যশোরে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ৩০ ছাত্রীর যৌন হয়রানির অভিযোগ

যশোরে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে,সদর উপজেলার ছাতিয়ানতলা-চুড়ামনকাটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শিমুল হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় গত ৩০ অক্টোবর বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ৩০ ছাত্রী ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে প্রধান শিক্ষকের কাছে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করে। অভিযোগ তদন্ত করার জন্য ২ নভেম্বর জ্যেষ্ঠ শিক্ষক আলেয়া খাতুনকে প্রধান করে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য ৪ জন হলেন বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সবিতা হাজরা, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুর রহমান, শহিদ হোসেন ও স্মৃতি রানী। আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এই তথ্য নিশ্চিত করে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত শিক্ষক শিমুল হোসেনকে বিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

স্কুল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ অক্টোবর শিমুল হোসেন ৯ম শ্রেণির বাংলা বিষয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন। এসময় পাঠ্যসূচিতে থাকা বহিপীর নাটকের চরিত্র শেখানোর সময় তিনি ছাত্রীর যৌন হয়রানি করেন। এতে ছাত্রীরা বিব্রত হলেও সম্মানের ভয়ে প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি। এ ঘটনায় ৩০ অক্টোবর ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তাদের সহপাঠীরা প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত অভিযোগ করে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান জানান, যৌন হয়রানির অভিযোগে নবম শ্রেণির ৩০ ছাত্রীর লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনাটি ম্যানেজিং কমিটিকে জানানো হয়। বিষয়টি নিয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর স্কুলে জরুরি সভা করা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে তদন্ত কমিটি গঠন করাসহ নানা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার ঘটনা শুনে কমিটির অন্য সদস্যদের সাথে তাৎক্ষণিকভাবে অবগত করা হয়। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে আলোচনায় বসেন তারা। তিনি ছাড়াও সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফজলুর রহমান, শিক্ষানুরাগী মোফাজ্জেল হোসেন, অভিভাবক সদস্য আব্দুর রহমান, শহিদ হোসেন, স্মৃতি রানীসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। সকলের মতামতের ভিত্তিতে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। তদন্তে যৌন হয়রানীর অভিযোগের সত্যতা মিললে শিক্ষক শিমুল হোসেনের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আগামী ১০ দিন ক্লাসসহ বিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে শিক্ষক শিমুল হোসেন জানান, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার। নাটকের চরিত্রে অভিনয়ে যে পাঁচ ছাত্রী ছিলো তাদের কোনো অভিযোগ নেই। অথচ অন্য ছাত্রীরা যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। তার ক্যারিয়ার ধ্বংস করার জন্য কয়েকজন ছাত্রী আক্রোশমূলক এই মিথ্যা অভিযোগ করেছে। অভিযোগকারীদের মধ্যে অনেকেই স্কুল সময়ে বহিরাগতদের সাথে গল্প করে। শাসন করার কারনে অনেক আগে থেকেই তারা ক্ষুব্ধ ছিলো।