বিএনপি এবং জামায়াতের সম্পর্ক প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপিকে ছেড়ে জামায়াত চলে গেছে না জামায়াতকে ছেড়ে বিএনপি চলে গেছে, তা বোধগম্য নয়। আসলে রসুনের গোড়া এক জায়গায়।
তিনি বলেন, ওদের চরিত্র এক, ওদের লক্ষ্য এক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসকে তারা মুছে ফেলতে চায়। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করাই তাদের উদ্দেশ্য।
রোববার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটে ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে হুঁশিয়ারি দিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, আওয়ামী লীগে ভোট দেওয়ার অপরাধে ২০০১ সালে ক্ষমতায় এসে বিএনপি নেতারা ভাইয়ের সামনে বোনকে ধর্ষণ করেছে, পিতার সামনে কন্যাকে ধর্ষণ করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ এসব কিছুই করেনি। আমরা তো ইচ্ছে করলে গত সাড়ে ১৩ বছরে আপনাদেরকে পিষে দিতে পারতাম। কিন্তু নেত্রী শেখ হাসিনার গণতন্ত্র বিশ্বাস করে বলেই আমাদেরকে সেটা করতে দেননি। করতে দেয়নি বলেই যারা আমাদেরকে রাজনৈতিক অফিসে ঢুকতে দেয় নাই, তারা আজকে গণতন্ত্রের কথা বলে। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কথা বলতেই থাকে। তার পরেও বলে আমাদেরকে (বিএনপি) কথা বলতে দিচ্ছে না। এতটা নির্লজ্জ-বেহায়া। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
আগামী জাতীয় নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী আগামী নির্বাচনে আসুন দেখুন কার জনপ্রিয়তা কত বেশি রয়েছে। জনগণ আগুন সন্ত্রাসের পক্ষে রায় দিবে নাকি শেখ হাসিনার উন্নয়নের পক্ষে রায় দেবে। সেটি প্রমাণ হবে আগামী নির্বাচনে।
তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামে এই নেতা বলেন, এই প্রজন্ম ১৫ আগস্ট দেখেনি, এই প্রজন্ম ২১ আগস্ট দেখেনি, ১৭ আগস্ট সারাদেশে এক যুগে সিরিজ বোমা হামলা দেখেনি। এ প্রজন্ম জিয়াউর রহমানের অত্যাচার দেখেনি। এই প্রজন্ম হাওয়া ভবনের কর্তা দণ্ডিত পলাতক তারেক রহমানের রক্তের হোলি খেলা দেখেনি। এই তরুণ প্রজন্মকে বুঝতে হবে সমাজের শত্রু কারা, দেশের সার্থবিরোধী কারা। এসব বিষয় জানতে হবে।
তরুণ প্রজন্মের ওপর বিরাট দায়িত্ব রয়েছে জানিয়ে নানক বলেন, দিন-রাত পরিশ্রম করে দেশের মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করা এবং তাকে নিরাপদ রাখা আমাদের পবিত্র দায়িত্ব এবং কর্তব্য।
আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপির বড় উইকেট পড়ে গেছে, জামায়াতে ইসলাম বলেছে বিএনপির সাথে তারা আর নেই। বিএনপি নৈরাজ্য করে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, নৈরাজ্য করলে ছাত্রলীগ বসে থাকবে না।
তিনি বলেন, গুমের নামে অনেকে নাটক করে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল বাচেলেত ঢাকায় এলে মির্জা ফখরুল ভাবলেন তাদের ক্ষমতায় বসাবে। তারা যখন বলছে, বাংলাদেশে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংকট নেই তখন বিএনপির মুখ এখন চুপসে গেছে।
সভায় দলের যুগ্মসাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, দেশের অশুভ শক্তির বিষবৃক্ষ কারা- তাদেরকে চিহ্নিত করে প্রতিহত করতে হবে। কোনো ব্যর্থ রাজাকাররা অথবা কোনো খুনিরা যাতে দেশে আর একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে না পারে সেজন্যই তরুণ প্রজন্মকে সতর্ক থাকতে হবে। আগামী লড়াই হবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই। এ লড়াই আমাদের জিততে হবে এর কোন বিকল্প নেই।
ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয়ের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তরের আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ।