নড়াইলে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ভিন্নখাতে নেয়ার চেষ্টা !

নড়াইল সরকারি ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রীনিবাসের পাশে বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ফকির, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল আলমগীর হোসেন আলম ও আমজাদ হোসেন মৃধাসহ কয়েকজনের বসবাস। এর মধ্যে আমজাদ হোসেন মৃধার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি প্রতিবেশি রফিকুল ইসলাম ফকিরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা ধরণের ষড়যন্ত্র করে আসছেন। এরই ধারাবাহিকতায় এবার ‘আগুন’ নিয়ে ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

গত ১৬ জুলাই দুপুরে আমজাদ মৃধার তিনতলা বাড়ির ছাদে আগুনের ঘটনাকে ভিন্নখাতে নেয়ার পায়তারা হিসেবে রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন।

এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রতিবেশিরা জানান, ওইদিন (১৬ জুলাই) আগুন লাগার পর তাদের ট্যাকিং থেকে পানি দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের সদ্যসরা রফিকুল ইসলামের বাড়ির ছাদ থেকে পাইপ দিয়ে আমজাদ মৃধার ছাদের আগুন নিভিয়েছেন। তবুও হয়রানি করার জন্য আমজাদ মৃধা রফিকুল ইসলামের নামে থানায় অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনার নিন্দা জানান সবাই।

প্রতিবেশিরা কেন নাম প্রকাশ করে কথা বলছেন না, এ প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন; আমজাদ মৃধাসহ তার পরিবারের সদস্যরা খুবই বেপরোয়া। কোনো কারণ ছাড়াই প্রতিবেশিদের ওপর যখন-তখন তেড়ে আসেন। গালমন্দ করেন। মাঝে-মধ্যে ধারালো অস্ত্র দিয়েও ভয়ভীতি দেখান। তাই নাম প্রকাশ করে বক্তব্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন প্রতিবেশিরা। কারণ, নাম প্রকাশ করলে তাদের লক্ষ্য করে যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারেন আমজাদ মৃধাসহ তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের এ ধরণের বেপরোয়া কর্মকান্ডের কথা থানা পুলিশও অবগত আছে। তবে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

এদিকে বাঁশগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়িটি দুইতলা বিশিষ্ট। প্রতিবেশি আমজাদ মৃধার বাড়ি তিনতলা। তার (আমজাদ) বাড়ির ছাদে অগ্নিকান্ডের সময় আমি বাসায় ছিলাম। আমার বাড়ি গা ঘেষে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রীনিবাস। ওই ছাত্রীনিবাস থেকে একজন ছাত্রী এসে আমাদের জানান, আপনাদের এখানে যে কোনো ছাদে আগুন জ্বলছে। আমার বাড়ির ছাদে গিয়ে দেখি, প্রতিবেশি আমজাদ মৃধার ছাদে আগুন জ্বলছে। এক পর্যায়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আমার বাড়ির ছাদে উঠে সেই আগুন নিভিয়ে ফেলেন। এই আগুন লাগার কয়েকদিন পর ষড়যন্ত্র শুরু করেন আমজাদ মৃধা। এখন আমজাদ মৃধা আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন। এ আগুন লাগাকে কেন্দ্র করে ফেসবুকেও আমার বিরুদ্ধে নানা ধরনের বাজে কথাবার্তা লেখা হয়েছে। আমাদের মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করা হচ্ছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চাই।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আমজাদ মৃধাসহ পরিবারের সদস্যরা। তার (আমজাদ) বাড়িতে আগুন লাগার জন্য প্রতিবেশিদের দায়ী করে ফেসবুকে বিভিন্ন ধরণের কথা লিখেছেন। থানায় অভিযোগও দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে নড়াইল ফায়ার সার্ভিস স্টেশন অফিসার মাসুদ রানা জানান, আমজাদ হোসেন মৃধার বাড়ির ছাদে রান্নার ব্যবস্থা রয়েছে। রান্নার চুলা থেকেই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হয়েছে। আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণ করেছি।

নড়াইল সদর থানার ওসি (চলতি দায়িত্ব) মাহমুদুর রহমান বলেন, আমজাদ মৃধার বাড়িতে অগ্নিকান্ডের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।