যশোরে টিসিবি’র পন্যের কার্ড বিতরনে দেখা দিয়েছে শংকা !

ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) পন্য বিতরনের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে তৈরী কার্ড বিতরনে দেখা দিয়েছে নানা অনিয়ম। একজন জন প্রতিনিধি’র কারনে উপশহর এলাকার একটি ওয়ার্ডে কিছু টিসিবি কার্ডধারীরা এখনও তাদের কার্ড হাতে পাননি বলে খবর পাওয়া গেছে। টিসিবি কার্ডধারী হিসেবে তালিকাভূক্ত হলেও কার্ড হাতে পায়নি এমন ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়েছে। ঘটনাটি উপশহর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে পরিষদের কাউন্সিলদের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে নানান গুঞ্জন। এ ব্যাপারে থানা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন উপশহরবাসী।

উপশহর ইউনিয়নের বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন,টিসিবি’র পন্য বিতরনের জন্য গত বছরে জেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলদের মাধ্যমে তালিকা চাওয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসনের আয়োজনে সাড়া দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরগন তাদের ওয়ার্ড এলাকার বাসিন্দাদের কাছে টিসিবি’র পন্য পাওয়ার ক্ষেত্রে ফরম বিতরণ করেন।

চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরগন তাদের পছন্দের নারী ও পুরুষদের মাঝে ফরম বিতরণ ও ছবিসহ ফরম সংগ্রহ করে উপজেলায় পাঠিয়ে দেয়। পরবর্তীতে টিসিবি’র কার্ডধারী হিসেবে তালিকা প্রস্তুতসহ টিসিবি’র কার্ড বিতরণ করা হয়। সূত্রগুলো বলেছেন,টিসিবি’র কার্ড বিতরণে গত বছর উপশহর ইউনিয়ন পরিষদের কতিপয় কাউন্সিলর (জনপ্রতিনিধি) চরম অনিয়ম করেন। কতিপয় কাউন্সিলর নিজে তার ইচ্ছা মাফিক কার্ড নিজের দখলে রেখে বাকী কার্ডধারীদের কাছে পৌছে দেন। যে কার্ড তিনি নিজে রেখেছেন সেই কার্ড দিয়ে তিনি টিসিবি’র পন্য ন্যায্য মূল্যে একাই তুলেছেন।

সম্প্রতি ডিসেম্বর মাসে পুরাতন কার্ড নিয়ে দারুন অনিয়ম ও কার্ডধারীদের সনাক্ত করতে যশোর পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলিতে নতুন কার্ড বিতরনের সিদ্ধান্ত গ্রহন করেন স্থানীয় প্রশাসন। কার্ডধারীদের নাম ঠিকানা সম্বলিত টিসিবি’র পন্য কার্ড বিতরনের উদ্যোগ গ্রহন করে স্থানীয় প্রশাসন। গত দুই সপ্তাহ যাবত যশোর পৌরসভা ও ইউনিয়নগুলিতে টিসিবি’র পন্য কার্ড বিতরণ শুরু হয়। পুরাতন কার্ড বাতিল করে নতুন কার্ডে চলতি বছরের নভেম্বর ডিসেম্বর এবং আগামী নতুন বছরের জানুয়ারী,ফেব্রুয়ারী,মার্চ,এপ্রিল,মে ও জুন মাস পর্যন্ত টিসিবি’র পন্য বিতরন নিশ্চিত করতে কার্ডে উল্লেখ করা হয়।

একজন টিসিবি’র কার্ডধারীকে ২ লিটার বোতলজাত সোয়াবিন তেল,২কেজি মুসুরী ডাল,১ কেজি চিনি ও রোজার মাসে এর সাথে ২ কেজি ছোলা বিতরনের হিসাব উল্লেখ রয়েছে। উপশহর ইউনিয়ন পরিষদের চৌকিদার,দফাদার (গ্রাম পুলিশ) এর মাধ্যমে টিসিবি’র কার্ড বিতরণ শুরু হলেও একজন জন প্রতিনিধি তার ওয়ার্ডে কার্ড বিতরনে গ্রাম পুলিশকে নানা দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। জনপ্রতিনিধির কারনে গ্রাম পুলিশ কার্ড বিতরণে চরম হিমশিম খাচ্ছে। এ ধরনের অভিযোগ যশোরের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে রয়েছে বলে জানাগেছে। ফলে টিসিবি’র কার্ডধারী হয়েও কার্ড না পাওয়ার সম্ভবনা দিয়েছে ওই ওয়ার্ডে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও কাউন্সিলরগন জেনেও অজ্ঞাত কারনে কোন ভূমিকা রাখছেন না। এ ব্যাপারে ইউনিয়নের বাসিন্দারা তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা প্রশাসকসহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।