ঢালিউডে চতুর্মুখী লড়াই

ঢাকাই সিনেমা করোনার পর এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি ইন্ডাস্ট্রি। এরমধ্যেই এ অঙ্গনের সংশ্লিষ্টরা বিভিন্ন রকম বিতর্কিত কাণ্ড ঘটিয়ে সমালোচনা সৃষ্টি করছেন নিয়মিত। সে রকম একটি ঘটনা ঘটে গেল ১০ জুন।

এদিন রাজধানীর একটি কনভেনশন সেন্টারে অভিনেতা মনোয়ার হোসেন ডিপজলের ছেলের বিয়েপরবর্তী সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছিল। এ অনুষ্ঠানে বিনোদন অঙ্গনের বিশেষ করে সিনেমাসংশ্লিষ্ট অনেকেই আমন্ত্রিত হয়েছেন।

যথারীতি আমন্ত্রিত অতিথি হিসাবে যোগ দেন চিত্রনায়ক ওমর সানী ও জায়েদ খান। কিন্তু কে জানত, দু’জনেই অনেক রাগ ক্ষোভ মনের মধ্যে পুষে রেখে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন! গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, জায়েদকে দেখা মাত্রই নাকি ওমর সানী তেড়ে যান তার দিকে। অভিযোগ তার স্ত্রী চিত্রনায়িকা মৌসুমীকে নাকি বিরক্ত করেন জায়েদ খান। এ কারণে বিয়ের অনুষ্ঠানেই জায়েদকে চড় মারেন ওমর সানী। আর জায়েদও নাকি পিস্তল (লাইসেন্সকৃত) বের করে সানীকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এমন ঘটনা চাউর হলে বিষয়টি জানতে পক্ষ থেকে তিন অভিনেতা জায়েদ, ওমর সানী ও ডিপজলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তারা প্রত্যেকেই আলাদাভাবে জানিয়েছেন ঘটনা আসলেই কী ঘটেছিল।

এ ঘটনা প্রসঙ্গে ওমর সানী বলেন, ‘ঘটনা সত্য। ও বেয়াদবি করেছিল। সবকিছুর একটা সীমা আছে। সে মৌসুমীর সঙ্গে বেয়াদবি করার চেষ্টা করেছে। সেদিন সামনে পেয়ে তাকে আমি চড় মেরেছি। সেও আমাকে পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দিয়েছে। তখন আমিও একটি গালি দিয়েছি। এ সময় অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। জায়েদ এর আগে আমার ছেলের রেস্তোরাঁয় (রাজধানীর গুলশানে মেরি মন্টানা) পুলিশ দিয়ে অভিযান চালিয়েছে। অনেককে ডিস্টার্ব করেছে। এগুলো নিয়ে তার বিচার হওয়া উচিত।’

চিত্রনায়ক জায়েদ খান ঘটনা প্রসঙ্গে বলেন, ‘পিস্তল ঠেকিয়ে হুমকি দেয়ার কথা একেবারেই বানোয়াট। প্রথম কথা হচ্ছে, যেখানে অনুষ্ঠান হচ্ছিল সেখানে হলরুমে সিকিউরিটি ইলেক্ট্রনিক গেটের চেকাপ পেরিয়ে পিস্তল নিয়ে যাওয়া অসম্ভব। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, ওখানে কোনো ধরনের অস্ত্র নিয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ। আর তিনি (ওমর সানী) সেদিন বেশ মাতাল ছিলেন। মদ্যপ অবস্থায় তিনি উপস্থিত হয়ে অযথা চিল্লাচিল্লি করছিলেন। এ কারণে আমি তাকে ঠান্ডা স্বরে কথা বলতে বলেছি। এর বেশি কিছু হয়নি। ডিপজল ভাই এসে সব ঠিকঠাকও করে দিয়েছেন। এরপর তিনি চলে যান।

আর তার ছেলের রেস্তোরাঁয় পুলিশ অভিযান চালিয়েছে, তার ছেলে ও সে মিলে অবৈধ ড্রাগের ব্যবসা করে বলে। সেগুলো পুলিশ উদ্ধারও করেছেন। মিডিয়ায়ও এসেছে সেসব ঘটনা। এসবের সঙ্গে আমাকে জড়িয়ে তিনি আসলে পরিস্থিতি অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করছেন। আসলে শিল্পী সমিতির নির্বাচন নিয়ে মামলার রায় সামনেই। এজন্যই প্রতিপক্ষের ইশারায় তিনি (ওমর সানী) এমন ঘটনা রটাচ্ছেন।’

ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলেন ডিপজল বলেন, ‘সেদিন যা ঘটেছে সেটা অনাকাঙিক্ষত। মিডিয়ায় যেভাবে ফলাও করে প্রচার হয়েছে আসলে তেমন কিছুই ঘটেনি। একটু বাদানুবাদ হয়েছে, সেটা আমি তাৎক্ষণিক মীমাংসা করে দিয়েছি। এর বেশি কিছু নয়। তা ছাড়া আমি বিয়ে নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম। এটা আমার অনুষ্ঠান। এখানে অন্য কেউ ঝামেলা করবে আর সেটা আমি জানব না, বা ঘটলেও মীমাংসা করে দেব না, এটা তো হয় না।’

তবে যাকে নিয়ে এ ঘটনার জন্ম, অর্থাৎ চিত্রনায়িকা মৌসুমী কিন্তু এটা নিয়ে এখনো মুখ খোলেননি।