বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে ভারত যাতায়াতকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভ্রমন কর ফাঁকির হিড়িক

প্রশাসনের নাকের ডগায় বেনাপোল চেকপোষ্ট দিয়ে যাতায়াত কারী পাসপোর্ট যাত্রীরা সরকারী ভ্রমন কর ও বেনাপোল স্থল বন্দরের ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে ভারত যাচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে এমন ঘটনা ঘটলেও নেই কোন মাথা ব্যথা কোন দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের। ফলে নির্বিঘ্নে ফাঁকি দিয়ে কিছু রাষ্ট্র বিরোধী লোক এসব কাজ করে যাচ্ছে। সেই সাথে বেনাপোল চেকপোষ্টের ফুটপাতে কিছু লোক কম্পিউটার নিয়ে বসে ভ্রমন কর এর ফাকির সাথে জড়িত বলে এমনটি দাবি করেছে সচেতন মহল। এসব দোকানদার খুব ভোরে ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে পরে ছিটকে পড়ে। এর আগেও কয়েকবার সরকারী ভ্রমন কর ফাঁকির সাথে জড়িত কয়েকজন আটক এবং কোন কোন যাত্রী বিভিন্ন রেফারেন্স দিয়ে এবং ফোনের মাধ্যেমে রেহাই পেয়েছে আটক এর হাত থেকে।

শুক্রবার সকালে ঢাকা থেকে আগত পাসপোর্ট যাত্রী মোঃ লিমন মিয়া ( পাসপোর্ট নং এ-১৩১০৪০৩৯)ও মোঃ সানেল হোসেন ( পাসপোর্ট নং এ ০৭৩৩১৮৯৪) ভারত যাওয়ার সময় ভ্রমন ফাঁকি দিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় একটি কম্পিউটার দোকানদার এর ম্যানেজার এর নিকট ধরা পড়ে। কে তাকে এ ট্যাক্স কোথা থেকে কাটা হয়েছে জিজ্ঞেস করলে সে জানায় বেনাপোল এসে নামলে একজন লোক তার নিকট থেকে পাসপোর্ট নিয়ে যেয়ে দুটি ভ্রমন কর ও দুটি পোর্ট ট্যাক্স এনে দিয়ে চলে যায়। বিনিময়ে তাদের নিকট থেকে ২১০০ টাকা নেওয়া হয়। ওই দুই যাত্রীর সাথে থাকা আর একজন যাত্রী তার ট্যাক্স কাটতে আসলে তখন সে সংশ্লিষ্ট তাজিম কম্পিউটারে ভ্রমন কর কত জানতে চাইলে ওই দোকানের ম্যানেজার রিয়াজ আহম্মেদ তখন জানায় ভ্রমন কর ও পোর্ট কর এবং অনলাইন খরচ সহ ১১০০ টাকা। তখন লিমন ও সানেল বলে আমরা ১০৫০ করে কেটেছি । সন্দেহ হলে তাদের ট্যাক্স দুটি অনলাইনে চেক করে দেখা যায় ভ্রমন কর দুটি জাল। তারা একজন লোকের সহযোগিতায় এ কর কেটেছে বলে জানায়। তবে কোন দোকান থেকে কেটেছে তা বলতে পারে না।

তাজিম কম্পিউটার এর ম্যানেজার রিয়াজ আহম্মেদ জানায় ফুটপাতে কম্পিউটারে কিছু দোকান গজিয়ে উঠেছে। তারা ভোর বেলায় ট্যাক্স কেটে আবার চলে যায়। ওই সব দোকানের নির্দিষ্ট কোন ঘর না থাকায় তারা দুর থেকে আসা পাসপোর্ট যাত্রীদের সুযোগ সুবিধা মত ফটোসপ এর মাধ্যেমে এডিট করে জাল ট্যাক্স তৈরী করে। তিনি আরো জানায় মোঃ সানেল হোসাইন লিমন মিয়ার পাসপোর্ট নাম্বার এর রিফারেন্স কোড দিয়ে চেক করলে সেখানে দেখা যায় মেহেদী হাসান এর নাম আসে এবং পাসপোর্ট নাম্বার এবি ৯৩৪৬৮৭ তরিখ ১৩/০৯/২৪ । অথচ তাদের ওই জাল ট্যাক্সের তারিখ ২৯/০২/২০২৪।

 

এ ভাবে এর আগেও কয়েক দফায় রাষ্ট্রিয় এ ভ্রমন কর ফাকির অপরাধে কয়েকজন আটক হলেও এরা আইনের ফাকঁফোকার দিয়ে বের হয়ে আসে। ভ্রমন কর ফাঁকির সাথে জড়িত ওই দুই পাসপোর্টযাত্রীকে বেনাপোল কাস্টমস চেকপোষ্টের সুপার এর কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুপার সাহেব এসেছেন কিনা তা জানার জন্য বাইরে খোজ নিতে গেলে চৌধুরী মার্কেট থেকে ওই দুইজন যাত্রী পালিয়ে যায়।

 

বেনাপোল চেকপোষ্টের একটি সুত্র জানায় এসব শুল্ক ফাঁকির দায়িত্ব রয়েছে ইনকাম ট্যাক্সের লোক। আগে মাঝে মধ্যে চেকপোষ্ট এলাকায় ইনাকম ট্যাক্সের লোক দায়িত্ব পালন করতে দেখা গেলেও বর্তমানে এদের দেখা যায় না। এর আগে ভারতীয় ৫ জন নাগরিক ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে দেশে ফেরার পথে চেকপোষ্টে আটক হলে বেনাপোল কাস্টমস কমিশনার মোহাম্মাদ হাকিম সাহেবকে অবহিত করা হয়। তিনি ও আইনগত কিছু বিধি নিশেধ এর কথা উল্লেখ করেন। পরে তাদের নামে মামলা দিতে কেউ রাজি না হলে তারা পুনরায় ট্যাক্স দিয়ে চলে যায়।