নেশাদ্রব্য খাইয়ে তরুণীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ

রাজধানীর ডেমরার কোনাপাড়া এলাকায় এক তরুণী (১৯) দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগীর ভাষ্য, রোববার বিকেলে কোমল পানীয়ের সঙ্গে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে খাইয়ে তাকে অচেতন করা হয়। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কাশবনে। সেখানে তরুণীর কথিত ভগ্নিপতি ও তার বন্ধুসহ চারজন তাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। এখন হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) তার চিকিৎসা চলছে।

ডেমরা থানার ওসি শফিকুর রহমান সমকালকে বলেন, রোববার রাত ২টার দিকে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরের মাধ্যমে খবর পেয়ে থানা পুলিশের একটি দল কোনাপাড়া এলাকায় যায়। সেখানে রাস্তার পাশে অসুস্থ অবস্থায় ওই তরুণী পড়েছিলেন। তাকে উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তরুণী অসুস্থ থাকায় তার কাছ থেকে বিস্তারিত জানা যায়নি। বরং কিছু অসংলগ্ন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

ভুক্তভোগী হাসপাতালে জানিয়েছেন, দুই সপ্তাহ আগে তিনি কদমতলীর পাটেরবাগ এলাকায় তার ভাইয়ের বাসায় বেড়াতে আসেন। এরপর রোববার বিকেল ৫টার দিকে তিনি কোনাপাড়া এলাকার মেলায় যান। সেখানে তার সঙ্গে পরিচয় হয় সেলিম নামে এক ব্যক্তির। তিনি নিজেকে ভুক্তভোগীর চাচাত বোনের স্বামী হিসেবে পরিচয় দেন। তার সঙ্গে ছিল আলম নামে এক বন্ধু। তারা তরুণীকে বিভিন্ন খাবার ও কোমল পানীয় খেতে দেন। ওই পানীয়তে নেশাজাতীয় কিছু মেশানো ছিল। কারণ খাওয়ার পর থেকেই তিনি অসুস্থ বোধ করতে থাকেন।
তরুণীর ভাই সাংবাদিকদের বলেন, প্রায় অচেতন অবস্থায় তার বোনকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে কোনাপাড়ার কাশবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাকে ধর্ষণ করে চারজন।

ঢামেক হাসপাতাল ওসিসির সমন্বয়ক বিলকিস বেগম জানান, দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। মঙ্গলবার তার ফরেনসিক পরীক্ষা করানো হবে।

পুলিশ সূত্র বলছে, ধর্ষণের ঘটনাটির ব্যাপারে এখনও তারা নিশ্চিত হতে পারেনি। ভুক্তভোগী বা তার পরিবারের কেউ এ ব্যাপারে তথ্য দিতে বা মামলা করতে চাইছেন না। তারা যেটুকু বলেছেন, সেই বক্তব্যে অনেক গরমিল পাওয়া গেছে। মোবাইল ফোনের তথ্য বিশ্নেষণ করেও অবস্থানের বিষয়টি মেলানো যায়নি। এ কারণে আরও বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে। প্রাথমিকভাবে জানা গেছে, তরুণী বিবাহিত। তবে তিনি কখনও বলছেন, স্বামী বিদেশে আছেন; আবার কখনও বলছেন, তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে। তার ভাইও এ ব্যাপারে কোনো তথ্য দিতে আগ্রহী নন। পুলিশের কাছে তিনি বলেছেন, ঘটনার বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। তবে ভুক্তভোগী সুস্থ হয়ে যেভাবে অভিযোগ করবেন, সেই অনুযায়ী তদন্ত করবে পুলিশ।