সৌদি রিয়াল ভাঙ্গানোর কথা বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে ২০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সময় স্থানীয় লোকজন ফারুক শেখ নামে এক প্রতারককে ধরে র্যাবের হাতে সোপর্দ করেছে। এ ঘটনায় দুই প্রতারকসহ অজ্ঞাতনামা ১ জনের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। মামলা করেছেন, যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার তেলকুপ গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে লাভলু হোসেন। মামলার আসামিরা হচ্ছে, গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার আইকদিয়া গ্রামের কালা শেখের ছেলে ফারুক শেখ, একই থানার ঘুনসী গ্রামের আমজাদ তালুকদারের ছেলে খোকন তালুকদারসহ তাদের অজ্ঞাতনামা ১জন।
লাভলু হোসেন মামলায় উল্লেখ করেন, এক সপ্তাহ আগে বারো বাজারে রাস্তার উপর হঠাৎ করে খোকন তালুকদার তাকে একটি সৌদি ১শ’ রিয়ালের নোট দিয়ে বলে তিনি অত্যন্ত গরীব মানুষ এই নোটসহ আরো অনেক গুলো বিদেশি নোট ফুটপাত থেকে ক্রয়কৃত পুরাতন জ্যাকেটের ভিতর থেকে তিনি পেয়েছেন। খোকন তালুকদার নিজে এই নোটটি ভাঙ্গাতে গেলে তাকে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয় বলে তাকে জানায়। প্রতারক খোকন তালুকদার বাদিকে দিয়ে ভাঙ্গানোর জন্য করুন ভাবে আকুতি মিনুতি করলে বাদি নোটটি প্রতারকের কাছ থেকে নিয়ে মানি এক্সচেঞ্জ থেকে একশ’ সৌদিরিয়াল ভাঙ্গিয়ে তার হাতে ২৮৫০ টাকা দেয়।
প্রতারক খোকন তালুকদার বাদিকে খুশি হয়ে ৫শ’ টাকা দিতে গেলে বাদি নেয় না। প্রতারক খুশি হয়ে বাদিকে জানায় তার কাছে আরো বিদেশী নোট রয়েছে। যা সে ভয়ে ভাঙ্গাতে পারছেনা। বাদির সহযোগীতা চেয়ে মোবাইল নাম্বার নিয়ে যায়। এরই মধ্যে গত ৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় প্রতারক খোকন তালুকদার তার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বাদির মোবাইলে ফোন করে বলে তার কাছে ১০ হাজার সৌদি রিয়াল রয়েছে। সে তা ভাঙ্গাতে পারছেনা বাদি তাকে ২০ হাজার টাকা দিলেই প্রতারক রিয়াল গুলি বাদিকে দিয়ে দিবে। বাদি প্রথমে রাজী না হলেও প্রতারকের অব্যাহত ফোন করে বিভিন্ন প্রকার লোভ দেখিয়ে প্রলুদ্ধ করে রাজী করতে সক্ষম হয়। খোকন তালুকদার মঙ্গলবার ৮ নভেম্বর দুপুর দেড়টায় বাদিকে ২০ হাজার টাকাসহ যশোর শহরের হুশতলা তিন রাস্তার মোড়ে ডাকে। প্রতারকের কথামতো বাদি ২০ হাজার টাকা নিয়ে হুশতলা তিন রাস্তার মোড়ে উপস্থিত হন। উপস্থিত হওয়ার পর খোকন তালুকদার ও তার সহযোগী গ্রেফতারকৃত ফারুক শেখ বাদিকে কৌশলে হুশতলা তিন রাস্তার মোড় থেকে তাঁতীপাড়া রোডের পূর্ব পাশের্^ ড. দোজা স্মৃতি মডেল একাডেমির উত্তর পাশের্^ গলির রাস্তায় নিয়ে যায়।
সেখানে বাদি খোকন তালুকদারের কথামতো ফারুখ শেখ ৫শ’ টাকার ৪০টি নোট ২০ হাজার টাকা দিলে প্রতারকরা বাদিকে তাদের বাজার করা ব্যাগের মধ্যে গামছাদ্বারা মোড়ানো একটি পোটলা দিয়ে বলে বাড়িতে গিয়ে খুলে দেখতে। বিষয়টি বাদির নিকট সন্দেহ হলে বাদি পোটলা খুলতে গেলে তারা বাদিকে বাঁধা প্রদান করে। তখন বাদি চিৎকার দিলে স্থানীয় জনগন এগিয়ে গিয়ে প্রতারক চক্রের সদস্য ফারুক শেখকে আটক করে। এসময় সেখান থেকে খোকন তালুকদারসহ অজ্ঞতনামা আরো ১জন পালিয়ে যায়। স্থানীয় জনগন ফারুক শেখকে চড় থাপ্পর মারে।
এমন সময় র্যাবের একটি টহল টিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে জনগনের হাতে আটক প্রতারক ফারুক শেখকে তাদের হেফাজতে নেন। গ্রেফতারকৃত প্রতারক ফারুক শেখের পাঞ্জাবীর পকেটে থাকা বাদির কাছ থেকে নেওয়া ২০ হাজার টাকা, মিশরীয় ১টি ১০ ডলারের নোট, মালয়েশিয়ার ১টি রিংগিত কোরিয়ান ১ হাজার ওন এর নোট ১টি, প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ১টি বাজারের ব্যাগ তার ভিতর লাল সবুজ চেক গামছা দিয়ে মোড়ানো পুরাতন খবরের কাগজ ও ১টি ভিমবার সাবান উদ্ধার করেন।
