সাকিব আল হাসান বাংলাদেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয়। বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশের প্রথম সুপার স্টারও। ব্যাটিং-বোলিং পারফরম্যান্স দিয়ে নিজেকে অন্য সব টাইগার ক্রিকেটার থেকে যোজন দূরে এগিয়ে রেখেছেন বাংলাদেশের এই মহাতারকা।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬ বছর পার করে ফেলেছেন। দলের সিনিয়র হিসেবে নিজের পারফরম্যান্স ও ক্ষুরধার ক্রিকেট মস্তিষ্ক দিয়ে সাহায্য করছেন দলকে। প্রয়োজনে সতীর্থ এবং জুনিয়র ক্রিকেটারদের নিয়মিত মোটিভেটও করছেন। তবুও বাংলাদেশের টেস্ট দলের পারফরম্যান্স হতাশাজনক।
উইন্ডিজদের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম দিন শেষেও হতশ্রী পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন বাংলাদেশি ব্যাটাররা। ব্যতিক্রম সাকিব। নিজে করেছেন ফিফটি, দলের স্কোর শতরান পার করিয়েছেন। দলের ব্যাটিংয়ের এমন অসহায়ত্বের পর অধিনায়ক নিজেও কি অসহায় হয়ে যান কি না, এমন প্রশ্ন করা হয় সাকিবকে।
তবে এই ক্রিকেটার জানিয়েছেন, এসব অসহায়ত্ব নিয়ে তিনি চলাফেরা করেন না। সাকিবের ভাষ্যে,
‘এতো অসহায়ত্ব নিয়ে আমি আসলে চলাফেরা করি না। জীবনের অনেক সময় পার করেছি ক্রিকেট নিয়ে, এখন আর এগুলো নিয়ে ভাবার সময় নাই। মাঠে সবাইকে মোটিভেট করার কাজ আমার। সে জায়গা থেকে আমি যথেষ্ট করি।
যদিও এটা একটা টিম গেম, তবে প্রত্যেকে একসঙ্গে হলেই কিন্তু টিম গেমটা হবে। আবার প্রত্যেকে আলাদা আলাদা হলে এটা হবে না। সেদিক থেকে আমার খুব বেশি হতাশ হওয়ার কারণ নেই, আবার আমি জিতে গেলেও খুব বেশি উত্তেজনা দেখাব না।’
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংসের দুই ওভার এক বল পর্যন্ত কোনো রান তুলতে পারেনি স্বাগতিকরা। দলটির সেরা ব্যাটসম্যান অধিনায়ক ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েটও তখনো রানের খাতা খুলতে পারেননি। সে সময় বোলার মুস্তাফিজুর রহমানের চাওয়াতে লেগ গালিতে মুমিনুল হককে আনেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
মুস্তাফিজের পরের ইনসুইঙ্গিগ এক ডেলিভারিতে মুমিনুলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন ব্র্যাথওয়েট। কিন্তু সেটি হাতে জমাতে পারেননি বাংলাদেশের সাবেক এই টেস্ট অধিনায়ক। মুস্তাফিজের বলে পরে ক্যাচ উঠেছিল আরেকটি। সেটি মিস করেন লিটন দাস। দুটি মিস গেলেও উইন্ডিজদের হারানো দুই উইকেট শিকার করেছেন টাইগার পেসাররাই।
ফলে প্রথম দিন শেষে টাইগার পেসারদের বোলিং পারফরম্যান্সে বেশ খুশি অধিনায়ক সাকিব। বিশেষ করে দীর্ঘদিন পর টেস্ট খেলতে নামা মুস্তাফিজতো ছিলো অসাধারণ। ১২ ওভার করে ৬ মেডেনে মাত্র ১০ রান দিয়েছেন তিনি। খালেদও ৯ ওভারে দিয়েছেন ১৫ আর এবাদতের ১২ ওভার থেকে ১৮ রান নিতে পেরেছে ক্যারিবিয়ানরা।
পেসারদের বোলিং নিয়ে তাই সাকিবের কণ্ঠে স্তুতি ঝরে পড়েছে। পেস অ্যাটাক নিয়ে টাইগার অধিনায়ক বলেন, ‘আজকের (প্রথম) দিনে আমি খুবই খুশি, কিছু হাফ চান্স ছিল। ওগুলা যদি নিতে পারতাম, তাহলে পেসারদের জন্য ভালো একটা দিন হতো। যেটা আমরা বেশ কিছুদিন ধরে পাইনি। ওভারঅল পেস ইউনিটটা খুবই ভালো বল করেছে।
পার্টনারশিপে ভালো বল করেছে। মুস্তাফিজ ওয়াজ ফ্যান্টাস্টিক। আমার মনে হয় খালেদও অনেক ভালো বল করেছে নতুন বলে। এবাদত সবসময় আমাদের ভালো বল করছে টেস্টে। সো তিনটা বোলারই আমার মনে হয় ভালো বল করেছে।
আমি বলবো ওরা একটু আনলাকি ছিলো যে, আরও দুটি উইকেট ওরা হয়ত পেতে পারতো। যেটা হয়ে গেলে আমরা মোটামুটি ভালো অবস্থানে থাকতাম।
যদি ধরেন যে, ১০০ রানে ৪ উইকেট থাকতো তাহলে যেটা হতো যে, কাল যদি আমরা ওদের আর ১০০ রানে অলআউট করে দিতে পারতাম। আমরা ম্যাচে থাকার মতো অবস্থানে থাকতাম। এখনো হবে না তা বলছি না, হতে পারে। কিন্তু ওদের যেহেতু বেশ কয়েকজন ব্যাটসম্যান রয়েছে।
কালকেও এসে আমাদের একই কাজ আবার করতে হবে। এটাই আসলে আমাদের বোলারদের চ্যালেঞ্জ হবে। কালকে যেহেতু উইকেট আরেকটু বেটার হবে সেখানে আমরা আরও কত ডিসিপ্লিনড ওয়েতে বল করতে পারি।