২২ঘণ্টায়ও নিয়ন্ত্রণে আসেনি সীতাকুণ্ডের ডিপোর আগুন

সীতাকুণ্ডের বাতাসে এখন লাশপোড়া গন্ধ। বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুনে ক্রমে বাড়ছে লাশের সারি। গত ২২ঘণ্টায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে। আগুন নিয়ন্ত্রণে নিরলস কাজ করে চলেছে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি দল। সঙ্গে আছে সেনাবাহিনীর প্রায় ২০০ জনের একটি দল।

চমেক পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. আলাউদ্দিন জানান, নিহতদের মধ্যে সাতজন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী। আগুন নেভাতে গিয়ে জীবনই নিভে গেছে তাদের। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের অন্তত ২০ জনসহ দুই শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। তাদের তাদের অধিকাংশই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (চমেক) চিকিৎসা নিচ্ছেন। নিখোঁজ রয়েছেন আরও অনেকে।

এ রিপোর্ট লেখার সময় (বিকেল ৬টা) ডিপোর কিছু জায়গায় আগুন জ্বলছে। ধোঁয়া উঠছে কিছু জায়গায়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এখনো ডিপোতে পানি ছেটাচ্ছেন।

গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে আগুন লাগে সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে। পরে রাত ১১টার দিকে ডিপোতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে সমগ্র এলাকা কেঁপে ওঠে।

অগ্নিকাণ্ডের ২২ ঘণ্টা পরেও ডিপোর মালিক বা কোনো কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে আসেননি। মালিকপক্ষের কেউ না থাকায় কনটেইনার ডিপোতে কী ধরনের কেমিক্যাল রয়েছে, তা জানতে পারছে না ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকারী দল।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাইন উদ্দিন বলেন, পানি দিয়ে সব কেমিক্যালের আগুন নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়। এ কারণে আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লাগছে।

 

এর আগে ঘটনাস্থলে থাকা চট্টগ্রাম সেনানিবাসের ইঞ্জিনিয়ারিং কোর ১-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মনিরা সুলতানা সাংবাদিকদের বলেন, কনটেইনার ডিপোটিতে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড রয়েছে। এ কারণে আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। আমাদের কেমিক্যাল বিশেষজ্ঞরা ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

 

এদিকে, বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণের জন্য ৭ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে।

এ ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের পরিবারকে ৫০ হাজার করে টাকা ও আহত প্রত্যেক ব্যক্তিকে ২০ হাজার করে টাকা দেবে জেলা প্রশাসন। শ্রম মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন তহবিল থেকে সরকার দেবে নিহত প্রত্যেক শ্রমিকের পরিবারকে ২ লাখ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা। আহতদের চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে অতিরিক্ত অর্থ দেওয়া হবে।