ফেব্রুয়ারিতে আবার বেড়েছে মূল্যস্ফীতি

টানা পাঁচ মাস কমার পর ফেব্রুয়ারিতে দেশে মূল্যস্ফীতি ফের বেড়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাব মতে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ৭৮ শতাংশে। আগের মাস জানুয়ারিতে যা ছিল ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

রোববার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা শেষে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম মূল্যস্ফীতির সর্বশেষ তথ্য সাংবাদিকদের জানান।

প্রসঙ্গত, বিভিন্ন পণ্য ও সেবা বাবদ মানুষের খরচের হিসাবের ভিত্তিতে প্রতিমাসের ভোক্তা মূল্যসূচক (সিপিআই) তৈরি করে থাকে বিবিএস। কোনো নির্দিষ্ট মাসে এই মূল্যসূচক আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কতটুকু বাড়ল তার শতকরা হারই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি।

গত বছরের আগস্ট মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ শতাংশ ছাড়ায়। মূল্যস্ফীতির ওই হার ছিল ১১ বছর ৯ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০১১ সালের মে মাসে ১০ দশমিক ২০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি হয়।

গত বছরের আগস্ট মাসের পরে ধারাবাহিকভাবে কিছুটা করে কমতে থাকে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে তা কমে হয় ৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে এসে এ হার ফের বাড়ল।-

বিবিএসের সর্বশেষ হিসাব তুলে ধরে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী জানান, ফেব্রুয়ারি মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, যা আগের মাস জানুয়ারিতে ছিল ৭ দশমিক ৭৬ শতাংশ। আর খাদ্যবহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। জানুয়ারিতে এটি ছিল ৯ দশমিক ৮৪ শতাংশ।

সাম্প্রতিক সময়ে উৎপাদন খরচ বাড়ায় মূল্যস্ফীতি কিছুটা বেড়েছে বলে মনে করেন প্রতিমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, কৃষি খাতের জিনিসপত্রের দাম সেভাবে না বাড়লেও পোলট্রি ও মাছের ফিডের দাম বেড়েছে। আগে যে ফিড কেনা যেত ২৮ টাকায়, এখন সেটা কিনতে হচ্ছে ৭০ টাকায়। এটা নিয়ন্ত্রণে আসতে সময় লাগবে। এসব জিনিসের দাম একবার বেড়ে গেলে কমতে সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে বছরখানেকও লাগতে পারে বলে মত দেন তিনি।

এদিকে বিবিএসের হিসাব অনুসারে, শহরের তুলনায় এখনও গ্রামে মূল্যস্ফীতির চাপ বেশি। ফেব্রুয়ারি মাসে শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৮ দশমিক ৭৫ শতাংশ, যেখানে গ্রামে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৮০ শতাংশ।

ফেব্রুয়ারি মাসে গ্রামে খাদ্যে ৮ দশমিক ১৯ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ মূল্যস্ফীতি দেখা গেছে। এ সময়ে শহরে খাদ্যপণ্যে ৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যে ৯ দশমিক ৬১ শতাংশ মূল্যস্ফীতি ছিল।