যশোরে ভেজাল সার উৎপাদনকারী কারখানা সীলগালা

jessore map

যশোর সদরের ভেজাল সার কারবারিরা সোচ্চার হয়ে তাদের কর্মকান্ড করে যাচ্ছে। যারা ভেজাল দস্তাসার থেকে শুরু করে কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন উপাদান তৈরীতে পারদর্শী। তারা সব সময় থেকে যাচ্ছে ধরা ছোয়ার বাইরে। ভেজাল দস্তাসার উৎপাদনকারীদের বিরুদ্ধে চলতি বছরের শুরু থেকে র‌্যাব,পুলিশ ও বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিরব থাকার সুযোগে অবাধে তৈরী হচ্ছে ভেজাল দস্তাসার থেকে শুরু করে কৃষি জমির জন্য বিভিন্ন উপাদান।

আর যা তৈরী হচ্ছে তার মান নিয়ে খোদ সদর উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মকর্তা ও কৃষকদের মধ্যে চরম সন্দিহান রয়েছে। তারপরও যারা ভেজাল সার উৎপাদনে পটু তারা বসে নেই। যে ভাবেই হোক না কেন তাদেরকে দমিয়ে রাখতে সদর উপজেলার কৃষি অফিস দারুনভাবে হিমশিম খাচ্ছে। এ দিকে নতুন বছরে সদর উপজেলার সাহাপুর আড় পাড়া এলাকায় গড়ে ওঠা সুফলা এগ্রো কেমিক্যাল সার কারখানায় অভিযান চালিয়ে হেপ্টা উৎপাদনে অনিয়মের অভিযোগে কারখানাটি সীলগালা করে দিয়েছে।

সোমবার ৬ ফেব্রুয়ারী সকাল থেকে যশোর সদর উপজেলার কৃষি অফিস অভিযান চালিয়ে কারাখানাটি সীলগালা করে দেয়। এ ব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার সাজ্জাদ হোসেন জানান, সুফলা এ্যাগ্রো কেমিক্যাল ইন্ডাষ্ট্রিজ সার উৎপাদন কারখানায় হেপ্টা তৈরীতে সরকারি নিয়ম উপেক্ষা করে ক্রিস্টলের পরিবর্তে গ্রানোলর/ দানাদার তৈরী করে। তাছাড়া তিনি আরো জানান, যেখানে হেপ্টা উৎপাদনে ২১ শতাংশের স্থলে মাত্র ২.৬৫ শতাংশ পাওয়া যায়। হেপ্টা উৎপাদনে সরকারি নিয়মকে উপেক্ষা করায় কারখানাটি সীলগালা করে দিয়েছে। এ সময় সহকারি কৃষি অফিসার ইয়াসমিন সুলতানাসহ উপজেলা কৃষি অফিসের কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন। সুফলা এ্যাগ্রো কেমিক্যাল ইন্ড্রাষ্ট্রিজ এর মালিক সহিদুল ইসলামের মুঠো ফোনে ফোন করে তার বক্তব্য নেওয়ার জন্য চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলেছেন, যশোর সদর উপজেলায় যেসব সারখানা রয়েছে তার মধ্যে মাত্র তিনটি বৈধ আর বাদবাকী যা রয়েছে তার অধিকাংশই সার কারখানার সার উৎপাদনে বৈধ কোন কাগজপত্র নেই। তবুও ভেজাল ও ধুরন্ধর সার কারখানার মালিকেরা সরকারি দপ্তরের বিভিন্ন কাগজপত্র তৈরী করতে বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করেছেন। তাদের কাগজপত্র যাচায় বাছাই ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করলে বেরিয়ে আসবে তাদের কাগজপত্র জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরী। সূত্রগুলো বলেছে,যাদের কাগজপত্র রয়েছে তাদের অনেকের নতুন অর্থ বছরে নবায়ন নিয়ে রয়েছে সন্দিহান। তাছাড়া,সরকারি নিয়ম মোতাবেক সার উৎপাদনসহ কৃষি জমিতে প্রয়োগের জন্য বিভিন্ন উপাদান তৈরী করার ক্ষেত্রে সে পারসেনটেন্স থাকার কথা তা অধিকাংশ থাকেনা। ফলে উৎপাদনকৃত সার থেকে কৃষি জমির জন্য উপাদান ভেজাল।

সূত্রগুলো বলেছেন,যশোর সদর উপজেলার ৪ নং নওয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে গড়ে ওঠা সার কারখানার মধ্যে প্রায় সব ক’টিতে গত বছরে র‌্যাব,পুলিশ,জেলা প্রাশসন ও সদর উপজেলা কৃষি অফিস অভিযান চালিয়ে ভেজাল সার জব্দসহ কারখানাটি সীলগালা করে দেয়। তারপরও থেমে নেই ভেজাল কারবারীরা। তারা বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে ভেজাল দস্তাসার থেকে কৃষি জমির জন্য প্রযোজ্য বিভিন্ন উপাদান তৈরী করে বিভিন্ন নামী দামী ব্রান্ডের মোড়কে ঢুকিয়ে অবাধে বাজারজাত করে। গত বছরে সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে শুরু করে জেলায় কর্মরত বিভিন্ন সরকারী সংস্থা কমপক্ষে এক ডজ্জন অভিযান চালিয়ে সার কারখানা সীলগালা ও জেল জরিমানা আদায় করেন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার রেকর্ড পরিমান অভিযানের ফলে ভেজাল সার কারবারীরা তটস্থ। তারপরও এ যাবত ভেজাল সার যারা উৎপাদনে অধিক লাভ পেয়েছেন তারা সব সময় অপেক্ষায় রয়েছেন কবে কখন সদর উপজেলা কৃষি অফিসার এখান থেকে বদলী হবেন।