যশোরে শহরে মাদক বিক্রির সবুজ সংকেত, অবাধে বেচাকেনার অভিযোগ

Jessore map

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ে ক সার্কেলের কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যদের এবং অর্থলোভী পুলিশের সবুজ সংকেত পেয়ে খোদ যশোর শহরের বড় বাজারের মধ্যে অবাধে চোলাইমদ বেচাকেনা করছে একটি সিন্ডিকেট। তাছাড়া,শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে ইয়াবা,গাঁজা ও ফেনসিডিল বেচাকেনা হলেও অভিযান চলে না এখানে। বিষয়টি আশপাশের বাসিন্দাদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন।

যশোর শহরের বড় বাজার এলাকার ব্যবসায়ীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন,যশোর বড় বাজারের বাবু বাজার পতিতালয়ের সামনে মুখরোচক বিভিন্ন ভাজাপোড়া বিক্রির অন্তরালে শাহীন বিক্রি করছে চোলাইমদ। তাছাড়া,পতিতালয়কে কেন্দ্র করে ছোট মহাসিন,আনারুল ও রাসেলসহ একটি চোলাইমদ সিন্ডিকের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অথচ যশোর কোতয়ালি মডেল থানার অদূরে সদর পুলিশ ফাঁড়ী থাকলেও তারাও জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে।

আর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় ক সার্কেলের পরিদর্শক লায়েকউজ্জামান,উপ-পরিদর্শক এস.এম.শাহীন পারভেজ, সাইদুর রহমান,সহকারী উপ-পরিদর্শক আরিফুজ্জামান,বিপ্লব চক্রবর্তী, সিপাহী আশিকুজ্জামান সজল, সিপাহী আছিয়া খাতুন ও ওয়ারলেস অপারেটর আতাউর রহমান দায়িত্ব পালন করছেন। ক সার্কেলের দায়িত্ব পালন করছেন যারা তাদের মধ্যে কতিপয় কর্মকর্তা ও সদস্যদের সাথে মাদকদ্রব্য বেচাকেনা চক্রের সাথে রয়েছে আলাদা চুক্তি। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় ক সার্কেলের কতিপয় অর্থলোভী কর্মকর্তা তার মদদ পুষ্ট সিপাহীর মাধ্যমে মাদক বেচাকেনা কারবারিদের সাথে অতিগোপনে যোগাযোগ রেখে অবাধে অর্থ উপার্জন করছেন।

যার ফলে খোদ শহরের মধ্যে সম্পূর্ন অবৈধভাবে ছোট মহাসিন,আনারুল,রাসেল ও শাহীন কৌশল নিয়ে দিনে ও রাতে চোলাইমদ বেচাকেনা করলেও এদেরকে কেউ আইনের আওতায় আনছেন না। যার ফলে বড় বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। অপর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলেছেন,সদর পুলিশ ফাঁড়ীর জনৈক কর্মকর্তা ও সদস্যর সাথে আলাদা অতিগোপন চুক্তি থাকায় পুলিশ চোলাইমদ বেচাকেনার চক্রের দিকে ফিরে তাকায় না। যার ফরে বীরদর্পে চোলাইমদ সিন্ডিকেটের সদস্যরা অবাধে চোলাইমদ বিক্রির ফলে বিষাক্ত মদ সেবন করে সম্প্রতি চারজনের প্রাণহানীর ঘটনা ঘটেছে। আক্রান্ত হয়েছে আরো তিন জন। বিষাক্ত চোলাইমদ পান করে যশোর সুলতানপুর ও চাঁনপাড়া এলাকায় নিহত ও আহতদের খোঁজখবর নিতে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের দু’টি পার্টি তদন্তে নামলেও বর্তমানে তা থেমে গেছে। তারপরও বন্ধ হয়নি বিষাক্ত চোলাইমদ বেচাকেনা।

সূত্রগুলো আরো বলেছেন, শহরের রেলষ্টেশন ওভার ব্রীজের দক্ষিণ পাশে তুলোতলার হিজড়ার বাড়ির নার্গিস ইয়াবা,গাঁজা ফেনসিডিল,বাবলাতলার সালমা ইয়াবা, ষ্টেশন টার্মিনালের পাশে শিরিন গাঁজা ও কয়লাপট্টি আসমা ইয়াবা ও ফেনসিডিল অবাধে বিক্রি করলেও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও চাঁচড়া ফাঁড়ী পুলিশ জেগে জেগে ঘুমাচ্ছে। সূত্রগুলো আরো বলেছে,প্রতিদিন ভোর রাতে শহরের মাড়–য়াড়ী মন্দির সংলগ্ন এলাকা থেকে সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন প্লাস্টিকের জারে চোলাইমদ ভরে হরিজন সম্প্রদায়ের লোকেরা শহরে পুরাতন পৌরসভার সামনে নিয়ে অবাধে বিক্রি করছে।

প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত হরিজন সম্প্রদায়ের সদস্যরা চোলাইমদ লাইসেন্স ছাড়া সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বিক্রি করছে। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও পুলিশ এখানে অজ্ঞাত কারনে অভিযান চালায় না। বিষয়টি রহস্যজনক বলে বড় বাজারের বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকেরা মনে করেছেন। সম্পূর্ণ অনিয়মতান্ত্রিক প্রতিক্রিয়ায় চোলাইমদ বেচাকেনার ব্যাপারে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয়ের দু’টি সার্কেলের উপ-পরিচালক হুমায়ূন কবিরের জানতে চাইলে তিনি বলেন,এ ধরনের খবর তার জানা নাই। যদি এ ধরনের খবর হলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।