ঝিনাইদহে বিএনপি নেতা মশিউর রহমানের জানাজা জনসমুদ্রে পরিণত

বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা ও ঝিনাইদহ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব মশিউর রহমানের মৃতদেহ রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় দাফন করা হয়েছে। বুধবার ঝিনাইদহ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও হরিণাকুন্ডু উপজেলার মনিরুদ্দীন বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দু’দফা জানাজা শেষে বিকালে কন্যাদহ গ্রামের পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

বুধবার বেলা ১১টার দিকে ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশের পক্ষে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এ সময় বিউগলে বেঁজে ওঠে করুন সুর। ঝিনাইদহ শহরে অনুষ্ঠিত জানাজার নামাজে ইমামতি করেন কোটচাঁদপুর আলীয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বাহারুল ইসলাম। বুধবার সকাল থেকে জানাজায় শরীক হতে ঝিনাইদহের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ঝিনাইদহ সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আসতে থাকেন। শুধু ঝিনাইদহ নয়, আশপাশ জেলা থেকেও বিএনপির জৈষ্ঠ এই নেতার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাতে মানুষ জানাজা স্থলে ছুটে আসেন। ফলে বেলা ১১টার মধ্যে সরকারী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের বিশাল মাঠ কানায় কানায় পুর্ন হয়ে যায়।

জানাজায় অংশ নেয়া অনেকের এ সময় বলতে শোনা যায় মশিউর রহমান যে সত্যিকারের একজন জননেতা ছিলেন, তা মৃত্যুর পরও প্রমান করে দিলেন। জানাজা শুরুর আগে মশিউর রহমানের বর্নাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন তার বাল্যবন্ধু ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি, সাবেক প্রতিমন্ত্রী প্রবিণ রাজনীতিবিদ আব্দুল হাই এমপি।

এছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন তারেক রহমানের পক্ষে দলের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় নেতা নিতাই রায় চৌধুরী, খায়রুল কবীর খোকন, আজিজুল বারী হেলাল, অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, এ্যাড আসাদুজ্জামান আসাদ, জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, আমিরুজ্জামান খান শিমুল, সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, রফিকুল ইসলাম বকুল, কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি সৈয়দ মেহেদী হাসান রুমি, অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দীন, যশোরের সাবেরুল হক সাবু, মাগুরার মনিরুল ইসলাম, খুলনার সফিকুল ইসলাম মনা, আকতার হোসেন, শফিকুল ইসলাম তুহিন, আলী আহম্মেদ, তোজাম্মেল হোসেন, সাবেক এমপি আব্দুল ওহাব, মশিউর রহমানের বেয়াই খুলানার সাবেক মেয়র আব্দুল গাফফার বিশ্বাস, ঝিনাইদহ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ, ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল, হরিণাকুন্ডু উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর হোসেনসহ আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জানাজা অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহ-১ আসনের সংসদ ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি আব্দুল হাই এমপি তার বক্তব্যে বলেন, বন্ধু মশিউরের সঙ্গে আমার রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও কোন বিরোধ ছিল না। সে আমার একজন খাটি বন্ধু ছিল। তার ধ্যানজ্ঞান ছিল ঝিনাইদহের উন্নয়ন। রনাঙ্গনে তার সঙ্গে যুদ্ধ করে দেশ স্বধীন করেছি। তার মৃত্যুতে ঝিনাইদহ তথা দেশবাসি একটি সত্যিকারের দেশ প্রেমকিকে হারালো।

উল্লেখ্য ঝিনাইদহ উন্নয়নের কারিগর খ্যাত বিএনপির এই বর্ষিয়ান মঙ্গলবার বেলা ১২:০৫ মিনিটের সময় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ইন্তেকাল করেন। তার মৃত্যুতে শোকে স্তব্ধ হয়ে যায় ঝিনাইদহ ও হরিণাকুন্ডু। এই দুই উপজেলার মানুষের মাঝে শোকের ছায়া নেমে আসে।