পুলিশ-আ.লীগ যৌথভাবে মুন্সিগঞ্জে তাণ্ডব চালাচ্ছে: রিজভী

মুন্সিগঞ্জ সদর থানার মুক্তারপুরে বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পরিকল্পিত গুলি ও গুরুতর আহত করাসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে রক্তাক্ত জখম করার পর পুলিশ এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীরা যৌথভাবে গত রাত থেকেই বিএনপির নেতাকর্মীদের বাসা ও তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, আওয়ামী সশস্ত্র ক্যাডার মো. মাসুদ, মুসা ও তোফাজ্জলের নেতত্বে ১৫/২০ জনের সঙ্গে তিন পুলিশ সদস্যসহ একটি দল গত রাতে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আ. হাইয়ের ভাগিনা মো. নিজাম উদ্দিনের শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও তার বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। এতে তার সুতার ফাক্টরিটি সম্পূর্ণ ভস্মিভূত হয়। এ ঘটনায় আনুমানিক ২ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়। এ সময় সন্ত্রাসী কায়দায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে, যাতে কেউ আগুন নেভাতে না আসে।

তিনি বলেন, বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতভর আওয়ামী লীগের লোকজন আ. হাইয়ের পঞ্চসার ইউনিয়নের বিএনপির নেতাকর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন ও হুমকি দিয়ে এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। অধিকাংশ নেতাকর্মী ও সমর্থকরা এখন বাড়ি ছাড়া। ইতোমধ্যে নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য উল্টো হামলার শিকার বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

বিএনপির এ নেতা বলেন, মামলায় আসামি করা হয়েছে- মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও কেন্দ্রীয় বিএনপির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন আহমেদ, শহর বিএনপির আহ্বায়ক এরাদত হোসেন মানু, সদর থানা বিএনপির সদস্য সচিব মুনির হোসেন ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আতাউর হোসেন বাবুলসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে। আমি বিএনপির পক্ষ থেকে এ মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।

এদিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত যুবদল নেতা মো. শাওন, মো. জাহাঙ্গীর ও ছাত্রদল নেতা তারেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তারা জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। আমি দলের পক্ষ থেকে তাদের আশু সুস্থতা কামনা করছি।

তিনি আরও বলেন, আমরা শুনতে পাচ্ছি আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা মুন্সীগঞ্জ সদর ও শহরে মিছিল বের করবে এবং লোক মুখে শোনা যাচ্ছে সেই মিছিল থেকে জেলা ও সদর বিএনপির কার্যালয়সহ বিএনপির নেতাকর্মী-সমর্থকদের শিল্পপ্রতিষ্ঠানসহ বাড়িতে বাড়িতে হামলার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। ব্যক্তি কেন্দ্রিক একনায়কতান্ত্রিক শাসনের দুঃসহ পরিণতি এখন গ্রাম থেকে শহরে সর্বত্রই দৃশ্যমান। রক্তপাত ছাড়া শেখ হাসিনার আর কোনো অবলম্বন নেই। শেখ হাসিনার শাসনে গণতন্ত্রের অধঃপতন, ব্যক্তি স্বাধীনতা হরণ, নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ হরণ নিশ্চিত হয়েছে। এখন নাৎসীবাদের জয়জয়কার বাংলাদেশে।

বিএনপিসহ বিরোধী দলকে চাপের মুখে ফেলতে সরকারের প্রকাশ্য ও গোপন অমানবিক কৌশলের বিরুদ্ধে সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে। স্বৈরশাসকদের পথে পথে প্রতিরোধ করতে হবে। গড়ে তুলতে হবে জনগণের এক প্রবল স্রোত। সেই স্রোতে ভাসিয়ে দিতে হবে এ অবৈধ সরকারকে।