ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: সৈয়দ রেজাউল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। কাজ না করে ভুয়া বিল ভাউচার দেখিয়ে লাখ, লাখ টাকা আত্মসাৎ, সময়মত হাসপাতালে না আসা, নিজের খেয়াল খুশি মত হাসপাতাল চালানোসহ নানা অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে জানা যায়. তিনি সদর হাসপাতালে যোগদানের পর থেকেই হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা ভেঙ্গে পড়েছে। তিনি ঠিকমত অফিস করেন না। সপ্তাহে ২/৩ দিন অফিসে আসেন না, বেশিরভাগ সময় থাকেন ঢাকাতে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর হাসপাতাল চত্বরের ভেষজ বাগানের উন্নয়নের নামে গত অর্থবছরে ৩ লাখ টাকা বরাদ্ধ আসে। সেখানে শুধুমাত্রা পুরাতন সাইনবোর্ড রঙ করে বাকি টাকা তিনি আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের অটোমেশনের ৮ লাখ টাকার বেশিভাগ আত্মসাতের। গত অর্থ-বছরে হাসপাতালের অটোমেশনের জন্য ৮ লাখ টাকা বরাদ্ধ এলেও তিনি ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে টাকা তুলে সে টাকা আত্মসাৎ করেছে। একই ভাবে লিলেন প্রকল্পের টাকাও তিনি আত্মসাৎ করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ডা: সৈয়দ রেজাউল ইসলামের আগেও দুর্নিতীর দায়ে অভিযুক্ত ছিলেন। তিনি ইতি পুর্বে ভোলা জেলার সিভিল সার্জনের দায়িত্বে ছিলেন। সেখানে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি করার অপরাধে কর্তৃপক্ষ তাকে ডিমোশন দিয়ে শাস্তিমুলক বদলী করেন খুলনাতে। সেখান থেকে তিনি ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে তত্বাবধায়কের দায়িত্ব নেন। দুর্নিতীর মাধ্যমে তিনি হয়েছে কোটি কোটি টাকার মালিক। ঢাকার শ্যামলী ও স্কাটন রোডে প্রিমিয়াম কোয়ালিটির ফ্লাট বাড়ি রয়েছে তার। বিভিন্ন ব্যাংকে নামে বে-নামে রয়েছে লাখ লাখ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, হাসপাতালে বায়োমেট্রিক হাজিরার নিয়ম থাকলেও তা মানা হয় না। নতুন তত্বাবধায়ক আসার পর হাসপাতালের ম্যানেজমেন্ট ভেঙ্গে পড়েছে। তার ইচ্ছেমত চালান তিনি। তাকে যারা তোষমোদ করতে পারেন অনিয়ম করে হলেও তাদের সুবিধা দেন। তিনি আসার পর স্বাস্থ্যসেবা কমিটির মিটিংও হয়নি।
এ ব্যাপারে জেলা বিএমএর সভাপতি ডাঃ মুন্সী রেজা সেকেন্দার বলেন, হাসপাতালে একজন তত্বাবধায়কের অনেক দায়িত্ব রয়েছে। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল জেলার স্বাস্থ্যখাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্থান। তাই তত্বাবধায়কের অবশ্যই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা রয়েছে। তাকে অনেক দ্বায়িত্বশীল হতে হবে। তিনি যদি অনিয়ম ও দুর্নিতী করে থাকেন তাহলে তার তদন্ত করে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত তত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল ইসলামের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয় বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, একটি মহল সুবিধা না পেয়ে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।