বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক হিসাবে রেকর্ড ঘাটতি

আমদানি খাতে নেওয়া বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার আর্থিক হিসাবে ঘাটতি রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে এ খাতে ঘাটতি হয়েছে ৫৩৯ কোটি ডলার। গত অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে কোনো ঘাটতি ছিল না।

উলটো উদ্বৃত্ত ছিল ১৫ কোটি ডলার। বৈদেশিক মুদ্রার চলতি হিসাবে সাময়িকভাবে ঘাটতি মোকাবিলা করে কিছুটা উদ্বৃত্ত হয়েছে। তবে বৈদেশিক মুদ্রার সার্বিক হিসাবে এখনো ঘাটতি রয়েছে। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের চাপ বেড়েছে। বিশেষ করে আমদানি খাতে নেওয়া স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধের চাপ এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি। এর মধ্যে রয়েছে স্বল্পমেয়াদি ঋণ ও বাণিজ্যিক ঋণ। এছাড়া সেবা ও অন্যান্য খাতের দায়দেনা পরিশোধের চাপও বেড়েছে।

 

গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে স্বল্পমেয়াদি ঋণ পরিশোধ চেয়ে নেওয়া হয়েছিল বেশি। ফলে এ খাতে উদ্বৃত্ত ছিল ২২ কোটি ডলার, যা বাজারে ডলারের প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করেছে। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে এ খাতে নতুন নেওয়া ঋণের চেয়ে পরিশোধ করা হয়েছে বেশি। ফলে এ খাতে ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ১৩২ কোটি ডলার।

 

ট্রেড ক্রেডিট বা বাণিজ্যিক ঋণ খাতে গত অর্থবছরের একই সময়ে নতুন নেওয়া ঋণের চেয়ে পরিশোধ করা হয়েছিল বেশি। ফলে ওই সময়ে এ খাতে ডলারের প্রবাহ নেতিবাচক ছিল ২০৫ কোটি ডলার। চলতি অর্থবছরের একই সময়ে বেশি পরিশোধ করায় এতে ঘাটতি বেড়ে দাঁড়ায় ৭৪৪ কোটি ডলার। মূলত বৈদেশিক নতুন ঋণ বাবদ ডলারের প্রবাহ কমার কারণেই বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে সংকট চলছে।

এছাড়া সেবা ও অন্যান্য দায়দেনা খাতেও আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশি বেড়েছে। এ কারণে আর্থিক হিসাবেও ঘাটতি বেড়ে রেকর্ড পরিমাণে দাঁড়িয়েছে। গত অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বরে এ খাতে উদ্বৃত্ত ছিল ১৫ কোটি ডলার। কারণ, ডলারের প্রবল সংকটের মধ্যেও ঋণের প্রবাহ বেশি ছিল।

কিন্তু এখন ঋণের প্রবাহ কমে গেছে। বৈদেশিক ঋণের সুদহার বাড়ায় উদ্যোক্তারা একদিকে ঋণ নিচ্ছেন কম, অন্যদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকও সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির আওতায় ঋণপ্রবাহ কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছে।