বিএডিসি যশোরের যুগ্ম পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড়

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রের যুগ্ম পরিচালক আম্বিয়াতুন নেসার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তিনি উদ্যান কেন্দ্রটি দুর্নীতি স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছেন। তিনি এখানে যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এসব অনিয়ম-দুর্নীতির ািরুদ্ধে কেউ কথা বলতে সাহস পায় না। কেউ কথা বললেই তাকে উল্টো নানাভাবে হয়রাণি করা হয়। তার স্বামী যশোর বিএডিসির কৃষি ভবনের যুগ্ম পরিচালক এ কে এম কামরুজ্জামান। স্বামী-স্ত্রী দুই জনই একই বিভাগে চাকরি করার কারণে সব কিছু ধরাকে সরা জ্ঞান করে চলেছেন। তবে যুগ্ম পরিচালক আম্বিয়াতুন নেসা তার বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

অভিযোগে জানা গেছে, যুগ্ম পরিচালক ২০২০ সালের আগস্ট মাসে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে অনিয়ম-দুর্নীতি শুরু করেন। বিএডিসির উদ্যোন বিভাগ প্রতি বছর ছয় একরও বেশি জমিতে ধান চাষ হয়। ধান চাষের জন্য যে পরিমান লেবার (জন) প্রয়োজন হয় তার থেকে অধিক লেবার দিয়ে চাষাবাদ করেন। এসব জমির ধান চাষে পর্যাপ্ত ওষুধ, সার, কীটনাশক না দিয়েই ভূয়া বিল ভাউচার করে টাকা উত্তোলন করে তা আত্মসাৎ করে আসছেন। আবার উৎপাদিত ধান কম দেখিয়েও আত্মসাৎ করেন। আর বাকী ধান বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দেন। আবার উৎপাদিত ধান কম দামে বিক্রি দেখান বলে অভিযোগ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম পরিচালক আম্বিয়াতুন নেসা বলেন, ধান যে পরিমান উৎপাদন হয় সেটাই জমা দেয়া হয়।
উদ্যানে চুক্তিভিত্তিক কাজ করা কয়েকজন শ্রমিক জানান, প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০ জন লেবার দেখিয়ে টাকা উত্তোলন করেন। অথচ এখানে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ২০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এসব শ্রমিকরা মাসে ১৫ থেকে ২০ দিন কাজ করে থাকে। অথচ এসব শ্রমিকদের পুরো মাসের হাজিরা দেখিয়েও টাকা উত্তোলন করেন।
শ্রমিকের মজুরীর টাকা আত্মসাৎ প্রসঙ্গে যুগ্ম পরিচালক আম্বিয়াতুন নেসা জানান, আমার যে পরিমান শ্রমিক প্রয়োজন তা দেওয়া হয় না। আগে যেখানে ৩৫ থেকে ৪০ জন শ্রমিক পাওয়া যেত এখন সেখানে ১৫ থেকে ২০ জন শ্রমিক পায়। শ্রমিকদের টাকা আমি কিভাবে নেব। এটা হিসাব সেকসনের বিষয়। তার দেখভাল করে।
উদ্যোনের সবজি ও ফলজ গাছের উৎপাদিত ফল তিনি নিজে খেয়ে বাকীটা বিক্রি করেন। যা বিক্রি করেন তার থেকে অর্ধেক দাম দেখিয়ে সরকারি খাতে জমা দেন।
এ প্রসঙ্গে যুগ্ম পরিচালক আম্বিয়াতুন নেসা বলেন, আমি আধা কেজি কোন জিনিস নিলে তারও ভাওচার করা হয়। ভাওচার ছাড়া আমি কোন জিনিস নিই না।
শুধু তাই নয়, উদ্যানের উন্নয়ন মূলক কাজেও রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতি। এখানে যেসব উন্নয়ন মূলক কাজ হয়, সেই কাজ শেষ হওয়ার আগেই বিল পরিশোধ করে দেন। এমনকি কাজের গুনাগত মানও ঠিকঠাক মত বুঝে নেওয়া হয় না। সম্প্রতি উদ্যানের পুকুর খননের কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
উন্নয়ন মূলক কাজে অনিয়ম প্রসঙ্গে যুগ্ম পরিচালক আম্বিয়াতুন নেসা বলেন, আমি উন্নয়ন মূলক কোন কাজের সাথে জড়িত না। উন্নয়ন মূলক কাজের দেখভাল করেন ইঞ্জিনিয়ররা। তিনি বলেন, পুকুরের কাজটি দেখছেন বিএডিসির ইঞ্জিনিয়র মেহেদী হাসান। তিনি আমাকে বিল পরিশোধ করতে বলেছেন। আমি বিল পরিশোধ করেছি।
এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়র মেহেদী হাসান বলেন, কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন বিল পরিশোধ করা হয় না।