জনগণের ভোট চাইলে আ.লীগ মানুষকে কষ্ট দিত না: নজরুল ইসলাম খান

দ্রব্যমূল্য প্রতিদিনই বাড়ছে উল্লেখ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসতে চাইলে আওয়ামী লীগ মানুষকে কষ্ট দিত না। তারা জনগণের ভোট চায় না। ভোটের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম বিএনপির নাসিমন ভবনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে নুর আহমদ সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এসময় তিনি আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি দেশের ইউনিয়ন পর্যায়ে দলের পক্ষ থেকে পদযাত্রা কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন তিনি।

বিএনপির লড়াই চলছে, চলবে-উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা ঢাকা মহানগরীতে পদযাত্রা করছি এবং জনগণের বিপুল সাড়া পাচ্ছি। তাই আগামী দিনে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেই পদযাত্রা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করতে। আগামী ১১ তারিখ শনিবার দেশের সকল ইউনিয়নে পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। এই সরকার আমরা কর্মসূচি পালন করতে গেলে বাধা দেয়। আমরা দেখতে চাই, সারা বাংলাদেশের কয়টা ইউনিয়নে তারা বাধা দিতে পারে। আন্দোলন আরও বেগবান হবে এবং এই সরকারের পতন হবে ইনশল্লাহ।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ আরেকবার ভোট ডাকাতি করতে চায়, ভোট চুরি করতে চায়। কিন্তু এবার কোনোভাবে তাদের এটা করতে দেয়া হবে না। আমরা একবার বাকশালের গোরস্থানের ওপর শহীদ জিয়ার হাত ধরে গণতন্ত্র পেয়েছিলাম। আরেকবার স্বৈরশাসক, সামরিক শাসক থেকে খালেদা জিয়ার হাত ধরে গণতন্ত্র পেয়েছিলাম। এবার এই সরকার থেকে আমরা গণতন্ত্র মুক্ত করবো আমাদের নেতা তারেক রহমানের হাত ধরে।

এ সময় তিনি সরকারের প্রতিহিংসার শিকার হয়ে খালেদা জিয়া কারাগারে রয়েছে এবং তারেক রহমান দেশে ফিরতে পারছেন না বলেও মন্তব্য করেন। তিন সপ্তাহের মধ্যে দু’দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো এবং দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনজীবনে যে প্রভাব পড়ছে সেই বিষয়টি তুলে ধরেন।

সমাবেশে প্রধান বক্তা বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘মনে করতে হবে, আমরা একটা মহাযুদ্ধে আছি। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের আন্দোলন শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য নয়। জনগণের জন্য আন্দোলন করছি। তাই জনবিচ্ছিন্ন সরকারকে জনগণকে দিয়ে ক্ষমতাচ্যুত করতে হবে। আসুন আমরা এই লড়াই একসঙ্গে লড়ে যাই।’

নগর বিএনপির আহবায়ক ডা. শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন, উপদেষ্টা কমিটির সদস্য জয়নাল আবেদীন ফারুক, ভিপি জয়নাল, গোলাম আকবর খোন্দকার, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, এসএম ফজলুল হক, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, কেন্দ্রীয় নেতা লুৎফর রহমান কাজল, এএম নাজিম উদ্দিন, ম্যা মা চিং, জালাল উদ্দিন মজুমদার, হারুনুর রশিদ, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক আবু সুফিয়ান ও নগর বিএনপির সদস্য সচিব আাবুল হাশেমের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার সিনিয়র নেতারা বক্তব্য প্রদান করেন। এসময় প্রয়াত বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদের স্ত্রী হাসনা মওদুদও উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে সমাবেশ চলাকালে স্থানীয় নেতাদের নামে পাল্টাপাল্টি স্লোগান দেওয়া ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে বিএনপির দু’পক্ষের কর্মি-সমর্থকদের মধ্যে হালকা মারামারি ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেতারা তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে আনেন।