মামলার সাক্ষী হওয়া নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হয় বেনাপোলের রেশমা হিজরা

বন্ধু জাফরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে রেশমা হিজরা। ওই মামলায় সাক্ষী করা হয় ফারুককে। কিন্তু ফারুক আদালতে সাক্ষী দিতে রাজি হননি। এতে করে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন ধরণের হুমকি দেয় রেশমা। এছাড়াও তাদের মধ্যে পূর্ব শক্রতা ছিলো। সেসবের জেরেই রেশমাকে হত্যা করা হয়েছে বলে বুধবার আদালতে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গোলাম কিবরিয়া তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশের এসআই শংকর বিশ্বাস। জবানবন্দিতে ফারুক হোসেন বলেছেন, রেশমা ও তার আরেক বন্ধু জাফর একসাথে সীমান্ত এলাকায় মাদকের ব্যবসা করতেন। কিন্তু রেশমা গোপনে জাফরকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিতেন। পরবর্তিতে তাকে ছাড়িয়েও আনতেন রেশমা। এক মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারে জাফর। পরে রেশমার ওপর ক্ষিপ্ত হন জাফর। পরিবর্তিতে জাফরের ভয়ে বেনাপোল এলাকার সোহাগের বাড়ি ভাড়া নেন রেশমা।

জাফর ক্ষিপ্ত হয়ে সেবাড়িতে যেয়ে কুপিয়ে জখম করে রেশমাকে। পরে এ ঘটনায় আদালতে মামলা করেন রেশমা। ওই মামলায় সাক্ষি করা হয় আটক ফারুককে। কিন্তু ফারুক মামলায় সাক্ষ্য দিতে রাজী হয় না। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছিলেন রেশমা। এছাড়া এলাকার বিভিন্ন লোকজনকে নানাভাবে হয়রানি করত রেশমা। যে কারণে লোকজন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। এরই জের ধরে ঘটনার দিন রাতে কৌশলে কাগজপুকুর কেন্দ্রীয় কবরস্থানের পাশে ডেকে এনে শ্বাসরোধে তাকে হত্যা করেন ফারুকসহ জাফর, রুবেল, সাগর, টিটো, আল মামুন, শরীফ, আতাউল্লাহ ও হোসাইন। হত্যার পর লাশ বস্তাবন্দি করে কবরস্থানে পুঁতে রেখে চলে যায় সবাই।

উল্লেখ্য, গত ১১ মার্চ বিকেলে হত্যার সাথে জড়িত ফারুককে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে কবরস্থানে পুঁতে রাখা রেশমার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ডিবি পুলিশের এসআই মো. মফিজুল ইসলাম ৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৩/৪ জনকে আসামি করে বেনাপোল পোর্ট থানায় মামলা করেন। বুধবার আদালতে ফারুককে সোপর্দ করলে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি।