এমন ভিড়ে দূতাবাসের আশেপাশের রাস্তায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। দূতাবাসের সামনে গিয়ে প্রবাসীদের কাছ থেকে জানা যায় প্রবাসীদের একটাই অনুরোধ নীতি নির্ধারকদের কাছে, নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট পেয়ে দ্রুত বৈধকরণ প্রক্রিয়ায় যেনো সামিল হতে পারেন।

যদি পাসপোর্ট পেতে বিলম্বিত হয়ে কোনো প্রবাসী বৈধকরণ বা যেকোনো ধরনের সংকটে পড়লে দূতাবাস তাদের পাশে থাকেন। আর এবারের সংকটটাই যেন শেষ সংকট হয়।

এর মধ্যে গত (১৯ মে) মালদ্বীপে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনার রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদ মালদ্বীপের ইকনোমিক ডেভেলপমেন্ট মিনিস্ট্রার জনাব ইসমাইল ফাইয়াজের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ এ বাংলাদেশি অনথিভুক্ত কর্মীদের দ্রুত বৈধ করন

ও বাংলাদেশ হতে নতুন কর্মীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণ বিষয়ে আলোচনার ফলস্বরূপই মালদ্বীপের বসবাসরত অনথিভুক্ত প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিকদের নিয়মিতকরণের প্রক্রিয়া বর্তমানে ইকনোমিক ডেভেল পমেন্ট মিনিস্ট্রিরের আওতায় চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন দূতাবাসের বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রবাসী বাংলাদেশীদের এমন লাগামহীন কষ্টের গ্লানি মোচনের জন্য সম্প্রতি মালদ্বীপ সরকার থেকে ঘোষণা এল অবৈধ বাংলাদেশী কর্মীদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের প্রয়োজন নেই।

এমন সংবাদ পাওয়ার পর পরই বৃহস্পতিবার (২৬ মে) থেকে মালদ্বীপে বাংলাদেশ হাইকমিশন পুলিশ ভেরিফিকেশন ছাড়াই নতুন পাসপোর্ট করার জন্য জমা নিচ্ছেন।

মালদ্বীপে ভিসা নবায়ন, ওয়ার্ক পারমিট থেকে শুরু করে সব কাজে এই পাসপোর্ট লাগে ।কোনো প্রবাসী চায় না অবৈধভাবে কর্মরত থাকতে। সবাই চায় বৈধতা। কিন্তু অনেকে পারেনা। বাংলাদেশ থেকে প্রবাসে আসতে খরচটা খুব বেশি হয়ে যাওয়াতে। তাও আবার কোম্পানিতে বেতন কম।

ভিসার মেয়াদ শেষ হলেই দেশে চলে যেতে হয়। নয়তো কম বেতনে কাজ করে যেতে হবে বছরের পর বছর। হতে হবে কোম্পানির গোলাম। তারা যা বলবে তাই করতে হবে। ডিউটি বেশি করিয়েও, ন্যায্য পাওনা পাওয়া হয়না। বেতনও দেরি করে দেন।সবদিক চিন্তা করেই বৈধ প্রবাসী ভাইয়েরা অবৈধ হয়ে যায়।

তবু তারা শান্তিতে থাকতে পারেনা। তাদের অশান্তির শেষ নেই। অবৈধ কর্মরত কর্মীদের কিছু কিছু কোম্পানি বেতনও মেরে দেয়। শুধু কোম্পানি নয়, আছে কিছু বাংলাদেশি মালিকও বা সাব-কন্ট্রাক্টর।

এর মাঝেও পুলিশি হয়রানির শিকার হতে হয় যা বলার মতো না। বছরকে বছরই এই অবৈধ প্রবাসীরা একের অধিক হয়রানির শিকার হতে হয় ক্রমান্বয়ে।

এমন ঘোষণা এলো মালদ্বীপে আগামী ৩ মাসের মধ্যে অবৈধ কর্মীদের বৈধ হতে হবে। ঘোষণায় অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই। এদের মধ্যে কারো পাসপোর্ট নেই, কারো পাসপোর্ট আছে,

ভালো কোম্পানি পাচ্ছে না, কেউ বহু দূরে কর্মরত আছে, দৌড়াদৌড়ি করাও সম্ভব নয়। আবার কারো মালিক আছে, মালিককে চিনেনা, ঠিকমতো অফিসও চিনে না, এমন হাজারো অবৈধ প্রবাসী আছে।