যশোরে জেনেসিস হসপিটালে রোগ নিরাময় নামে চলছে অর্থ উপার্জনের ফাঁদ

jessore map

ব্যবসার পর ব্যবসা শুরু করেছে জেনেসিস হসপিটাল কর্তৃপক্ষ। তুবা (১৬) নামে এক শিশুর অসুস্থ্যতার সুযোগ নিয়ে উক্ত হাসপাতালের প্রধান ডাক্তার শেখ ইকবাল আহমেদ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নামে ২০টি পরীক্ষা নিরীক্ষা দিয়ে ক্ষান্ত হননি। তিনি রোগীর অভিভাবকের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলতে রাজী হননি। এমন অভিযোগ করেছেন ওই রোগীর অভিভাবক।

যশোর শহরের নাজির শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা শিশু তুবার পিতা অভিযোগ করেন, তার মেয়ে হঠাৎ অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পেটে পীড়া দায়ক রোগ যন্ত্রনা সইতে না পেরে কোন উপায় না পেয়ে তুবাকে নিয়ে তার অভিভাবক যশোর শহরের হযরত গরীবশাহ রোডস্থ জেনেসিস হসপিটানে গত ২অক্টোবর যান। বেসরকারী হাসপাতালে রোগ নিরাময়ের আশায় তুবাকে নিয়ে যাওয়ার পর হতবাক হয়ে পড়েন। প্রথমে অসুস্থ্য শিশু তুবাকে ওই হাসপাতালের পরিচালক চিকিৎসক শেখ ইকবাল আহমেদ ৬শ’ টাকা ফি নিয়ে দেখেন।

উক্ত চিকিৎসক শিশু রোগী তুবাকে এক্সরে থেকে শুরু করে ২০টি পরীক্ষা নিরীক্ষার একটি ব্যবস্থাপত্র তার অভিভাবকের হাতে দেন। ব্যবস্থা পত্রে পরীক্ষা নিরীক্ষার উপদেশের নীচে সীলমারা লেখা রয়েছে বাহিরের প্যাথলজী পরীক্ষার রিপোর্ট গ্রহনযোগ্য নয়। এই ক্ষেত্রে রোগী দেখার ফি ছাড়াও পরীক্ষা নিরীক্ষার নামে আরো একটি ব্যবসার ফাঁদ পেতেছেন হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ। এখানেই শেষ নয়। তুবাকে বাধ্য হয়ে তার অভিভাবক ওই হাসপাতালের পরিচালকের উপদেশ মূলক ২০টি পরীক্ষা নিরীক্ষা করানো ক্ষেত্রে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ক্যাশ মেমো ছাপিয়ে সেখানে বিভিন্ন কথা লিখে হাতিয়ে নিয়েছেন ৬ হাজার ৮শ’ টাকা। শিশুর তুবার ক্যাশ মেমোয় লেখা রয়েছে ইনভয়েস মূল্য ও নীট মূল্য ১০ হাজার ৩০ টাকা। ছাড় ২ হাজার ৬শ’ ৩০ টাকা। নীচ পে-বিল ৭ হাজার ৪শ’ টাকা। ডিপোজিটেড ৬শ’ টাকা সর্বমোট ৬ হাজার ৮শ’ টাকা গ্রহন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে,পেটের পীড়া দায়ক রোগ নিরাময়ের উদ্দেশ্যে ওই প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পর শুধু টাকা নেওয়ার বিভিন্ন ফন্দি এটেছেন হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার শেখ ইকবাল আহমেদ। তুবার অভিভাবক আরো অভিযোগ করে বলেন,তার মেয়েকে হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার শেখ ইকবাল আহমেদ প্রথম দিন পরীক্ষা নিরীক্ষা সম্পন্ন করে শিশু তুবাকে ৮ প্রকার ট্যাবলেট ও ১ প্রকার ক্যাপসুল খাওয়ার নির্দেশনা দেন। শিশু তুবাকে নিয়ে তার অভিভাবক বাড়িতে আসার পর তুবার অবস্থার কোন উন্নতি না হয়ে উল্টো দাঁত দিয়ে রক্ত বের হওয়া ছাড়াও অরো অসুস্থ্য হয়ে পড়লে চিকিৎসা পত্রে পরিচালকের সাথে যোগাযোগ করার জন্য ফোন ও মোবাইল নাম্বার থাকায় ওই উল্লেখিত নাম্বার গুলিতে ফোন করলে ফোন পরিচালকের পক্ষে ওই হাসপাতালের কর্মচারী রিসিভ করেন। রিসিভ করার পর তুবার অভিভাবক চিকিৎসক ডাক্তার শেখ ইকবাল আহমেদ এর সাথে তুবার চিকিৎসার ব্যাপারে কথা বলতে চাইলে কর্মচারীদের উক্ত চিকিৎসক জানান হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে এসে কথা বলতে হবে। হাসপাতালের কর্মচারীদের আচারণ ও কর্তৃপক্ষের ব্যবসার ফাঁদ দেখে তুবার অভিভাবক অভিযোগ করেন এই হাসপাতালে প্রতিনিয়ত রোগীরা নিঃস্ব হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের ফাঁদ পেতে হাসপাতালের কর্র্তৃপক্ষ রয়েছেন বহাল তবিয়তে। এ ব্যাপারে জেনেসিস হসপিটালের পরিচালক ডাক্তার শেখ ইকবাল আহমেদ এর সাথে যোগাযোগের জন্য ফোন করা হলে হাসপাতালে কর্মচারীরা বলেন স্যার মোবাইল ফোনে কথা বলেন না। হাসপাতালে এসে নিয়ম মোতাবেক তার সাথে দেখা করতে হবে। হাসপাতালে গিয়ে দেখা করার চেষ্টা করলেও তার দেখা পাওয়া গেল না। এ ব্যাপারে যশোরের সিভিল সার্জন ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা পরিচালকের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তুবাসহ অসহায় রোগীদের অভিভাবক।