মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টার শেল ঘুমধুমের জনবসতিতে, সীমান্তে আতঙ্ক

 

মিয়ানমার থেকে ছোড়া দুটি মর্টারশেল বাংলাদেশ-মিয়ানমার জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন ঘুমধুম এলাকার জনবসতিতে পড়েছে। তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। হতাহতের ঘটনাও ঘটেনি। বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষা বাহিনীর (বিজিবি) সদস্যরা মর্টারশেল দুটি ঘিরে রেখেছেন। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও আতঙ্কে রয়েছেন সীমান্ত এলাকার মানুষজন।

রোববার বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্তের তুমব্রু বাজার এলাকায় মর্টারশেল দুটি পড়ে।

স্থানীয় এক বাসিন্দা মোহাম্মদ আনিস বলেন, ‘বিকেলে বিকট শব্দে মর্টারশেলটি উত্তর পাড়ার আয়াজের বাড়ির কাছে এসে পড়ে। পরে আরও একটি গোলা কাছাকাছি রাস্তায় এসে পড়ে। আমরা আতঙ্কে আছি, কখন কি হয়।’

ঘুমধুম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে ওপারে গোলাগুলি হচ্ছে। বিভিন্ন সূত্রে জানতে পেরেছি রাখাইনে মায়ানমার সেনাবাহিনী ও আরাকান আর্মির মধ্যে সংঘর্ষ চলছে। এতদিন পাহাড়ে গোলা ছুড়লেও আজকে উত্তর পাড়ায় মর্টারশেল গুলো পড়েছে। এতে স্থানীয় বাসিন্দারা আতঙ্কে রয়েছে।’

 

ঘটনাস্থলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এ বিষয়ে বিজিবি জানায়, সীমান্তে কঠোর নজরদারি করা হচ্ছে। যেকোন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে সীমান্তে কর্মরত বিজিবির জোয়ানেরা।

 

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বেগম সালমা ফেরদৌস জানান, ‘মিয়ানমার থেকে দুটি মর্টার শেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। এর আগেও এই ধরনের মর্টারশেল নিক্ষেপ করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের মর্টার শেল দুটি ঘুমধুমের জনবসতি এলাকায় পড়েছে। তবে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। মর্টারশেলগুলো উদ্ধারে সীমান্তরক্ষী বিজিবি কাজ করছেন।’

 

সীমান্তে নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মর্টারশেল দুটো নিস্ক্রিয় করার চেষ্টা চলছে। বিজিবির উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে রয়েছেন। নাইক্ষ্যংছড়ির ওই সীমান্তে নিরাপত্তার দায়িত্ব কক্সবাজার ৩৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের। নানাভাবে চেষ্টা করেও এ বিষয়ে বিজিবির অধিনায়কের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

এদিকে রাখাইনে উত্তেজনার কারণে ঘুমধুমের দক্ষিণ কোনাপাড়া সীমান্তের শূন্যরেখায় বাস করা ৬২১ টি পরিবারের ৪ হাজার ২০০ রোহিঙ্গারাও আতঙ্কে রয়েছেন।

 

শূন্য রেখার আশ্রয় শিবিরে বাস করা আব্দুল হাকিম নামের এক রোহিঙ্গা বলেন,’হঠাৎ করেই রাখাইনে তুমুল সংঘর্ষ হচ্ছে। আমরা আতঙ্কে রয়েছি। কখন আমাদের কি হয়, কে জানে। মিয়ানমারে বিজিপি চৌকি বসিয়ে আমাদের নজরদারি করছে। আদৌ নিজ দেশে ফেরত যাবো কিনা জানিনা।