যথাযথ প্রস্তুতি না থাকায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়

বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ত্রুটি মোকাবিলার জন্য যে ধরনের প্রস্তুতি থাকা দরকার সেটি না থাকার কারণেই মঙ্গলবারের বিদ্যুৎ বিপর্যয় ঘটেছে বলে মত দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

তদন্ত কমিটির সদস্য অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী জানান, ২০১৪ সালের বিপর্য়ের পর কিছু সুপারিশ কার্যকর হবার কারণে এবার বিপর্যয়টা সারাদেশে ঘটেনি। পূর্বাঞ্চলেই সীমাবদ্ধ ছিলো।

দেশের জাতীয় গ্রিডে বিপর্যয়ের কারণে মঙ্গলবার বেলা দুইটা পাঁচ মিনিটে ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের সব এলাকার বিদ্যুৎ একসাথে চলে যায়।

পূর্বাঞ্চল গ্রিডে বিদ্যুৎ না থাকায় দেশের প্রায় ৬৫ শতাংশ মানুষকে প্রায় আট ঘণ্টা বিদ্যুৎহীন থাকতে হয়। কোন কোন এলাকা এরচেয়েও বেশি সময় অন্ধকারে ছিলো।

সংস্কার কাজ শেষে রাত ৯ টার দিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো একে একে পুরো লোডে ফিরে আসতে সময় লাগে আরো প্রায় তিন ঘণ্টা। তবে কি কারণে এই বিপর্যয় সেটা জানা যায়নি।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) তাৎক্ষণিকভাবে জানায়, যমুনা সেতুর পূর্ব পাশের ন্যাশনাল গ্রিডে দুপুর ২টা পাঁচ মিনিটে বিপর্যয় হয়েছে। এর ফলে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বড় একটি এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ নেই।

পিজিসিবি প্রাথমিকভাবে ধারণা করেছে, ঘোড়াশালে গ্রিড বা বিদ্যুৎ সরবরাহের কোন একটি লাইন ট্রিপ করেছে। সেই লাইনটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অন্য লাইন ওভারলোড হয়ে সেটা ট্রিপ করেছে। এর ফলে পূর্বাঞ্চলের গ্রিডে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বল্পতা দেখা দেয়।

তবে বিদ্যুৎ বিভ্রাটের আসল কারণ জানতে মূল সংকট কেটে যাবার পর, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় দুটি তদন্ত কমিটি করেছে। আরেকটি কমিটি গঠন করেছে পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি-পিজিসিবি।

কমিটির সদস্য বুয়েটের ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আব্দুল হাসিব চৌধুরী জানান, ২০১৪ সালের ঘটনার পর বিশেষজ্ঞ কমিটির কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকরের কারণে এবার সারাদেশ সঙ্কটে পড়েনি।

তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি না থাকার কারনেই দেশের এতোবড় এলাকা বিদ্যুত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, বলছেন লোড ডেসপাস সেন্টার-এনএলডিসি থেকে নির্ধারিত কোডের ফ্রিকোয়েন্সির সাথে বিদ্যুতের উৎপাদন ও বিতরণের সমন্বয় না থাকার কারনেই এই বিপর্যয়।

ভবিষ্যত এমন দুর্ঘটনা এড়াতে সবার আগে উৎপাদন ও বিতরণ ব্যবস্থাকে এনএলডিসির নিয়ম মেনে চলার তাগিদও দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।