সংরক্ষিত আসনে ভাগ বসাতে ‘অন্য’ দলের সঙ্গে হাত মেলাতে চায় পিটিআই

বামে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান এবং ডানে পিটিআইয়ের নেতা পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর আলী খান। ছবি: খাইবারনিউজ
পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি বা জাতীয় পরিষদের সংরক্ষিত আসন পেতে মরিয়া হয়ে ওঠেছে কারাবন্দি ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)। সংরক্ষিত আসন পেতে অন্য দলের সঙ্গে হাত মেলানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। রবিবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এ কথা জানিয়েছেন পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর আলী খান। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম ডন এই খবর জানিয়েছে।

যে কোনও বিধানসভায় সরকার গঠনের জন্য সংরক্ষিত আসন একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সংরক্ষিত আসনের অভাবে জাতীয় ও প্রাদেশিক পরিষদে সরকার গঠনে বেগ পেতে হবে পিটিআই সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীদের। কেননা, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা মহিলা ও সংখ্যাঘুদের জন্য সংরক্ষিত আসনের জন্য অযোগ্য হিসেবে বিবেচিত। ওই আসনগুলো বিভিন্ন দলের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হয়।

এবারের নির্বাচনে রাজনৈতিক ও আইনি জটিলতার কারণে একটি দল হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেনি পিটিআই। তবে দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বাজিমাত করেছে। তবে পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা দাবি করতে গেলে পিটিআই-এর জন্য সংরক্ষিত আসনের বিষয়টি অবশ্যই বাধা হয়ে দাঁড়াবে। তাই কূলে এসে তরি ডুবতে না দেওয়ার লক্ষ্যে অন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মিত্রতা বা একীভূত হওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে পিটিআই। এর মাধ্যমে সংরক্ষিত আসনে নিজেদের দখল পাকাপোক্ত করতে চাইছে তারা।

ডন নিউজের সঙ্গে কথা বলার সময় রবিবার পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গোহর আলী খান বলেছিলেন, তারা অন্য দলের সঙ্গে হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এ কথা সত্য। তবে সম্ভাব্য একটি জোটের জন্য পিটিআই অবশ্যই পিএমএল-এন বা পিপিপির সঙ্গে যোগাযোগ করবে না।

দুসরা রুখ শোতে কথা বলতে গিয়ে এ বিষয়ে তিনি সাফ জানিয়ে দেন, ‘আমরা উভয় দলের সঙ্গে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। কারও সঙ্গে সরকার গঠন বা একসঙ্গে সরকার করার বিষয়ে কোনও আলোচনা হবে না। তাদের নিয়ে সরকার গঠনের চেয়ে বিরোধী দলে বসা ভালো। তবে আমরা মনে করি একটি সরকার গঠনের মতো আমাদের যথেষ্ঠ সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে।’

তিনি পুনর্ব্যক্ত করেন, তার ম্যান্ডেট গৃহীত না হলে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল গঠন করবে পিটিআই।

কেন্দ্র এবং প্রদেশের বৃহত্তম দল পিএমএল-এন এবং পিপিপি-কে বাদ দেওয়ার পর নির্বাচনী জোট গঠনে অন্যান্য দলগুলোর সঙ্গে অংশীদারিত্বের কথা ভাবতে পারে পিটিআই।

এক্ষেত্রে জামাত-ই-ইসলামী (জেআই) একটি বিকল্প হতে পারে। দলটির কেপি বিধানসভায় তিনটি আসন রয়েছে। পিটিআই ও জেআই-এর ইতোমধ্যেই কেপি সরকারে মিত্র হিসেবে একসঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১৩ সালে উভয় দল মিলে একটি শাসক জোট গঠন করেছিল। যদিও ২০১৮ সালের মে মাসে প্রাদেশিক সরকারের মেয়াদের শেষের দিকে সেই অংশীদারিত্ব আনুষ্ঠানিকভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছিল।

সম্ভাব্য জোট হিসেবে আরেকটি বিকল্প হতে পারে মাজিল-ই-ওয়াহদাতুল মুসলিমীন (এমডব্লিউএম)। এমডব্লিউএম পিটিআইয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে এমন দলগুলোর একটি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, এমডব্লিউএম সংখ্যালঘু আসনের জন্য প্রার্থীদের একটি তালিকা জমা দেয়নি। এছাড়া, তারা নারী প্রার্থীদের তালিকাও জমা দিয়েছে কিনা তা-ও নিশ্চিত করা যায়নি।