ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ

যশোরের শার্শায় ‘পল্লী উন্নয়ন সমিতি’ নামে একটি এনজিও হতদরিদ্র কয়েক শ’ গ্রাহককে ঋণ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়ে গেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়,এক সপ্তাহ আগে প্রতারক চক্রটি নিজেদেরকে ‘পল্লী উন্নয়ন সমিতি’ (যার গভঃ রেজি নং ম-৭৫৮/১৯৯০) নামে একটি বিদেশী সংস্থার কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে সরকার অনুমোদিত এনজিও দাবি করে।
তারা উপজেলার সামটা গ্রামের আব্দুল খালেকের ছেলে মনিরুজ্জামান মনিরের বাড়ি ভাড়া নিয়ে শার্শা জোনাল অফিস পরিচয়ে তাদের এনজিওর কার্যক্রম চালু করে।
ওই অফিস থেকে শার্শা উপজেলার জামতলা,সামটা,টেংরা,মহিশাকুড়া,হাড়িখালি ও ঝিকরগাছা উপজেলার দেউলি, পাঁচপোতা,মাটিকোমরা,নায়ড়া ও তার আশপাশ এলাকার অন্তত দুই শতাধিক হতদরিদ্র মানুষকে ঋণ দেওয়ার কথা বলে তাদের থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।এরপর সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে অফিস উদ্বোধন করার কথা বলে ডেকোরেটর দিয়ে অফিস ও তার আশপাশ ডেকোরেশন করেন।
জামতলা বাজারের মর্ডান ডেকোরেটরের
মালিক আল-মামুন বলেন,সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে তাদের অফিস উদ্বোধনের জন্য স্টেজ প্যান্ডেল তৈরি করি।সমস্ত কিছু শেষ হওয়ার পর কিছু টাকা বায়না দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু রোববার বিকেল থেকে তারা লাপাত্তা। তাদের ফোনও বন্ধ রয়েছে।
এনজিওর কর্মকর্তারা লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার সংবাদ পেয়ে ঋণ প্রত্যাশীরা সোমবার সকাল থেকে এনজিও অফিসে সামনে দাঁড়িয়ে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য হাপিত্যেশ করছেন।
সোমবার অফিসের সামনে সাংবাদিকদের জানান,সামটা গ্রামের আব্দুল জলিলের স্ত্রী নবিছন নেছা দিয়েছেন ৬৫০০টাকা, একই গ্রামের আয়ুব আলির স্ত্রী আফরোজা খাতুন দিয়েছেন ১০হাজার টাকা,মাসুমের স্ত্রী ফিরোজা বেগম দিয়েছেন ১০০০টাকা।মহিষাকুড়া গ্রামের মফেজ উদ্দিন ১১হাজার টাকা,চেয়ারবানু ১৮হাজার টাকা,রহিমা খাতুন ৩৩হাজার টাকা,জাহানারা বেগম ১১হাজার টাকা,সামটা গ্রামের রবিউল ইসলাম ১১হাজার টাকা,জছিমন ১১হাজার টাকা,হাড়িখালি গ্রামের নবিছন নেছা ১১হাজার টাকা,আফরোজা বেগম ২২হাজার টাকা,ফিরোজা বেগম ১১হাজার,লিটন ৭৫০০টাকা,শেখ আব্দুল দলিল ৫৫০০টাকা,সখিনা খাতুন ৫৫০০টাকা,ইশারুল ইসলাম ২১হাজার ৫০০টাকা,টেংরা গ্রামের রুপিয়া বেগম ২০হাজার টাকা,সুমাইয়া খাতুন ২২ হাজার টাকা,আনারুল ইসলাম ২০হাজার টাকা,ছালমা খাতুন ৫ হাজার টাকা,নায়ড়া গ্রামের শহিদা খাতুন ৩৩হাজার টাকা দিয়েছেন।

এ সময় আন্দোলনকারী সামটা গ্রামের রবিউল ইসলাম বলেন,এক লাখ টাকা ঋন দেবে বলে ওরা আমার কাছ থেকে ১১হাজার টাকা আমানত নিয়েছে।সোমবার ঋণের টাকা দেওয়ার কথা ছিল কিন্তু এসে দেখি সবাই হাওয়া।
শেখ আব্দুল দলিল বলেন,হাড়িখালি বাজারে আমার কাঁচামালের দোকান আছে।ওরা আমার ৫০ হাজার টাকার ঋন দিতে চেয়েলো।দু’বছরে পরিশোষ করতি হবে।মাসিক কিস্তি ২৫০০টাকা।তাই ওদের আমানত দিয়েলাম সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা।
এ বিষয়ে ভাড়া দেওয়া বাড়ির মালিক মনিরুজ্জামান জানান,এক সপ্তাহ আগে মাসিক ২৫ হাজার টাকায় ওই এনজিওর কর্মকর্তারা বাড়িটি ভাড়া নেয়।সোমবার অফিস উদ্বোধন করা হবে।ওই সময় অফিসের উদ্ধতন কর্মকর্তারা এসে তিন লাখ টাকা জামানত দিয়ে চুক্তিনামা করবেন বলে তারা বলেছিলেন।রোববার বিকেল থেকে আমার বাড়ির রুমগুলো ফেলে রেখে এনজিওর কর্মকর্তারা পালিয়েছে।
স্থানীয় বাগআচড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক বলেন, ‘এভাবে একটি এনজিও এসে অফিস ভাড়া করেছে, তা আমার জানা ছিল না।বিষয়টি তিনি জানেন না।এ ব্যাপারে কেউ তার সাথে যোগাযোগ করেনি।’

শার্শা থানার ওসি এসএম আকিকুল ইসলাম বলেন,এমন ধরনের কোন তথ্য আমাদের কাছে নেই।কোন অভিযোগও আমরা এখনও পায়নি।অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।