অচল আরও ২টি ডেমু ট্রেন সচল করল বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা

 

দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার কেলোকায় চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে আরও ২টি অচল ডেমু ট্রেন। বাংলাদেশি প্রকৌশলীদের অক্লান্ত গবেষণা ও ট্রায়াল ট্রিটমেন্টে অচল ২টি ডেমুকে পার্বতীপুর কেলোকায় সচল করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট ৬টি ডেমু ট্রেন সচল করা হলো।

 

চীন থেকে আমদানি করা এসব ডেমু ট্রেনের প্রযুক্তি ও পাসওয়ার্ড তারা রেখে দিয়েছিল। ফলে এসব ট্রেন মেরামতে সমস্যায় পড়তে হয়। কিন্তু বাংলাদেশি প্রকৌশলীরা দেশীয় প্রযুক্তিতে মেরামত করে এসব ট্রেন সচল করতে সক্ষম হয়েছে।

রোববার (৯ অক্টোবর) দুপুরে দেশীয় প্রযুক্তিতে মেরামত করা পার্বতীপুর-রংপুর রুটে দুটি ডেমু ট্রেনের উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন।

মেরামত করা ডেমু ট্রেন উদ্বোধন উপলক্ষে পার্বতীপুর রেল স্টেশনে জনসভায় রেলপথমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়েকে এখন একটি পূর্ণ সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করা হয়েছে। যাত্রী সেবার মানসহ ট্রেনগুলোর উন্নয়ন করা হয়েছে। সমগ্র রুটে ডুয়েল গেজ করা হচ্ছে। ৫৮টি ষ্টেশনে উন্নয়ন করা হয়েছে। ২০২৪ সালে বঙ্গবন্ধু রেল সেতু চালু করা হবে।

 

তিনি বলেন, দেশে ২০টি ডেমু ট্রেন রয়েছে তার মধ্যে পার্বতীপুরের কোলোকায় মেরামত করা দুটিসহ ৬টি চলাচল করছে। বাকি ১৪টি মেরামতের ট্রায়াল অব্যাহত রয়েছে। ডেমু হচ্ছে একটি স্বল্প দূরত্বের ট্রেন। ২০১৩ সালে ৬৩০ কোটি টাকায় চায়না থেকে এই ট্রেনগুলো আমদানি করা হয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য ট্রেনগুলো তারা হস্তান্তর করলেও প্রযুক্তি ও পাসওয়ার্ডগুলো রেখে দেয় তাদের মুখাপেক্ষী করতে। আমাদের বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীগণ অনেক গবেষণার মাধ্যমে ট্রায়াল ট্রিটমেন্ট সম্পন্ন করে অচল ডেমুকে সচল করার সক্ষমতা অর্জন করেছে। আর এটা সম্ভব হয়েছে শেখ হাসিনা সরকারের জন্য।

 

পশ্চিম রেলের জিএম অসীম কুমার তালুকদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন পার্বতীপুর-ফুলবাড়ী এলাকার সংসদ সদস্য সাবেক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার।

 

তিনি বলেন, এইতো সেদিন ১৯৭৯ সালে দেখেছি রেলের কি দুর্দশা। যেকোনো কারণে ট্রেন মিস করলে সারারাত সারাদিন বসে থাকতে হতো। আমিই ছিলাম এই পার্বতীপুর স্টেশনে আমনুরা ট্রেন ফেল করে বসে। সেই রেলে আজ এসি ট্রেন চলছে, ডেমু ট্রেন চলছে। এসব কথা তিনি বলেন সেকাল-একাল বোঝাতে।

 

অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (আরএস) মঞ্জুর-উল-আলম চৌধুরী, লালমনিরহাট ডিআরএম আব্দুস সালাম, কেলোকার প্রধান নির্বাহী রফিকুল ইসলাম, পার্বতীপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাফিজুল ইসলাম প্রামাণিক, উপজেলা আওয়মী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বারিউল করিম খান ও পুলিশ সুপারের পক্ষে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোমিনুল ইসলাম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

পুনর্নির্মাণ করা ডেমুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় প্রকৌশলী জনাব আসাদুজ্জামানকে। তারই অক্লান্ত গবেষণা ও ট্রায়াল ট্রিটমেন্টে অচল দুটি ডেমুকে পার্বতীপুর কেলোকায় সচল করা হয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিদিন ডেমু ট্রেনটি পার্বতীপুর-রংপুর রুটে চলাচলের সময় বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটে পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে যাবে এবং বিকাল ৬টা ১০ মিনিটে রংপুরে পৌঁছবে। একই রুটে বিকাল ৬টা ২০ মিনিটে রংপুর ছেড়ে সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে পার্বতীপুরে ফিরে আসবে। পরবর্তী কর্মদক্ষতা সন্তোষজনক হলে দিনাজপুর-পার্বতীপুর রেল রুটে ডেমু ট্রেন চালানো হবে।