যশোরে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে গৃহবধূকে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী শশুরের বিরুদ্ধে মামলা

দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে গৃহবধূ মোছাঃ লাবিবা আক্তার লিপি (২৮) কে শারীরিক ও মানষিক নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী ও শুশুরের বিরুদ্ধে রোববার ২ অক্টোবর সকালে কোতয়ালি মডেল থানায় গৃহবধূ বাদি হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামী করা হয়েছে, গৃহবধূর স্বামী নড়াইল জেলার সদর থানার ভদ্রবিলা গ্রামের আরজান মৃধার ছেলে সুমন মৃধা ও শুশুর মৃত মকছেদ মৃধার ছেলে আরজান মৃধা।
মামলায় গৃহবধূ উল্লেখ করেন, সুমন মৃধার সাথে ১০ বছর পূর্বে ইসলামী শরিয়ত মোতাবেক গৃহবধূর বিয়ে হয়। বিয়ের পর ঘর সংসার করাকালে দুই মেয়ে মারিয়া (৫) ও রোজা (১মাস ১০দিন) জন্ম গ্রহন করেন। সুমন মৃধা তার পিতা আরজান মৃধার সহায়তায় ও কু-পরামর্শে গৃহবধূর কাছে ২লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে শারীরিক ও মানষিকভাবে নির্যাতন করে আসছে। গৃহবধূ বিষয়টি তার পিতা মাতা জানালে তারা মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে বিভিন্ন সময় সুমন মৃধাকে ১লাখ টাকাসহ সাংসারিক বিভিন্ন আসবাবপত্র,টিভি,ফ্রিজ ও মালামাল মূল্য ১লাখ টাকা প্রদান করে। এরপরও স্বামী সুমন মৃধা ও তার পিতা আরজান মৃধা গৃবধূর কাছে ১লাখ টাকা যৌতুক দাবী করে গৃহবধূকে অমানুষিকভাবে নির্যাতন করতে থাকে। সুমন মৃধা বাদিকে হুমকী দেয় যে তাদের দাবী যৌতুকের টাকা না দিলে সে অন্যত্র আবার বিয়ে করবে।

 

সুমন মৃধার অত্যাচার নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে এক পর্যায় গৃহবধূ সন্তানদের নিয়ে তার পিতার বাড়িতে চলে আসে। গৃহবধূর পিতা জামাতা সুমন মৃধার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে গৃহবধুর পিতার বাড়িতে এসে বিষয়টি মিমাংসার জন্য অনুরোধ করলে গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল ১০ টায় সুমন মৃধা গৃহবধূর পিতার বাড়িতে আসে এবং দুপুরে খাওয়া দাওয়া শেষ করে বিকেল ৩ টায় আরবপুর গ্রামের গৃহবধূর পিতার বাড়িতে শয়ন কক্ষের মধ্যে কথা বার্তা বলার সময় সুমন মৃধা গৃহবধূর কাছে তৎক্ষনিকভাবে ১লাখ টাকা যৌতুক হিসেবে দিতে বলে। গৃহবধূ দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সুমন মৃধার তার পিতার কু-পরামর্শে গৃহবধূকে এলোপাতাড়ীভাবে কিল ঘুষি,চর থাপ্পড় ও লাথি মেরে গৃহবধূর হাতে পায়ে,বুকে,পিঠে ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে নীলা ফোলা জখম করে। গৃহবধূল ডাক চিৎকারে তার মাতা মোছাঃ শাহনাজ বেগম ভাই জনি ইসলাম আশপাশের লোকজন জসিমসহ আরো অনেকে আসলে সুমন মৃধা গৃহবধূর পিতার বাড়ি হতে কৌশলে পালিয়ে যায়। গৃহবধূর বাড়ির লোকজনের সহায়তায় যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা গ্রহন করে। পরে স্থানীয় ও পারিবারিকভাবে আলোচনা করে থানায় এজাহার দায়ের করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ স্বামী সুমন মৃধা ও তার পিতা আরজান মৃধাকে গ্রেফতারে অভিযান শুরু করেছেন।