আদালতের পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের দাবি ৪৯ অধিকারকর্মীর

high-court

পোশাকের কারণে নরসিংদী রেলওয়েতে নারীর উপর যৌন হয়রানির ঘটনায় আদালতের পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন ৪৯ জন নারীবাদী অধিকারকর্মী।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃবিতে তারা এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৮ মে নরসিংদী রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষারত এক নারীকে পোশাকের কারণে যৌন হেনস্থা করার ঘটনায় অভিযুক্ত নারীকে জামিন শুনানির সময় আদালত হেনস্থার শিকার তরুণীর পোশাককে দৃষ্টিকটু বলে নারীবিদ্বেষী মন্তব্য করেছেন।

তারা বলেন, জামিনের পক্ষের আইনজীবী মো. কামাল হোসেন জানান, ‘আদালত তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন, গুলশান-বনানীর মতো এলাকায়ও কোনো মেয়ে এ ধরনের পোশাক পরে রাস্তায় বের হয় না। সেখানে গ্রামের মতো একটি জায়গায় পাবলিক প্লেসে এ রকম পোশাক পরা স্বাধীনতা হতে পারে না। যেমন খুশি তেমন পোশাকের নামে আমাদের কালচারকে ধ্বংস করতে পারে না। ওই মেয়ে যে ধরনের পোশাক পরিহিত ছিল সেটা আমাদের দেশের সামাজিক অবস্থার সঙ্গে বেমানান। এ কারণে প্রতিবাদের শিকার হয়েছিল।’ গণমাধ্যমে প্রকাশিত আদালতের এই পর্যবেক্ষণকে অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক উল্লেখ করে এই পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এসব অধিকারকর্মীরা।

তারা মনে করেন, রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থায় এমন কোনও অসংবেদনশীল ব্যক্তির পদে থাকার দরকার নেই, যিনি এই ধরণের বিদ্বেষপূর্ণ মতামত দিয়ে বাংলাদেশের নারীদের চলাচল এবং জীবনযাপনের স্বাধীনতার প্রশ্নকে হুমকিতে ফেলে।

বিবৃতিদাতারা হলেন, জেন্ডার বিশ্নেষক ফারহানা হাফিজ, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নোভা আহমেদ, গবেষক মাহফুজা মালা, মানবাধিকারকর্মী নাই সু প্রু, মুশফিকা লাইজু, সাংগাত বাংলাদেশ এর কো অর্ডিনেটর ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সোহানা আহমেদ, উন্নয়নকর্মী ওয়ারদা আশরাফ, সৈয়দা রতনা, নিপা দাশ, আফওয়াজা রহমান দৃষ্টি, নিধি চাকমা, মাহফুজা হক নীলা, সুমনা শিল্পী, মৌসুমি আখতার, লিলিথ অন্তরা, নাদিরা পারভীন, বাসন্তি সাহা, জলি নূর হক, তরী চাকমা, জাকিয়া শিশির, শাহনাজ পারভীন, নিগার সুলতানা, জয়া প্রসাদ, রুবিনা জাহান, তাহমিনা হক, সাদিয়া মাশারুফ, সাবিনা পারভীন, আইনজীবী ফারহানা পারভীন মুমু, শিক্ষানবিশ আইনজীবী লিসা, লেখক ও সাংবাদিক ইশরাত জাহান ঊর্মি, নিস্কৃতি রঞ্জন মন্ডল, মৌরী সিদ্দিকা, বিশ্বব্যাংক এর গ্লোবাল ফাইন্যান্সিং ফ্যাসিলিটি লিয়াঁজো কর্মকর্তা নন্দিনী লোপা, সংস্কৃতিকর্মী জয়ন্তী চাকমা, জয়শ্রী সরকার, তাহিয়াতুল জান্নাত রেমি, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির প্রভাষক জেমিমা জাহান মিম, শিক্ষার্থী পদ্মিনী চাকমা, প্রাপ্তি তাপসী, ইসাবা শুহরাত, নাজিফা তাসনিম খানম তিশা, প্রাপ্তি প্রতীতি সাহা, চিত্রশিল্পী মাইশা খন্দকার, আয়শা সিদ্দিকা, ওয়াসিমা ফারজানা, ঋতু সাত্তার, কান্তা রায়, সাবিকুন্নাহার কাঁকন ও জাকিয়া রাফা।