দেশকে ক্রিমিনাল স্টেট বানিয়েছে সরকার: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোটা দেশকে ক্রিমিনাল স্টেটে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি যে সরকার পরিচালনা করছেন সেটা হচ্ছে অপরাধীদের সরকার। এছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে সেটা বোঝা যাচ্ছে।

আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ দফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, যুবদলের সাবেক সহসভাপতি আলী আকবর চুন্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিএনপির গণসমাবেশে ‘সরকারের বাধা’ প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, নানারকম প্রতিবন্ধকতা বাধা পেরিয়ে গতকাল (শুক্রবার) থেকেই রংপুর জনসমাবেশে জনতার ঢল নেমে পড়েছে। মানুষের যেন স্বতঃস্ফূর্ত উৎসবে পরিণত হয়েছে রংপুর মহানগর। রংপুরের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ওয়ার্ড থেকে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রংপুরে এসে মিলিত হয়েছে। মানুষ শুকনা খাবার রুটি-চিড়া নিয়ে সমাবেশস্থলে উপস্থিত হয়েছে- এ যেন এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।

তিনি বলেন, জনতার এ স্রোত দেখে বিচলিত বোধ করছেন প্রধানমন্ত্রী এবং তার চেলা চামন্ডরা, মন্ত্রিসভার কিছু সিনিয়র সদস্যরা। এতে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রবিরোধী কথাই বলছে না, বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। দু’দিন আগে নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা যে বক্তব্য দেই সরকারের গুম খুন নির্যাতনের বিরুদ্ধে, শুধু যে আমরাই দেই তা নয় বিরোধী দলগুলো এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে অভিযোগ করেছে সমালোচনা করেছে। সেই সমালোচনাগুলোই পক্ষান্তরে ওবায়দুল কাদের বলেছেন। তাতে আমার মনে হয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। শতকরা ৯০ ভাগ বলছে আর দশ ভাগ বিভিন্নভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছে, যেভাবে বলুক না কেন মনে হয়েছে তিনি বিরোধী দলের কথাগুলোই বলছেন।

ক্ষমতাসীনদের সমালোচনা করে ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রিজভী বলেন, গত ১৪ বছরে ফ্যাসিবাদিক কায়দায় গণতন্ত্রকে হত্যা করে তাদের যে চিরচেনা সংস্কৃতি সেটা হল সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল তৈরি করা। সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় তারা বাংলাদেশে নব্য বাকশাল তৈরি করেছে। এখানে কথা বলা পাবলিক প্লেসে হোক আর রুমের ভিতরে তার পরিণতি হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া অথবা জেলে যাওয়া।

তিনি বলেন, বিএনপি যে সভা-সমাবেশগুলো করছে সেখানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে মানুষের সমর্থন আছে। মানুষ বিএনপির পক্ষে আছে। আমাদের দাবি হচ্ছে গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেওয়া। এই সরকার তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়েছে, দৃষ্টান্তহীনভাবে দাম বাড়িয়েছে। এর প্রতিবাদে বিএনপির এই কর্মসূচি চলছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকের সমাবেশ লোকে লোকারণ্য। শুধু সমাবেশস্থলে নয়, সারা রংপুর শহরে উৎসবের আমেজ দেখা যাচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে দুইটা জিনিস সুস্পষ্ট হচ্ছে- বিএনপি জনগণের জন্য যে কর্মসূচি দিয়েছে সেই কর্মসূচিতে জনগণের সমর্থন, আর একটা হচ্ছে- দেশের জনগণ ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামী দিনে এই অবৈধ সরকারের পতনের আন্দোলনে জনগণের সমর্থন থাকবে।