স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আমরা যুদ্ধ চাই না, সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতে চাই। মিয়ানমারে অভ্যন্তরীণ যুদ্ধ চলছে, আমরা মনে করি মিয়ানমার বাহিনী আমাদের সীমানায় আসবে না।’
মঙ্গলবার গাজীপুরের কালিয়াকৈরে সফিপুর আনসার ও ভিডিপি একাডেমিতে বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সাধারণ আনসার মৌলিক প্রশিক্ষণ (পুরুষ) ১ম ধাপের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমারে আরাকান আর্মিসহ বেশ কয়েকটি গ্রুপ দেশটির সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে। তাদের কোনো গ্রুপ যাতে বাংলাদেশের সীমান্তে আসতে না পারে সেজন্য বিজিবির সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।’শুধু আর্মি নয়, কোনো লোকই আমাদের দেশের ভেতরে ঢুকতে পারবে না- সে রকমই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে নিজ নিজ ধর্মগ্রন্থের দিকে হাত তুলে বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতি অটল থেকে দেশ ও দেশের মানুষের সেবায় নিজের জীবন উৎসর্গ করার শপথ গ্রহণ করেন প্রশিক্ষণার্থীরা। মোট ৯৯৫ জন প্রশিক্ষণার্থীর মধ্যে ড্রিল-এ শ্রেষ্ঠত্বের পুরস্কার অর্জন করেন রফিকুল ইসলাম হৃদয়, ফায়ারিংয়ে সেরা নূরুল ইসলাম এবং সবমিলিয়ে চৌকস প্রশিক্ষণার্থীর পুরস্কার লাভ করেন আকরাম হোসেন।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান, বাহিনীর অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খোন্দকার ফরিদ হাসান, আনসার ও ভিডিপি একাডেমির কমান্ড্যান্ট সামছুল আলমসহ বাহিনীর অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও কর্মচারী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী দেশের সর্ববৃহৎ, সুশৃঙ্খল ও জনসম্পৃক্ত বাহিনী। স্বাধীনতার সূচনালগ্ন থেকে অদ্যাবধি প্রতিটি ক্ষেত্রে বাহিনীর সদস্যরা সব সময়ই কর্মদক্ষতা এবং সাফল্যের পরিচয় দিয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে বিস্তৃত এ বাহিনী দেশের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রশংসনীয় অবদান রেখে চলেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সিলেট ও সুনামগঞ্জে যে বন্যা হয়েছিল, সেখানেও আনসার-ভিডিপি সদস্যরা উদ্ধার ও ত্রাণ কাজে প্রশংসনীয় অবদান রেখেছেন।
তিনি বলেন, বর্তমানে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মোট ৩২ হাজার ৩৫৮টি পূজামণ্ডপে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৪ জন আনসার ও ভিডিপি সদস্য নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করছেন। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে আনসার-ভিডিপি সদস্যদের অবদান অনস্বীকার্য।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীতে বর্তমানে ১টি গার্ড ব্যাটালিয়ন ও ২টি মহিলা আনসার এবং মোট ৪২টি আনসার ব্যাটালিয়ন রয়েছে। পার্বত্যাঞ্চলের পাশাপাশি জেলা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের অধীনে মোবাইল কোর্ট ও ভেজালবিরোধী অভিযানে কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পদবির ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্যরা নিয়মিত দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাজে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে ব্যাটালিয়নগুলোর জনবল বৃদ্ধি করেছেন। মর্যাদা বৃদ্ধি ও মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রশাসনিক এবং বিভিন্ন সংস্কার করা হচ্ছে।