বিএনপির সমাবেশের আগে পরিবহণ ধর্মঘট ডাকার কারণ জানালেন মন্ত্রী

খুলনার পর বিএনপির রংপুর ও বরিশালের সমাবেশের আগেও পরিবহণ ধর্মঘট নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপিকে তো পরিবহণ মালিক-শ্রমিক সবাই চেনে। কারণ ২০১৩, ১৪ ও ১৫ সালে বিএনপি পরিবহণের ওপর অগ্নিবোমা নিক্ষেপ করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল।’

‘তারা (বিএনপি) শত শত গাড়ি-ঘোড়া পুড়িয়ে দিয়েছে, শত শত মানুষ হত্যা করেছে। এজন্য এখন পরিবহণ মালিক-শ্রমিকেরা শঙ্কিত। ফলে বিএনপি যেখানেই সমাবেশ ডাকে, সেখানেই তারা ধর্মঘট ডাকছে।’

শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

ধর্মঘট ডাকা মালিকদের মধ্যে যে বিএনপির সদস্যরাও আছেন- তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘পরিবহণ মালিক নেতা এবং সমিতির সদস্যদের মধ্যে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন দলেরই মানুষ আছে। শিমুল বিশ্বাস বাবু (বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী) তো পরিবহণ নেতা, তিনি তো বিএনপি করেন। উনারাই তো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ধর্মঘট ডাকার।’

‘সুতরাং বিএনপি ঘরানার পরিবহণ মালিকরাও শঙ্কিত এবং তারা কেউই যাতে বিএনপির অপরাজনীতির শিকার না হন, সে জন্য সবাই মিলেই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’

বিএনপি মহাসচিবের বৃহস্পতিবারের বক্তব্য ‘সরকার রিজার্ভ গিলে খেয়েছে’ এ প্রশ্নের কড়া জবাব দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘খাওয়া ভবন করে জনগণের টাকা গিলে খাওয়া দুর্নীতিতে পাঁচবার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হয়ে বিশ্বচোর উপাধি পাওয়া বিএনপির এখন বড় গলা।’

ড. হাছান বলেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা প্রবাদের মতো এখন বিশ্বচোরদের গলা বড়। বিএনপি দেশকে চারবার একক ও একবার যৌথভাবে দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানিয়ে বিশ্বচোর উপাধি পেয়েছিল। শুনতে খারাপ লাগলেও বাস্তবতা, এখন বিশ্বচোরদের মুখপাত্র হচ্ছেন তাদের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব।’

তিনি বলেন, ‘তারা হাওয়া ভবন বানিয়েছিলেন। হাওয়া ভবন তো আসলে একটা ‘খাওয়া ভবন’ ছিল। কারণ জনগণের টাকা ওখানে খাওয়া হতো। হাওয়া ভবনে বসে জনগণের সমস্ত ব্যবসা, সমস্ত প্রজেক্টের ওপর টোল বসিয়েছিল এবং জনগণের টাকাটাই গিলে খেতো তারা।’

তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা জনগণের টাকা আগে গিলে খেয়েছে, তারা শুধু খাওয়ার কথাই চিন্তা করে বলেই মির্জা ফখরুল সাহেব গতকাল এমন বক্তব্য দিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে বাস্তব ধারণা দিয়ে আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির শেষ সময় ২০০৬ সালে রিজার্ভ ছিল ৩.৪৬ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ সাড়ে তিন বিলিয়নেরও কম। আমাদের নেত্রী, আমাদের সরকার সেটি ৪৪ বিলিয়নে উন্নীত করেছেন। এবং এখন বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে, দেশে নানা ধরনের ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগের কারণে এবং রিজার্ভ থেকে টাকা নিয়ে বিশেষ তহবিল গঠনের কারণে সেটি ৩৭ বিলিয়নে গেছে। এরপরও বিএনপির সময়ের তুলনায় ১২ গুণ বেশি।’

‘মির্জা ফখরুল সাহেবরা সবসময় খাওয়ার কথা চিন্তা করেন তো, সে জন্যই এ সমস্ত কথা বলছেন।’