যশোরে পাঁচ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া সন্তান পেতে আদালতে বাবা

পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালে যশোর জেনারেল হাসপাতাল থেকে হারিয়ে যাওয়া সন্তানকে ফিরে পেতে আজও আহাজারি করছেন এক মা। এখনো সন্তানের সন্ধান পাওয়ার আশায় বুক বেধে রয়েছেন রূপালী বেগম নামে ওই মা। তিনি বলেন,‘আমি আশা করছি আমার সন্তান একদিন আমার বুকে ফিরে আসবে। সন্তানকে ফিরে পেতে পিতা সাইফুল ইসলাম চলতি বছরের ৬ অক্টোবর আদালতে মামলা করেছেন। যার নম্বর ২৬/৬। যা বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধীন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে, ১০১৭ সালের ৭ জুলাই সদর উপজেলার রুদ্রপুর গ্রামের সাইফুল ইসলামের স্ত্রী রূপালী বেগম যশোর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। এরপর লেবার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ওইসময় অজ্ঞাত পরিচয়ের এক নারী এসে তাদের বলেন, তার কোনো সন্তান নেই। শিশুটিকে তিনি একটু কোলে নিতে চান। এরপর তার শাশুড়ি সখিনা বেগমের কাছ থেকে কৌশলে শিশুটি কোলে নিয়ে ওই নারী পালিয়ে যায়। যা নিয়ে হাসপাতাল চত্বরসহ সারা শহরে হৈ চৈ পড়ে যায়।
ঘটনার পর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক সুকুমার রায় শিশু চুরির ঘটনায় সন্দেহভাজন মোল্লাপাড়া এলাকার সাখাওয়াত হোসেনের স্ত্রী মমতাজ পারভীনকে আটক করেন। কিন্তু জোরালো প্রমাণ না থাকায় আদালত থেকে জামিন পান মমতাজ পারভীন। এরপর থেকেই স্ত্রী রূপালী ও তার স্বামী সাইফুল ইসলাম সন্তানের খোঁজ অব্যাহত রাখেন।

সর্বশেষ, চলতি বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর লোক মাধ্যমে জানতে পারেন তাদের চুরি হওয়া সন্তান শার্শা উপজেলার বাগডাঙ্গা গ্রামের ইউসুফ আলীর বাড়িতে লালিত-পালিত হচ্ছে। ২০ সেপ্টেম্বর ইউসুফ আলীর বাড়িতে গেলে তারা সন্তান পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন। তবে, ওই সন্তানকে তারা প্রকৃত পিতামাতার জিম্মায় দিতে অস্বীকার করেন। এ ঘটনায় চলতি বছরের ৬ অক্টোবর আদালতে সন্তানকে ফিরে পেতে ইউসুফ আলীর নামে মামলা করেছেন।

ওই শিশুর পিতা সাইফুল ইসলাম জানান, জন্মের সময় তার সন্তানের বাম কানে একটি দাগ ছিল। যে দাগ ওই শিশুর কানে রয়েছে। শিশুটির চেহারার সাথে তাদের বড় সন্তানের চেহারার মিল রয়েছে। এ সন্তান তাদের এতে কোনো ভুল নেই। সন্তান ফিরে পেতে আদালতে মামলা চলমান।
শার্শার ইউসুফ আলী জানান, তিনি কোনো সন্তান চুরি করেননি। তিনি সন্তানকে শার্শায় কুড়িয়ে পেয়ে বড় করেছেন। ওই সন্তানের উপর তার হক রয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক আজিজুল হক জানান, ডিএনএ টেস্টের জন্য আদালত নির্দেশ দিয়েছে। ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলেই আদালতে জমা দেওয়া হবে।#