ভিক্ষুকদেরও নাকি ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে: ফখরুল

mirza fokrul
ফাইল ছবি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘সরকারের মন্ত্রী বলেছেন যে, বাজেট চমৎকার হয়েছে। অথচ আজ নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া বলছে যে, সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি নেই। নিত্যপণ্যের দামের যে ঊর্ধ্বগতি, চলমান সঙ্কট সেখান থেকে বেরিয়ে আসার কোনো রূপরেখা বাজেটে নেই। টাকা কোত্থেকে আসবে? কীভাবে আসবে সেটাও বলা নেই। এমনকি ভিক্ষুকদেরও নাকি ২ হাজার টাকা আয়কর দিতে হবে। এটাই হলো এই সরকারের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য।

শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ৪২তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ (বিএসপিপি)।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, জনগণকে নিঃস্ব করে ক্ষমতাসীনরা মেগা প্রজেক্টের মাধ্যমে নিজেদের উন্নয়ন করবে। আজ চাল-ডাল-তেল-লবণ ও পেঁয়াজের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে তা কিনতে মানুষ অস্বস্তিতে পড়েছে। গরিব মানুষ বলছে সামনে কোরবানি, আমারও তো সাধ হয়, গরুর গোশত রান্না করব। কিন্তু আদা কিনবে কোত্থেকে? সুতরাং এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাতে হবে। আর নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। সরকারকে বলব- অনেক হয়েছে আপনারা সরে যান। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। না হলে দেশের মানুষ জানে কীভাবে বিদায় করতে হয়।

বিএসপিপির আহ্বায়ক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরীর পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. সিরাজউদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক ড. তাজমেরি এসএ ইসলাম, অধ্যাপক ডা. আব্দুল কুদ্দুস, ডা. একেএম আজিজুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক ড. আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. বোরহান উদ্দিন খান, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ডা. রফিকুল ইসলাম, ঢাবি সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, কৃষিবিদ গোলাম হাফিজ কেনেডি, শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামসুল আলম সেলিম, অধ্যাপক ড. নূরুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম এবং উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের খান মোহাম্মদ মনোয়ারুল ইসলাম (শিমুল) প্রমুখ।

জিয়াউর রহমান প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ৪ বছরে তিনি দেশে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছিলেন। তিনি জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছিলেন। আজ আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের সবাইকে শ্রদ্ধা জানাতে চাই। কাউকে খাটো করতে চাইনা। কিন্তু আজকে যেই ব্যক্তির স্বাধীনতার ঘোষণার মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হলো সেই ব্যক্তিকে খলনায়ক বানানোর চেষ্টা করা হয়। এজন্য খুবই কষ্ট লাগে। যত কিছুই করুক, কিছুই আসে যায় না। জিয়াউর রহমানকে জনগণের হৃদয় থেকে মুছে দেওয়া যাবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, জিয়াউর রহমান ১৯৭৫ সালের নভেম্বরে দেশের ক্রান্তিকাল তথা ঘোর সঙ্কটে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি সিপাহীদের ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে দেশ বিনির্মাণের। তিনি মুক্তবাজার অর্থনীতির স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। সেজন্যই তিনি গ্রামে-গঞ্জে, নদীতে-খালে ছুটে বেরিয়েছিলেন। প্রত্যেক জেলায় জেলায় ঘুরেছিলেন। তিনি সংশ্লিষ্ট এলাকার সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপ করে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপ নিতেন। এই হলেন জিয়াউর রহমান। গোটা বিশ্ব তাকে এমার্জিং লিডার হিসেবে পরিচিতি দিয়েছিল। জিয়াউর রহমান সম্পর্কে অল্প সময়ে বলে শেষ করা যাবে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, গণতান্ত্রিক ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ ফিরিয়ে আনতে হবে। সেজন্য আমাদের লড়াই-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। আগামীতেও লড়াই করতে হবে। পেশাজীবীসহ সবাইকে আমি যার যার অবস্থান থেকে সোচ্চার হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানাব। দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হলে এর বিকল্প নেই।