যশোরে চৌগাছা সরকারি খাদ্য গুদামে অবিশ্বাস্যভাবে ধান-চাল ক্রয়:লাখ লাখ টাকা ওসিএলএডি’র পকেটে

গুদামে কৃষকের আনাগোনা নেই। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ফাঁকা। তার পরও প্রতিদিন গুদামে প্রতিদিন মোট ৫৪ টন ধান ঢুকছে। এ যেন জীনের আছর পড়েছে যশোরের চৌগাছা সরককারি খাদ্য গুদামে। চলতি বোরো সংগ্রহ অভিযানে এমনটি চলছে সংশ্লিষ্ঠ গুদামে।
৭ মে সরকারিভাবে বোরো সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। তারপর থেকে অস্বাবিকভাবে চৌগাছা সরকারি খাদ্য গুদামে কেনাকাটা চলছে। প্রতিদিন সকালে গুদামে তিন ট্রাক ধান ঢুকছে। ওই ট্রাকে অগ্রিম পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে সরকারের দেয়া ৫০ কেজির খালি বস্তা। তবে ওই বস্তায় স্টেন সীল মারা নাই। ধান ক্রয়ের সরকারের নীতিমালা রয়েছে তা কোনটাই মানা হচ্ছে। ক্রয়কৃত ধানের মহেশশ্বর চেক করলেও বিষয়টি ধরা পড়বে।

নির্ভরযোগ্য জানা গেছে, গত দুই বছর আগে চৌগাছা সরকারি খাদ্য গুদামে ইনচার্জ হিসেবে মতিয়ার রহমান যোগদান করেন। কয়েকদিন আগে তার বদলীর আদেশ এসেছে অধিদপ্তর থেকে। মাগুরা শ্রীপুর উপজেলার সরকারি খাদ্য গুদামে রাকিবুল হাসানকে এখানে যোগদান করতে বলা হয়েছে। এ খবর আসার পরে বর্তমান গুদাম ইনচার্জ মতিয়ার রহমানের ঘুম হারাম হয়েছে। হন্যে হয়ে ছুটছেন অনৈতিক অর্থের পেছনে। স্থানীয় ধান ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তি করে প্রতিদিন ৩ ট্রাক ধান কিনছেন। প্রতি ট্রাকে ১৮টন ধান থাকছে। ট্রাক প্রতি ঘুষ নেয়া হচ্ছে ২১ হাজার টাকা। সে হিসাবে শুধু ধান কেনা বাবদ ৩ ট্রাক থেকে মোট ৬৩ হাজার টাকা প্রতিদিন ঘুষ বাণিজ্য করছেন গুদাম ইচার্জ মতিয়ার রহমান।
সুত্র বলছে, গোপালগঞ্জ ও নড়াইল জেলা থেকে ব্যাপারীরা কম দামে নিম্নমানের এ ধান ক্রয় করে ভোর সকালে গুদামে পৌঁছে দিচ্ছে। সর্বক্ষনিক সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রিত উপজেলা খাদ্য অফিসের ভিতর ট্রাকে করে ধান পৌঁছে দেয়ার পরও উপজেলা খাদ্য অফিসারের নিরবতায় নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, উপজেলা অফিসারকে ম্যানেজ করেই চলছে এ অনৈতিক কারবার। ওই অফিসের সিসি ক্যামেরা পরীক্ষা করলেও এর সতত্যা পাওয়া যাবে।
সুত্রবলছে, এ্যাপসের মাধ্যমে ধান কেনা হয়ে থাকলেও গুদাম ইনচার্জ মতিয়ার রহমান আগের থেকে স্থানীয় খাদ্যশস্য ব্যবসায়ীদের সাথে চুক্তি করে কৌশলে কৃষকের ভোটার আইডি কার্ডেও ফটোকপি সংগ্রহ করে নিয়েছেন। সামান্য অর্থের লোভ দেখিয়ে তাদের দিয়ে ব্যাংক একাউন্ট করে চেকে স্বাক্ষর করে নিয়েছেন। আর এখন ওই কৃষকের নামেই জমা করছেন ধান। অল্প সময়ের মধ্যে এত বেশি ধান কেনায় খাতা কলম মেনটেন্ট করতেও হিমশিম খাচ্ছেন।
এর আগে গুদাম ইনচার্জ মতিয়ার রহমান মেহেরপুর উপজেলার গাংনী উপজেলার সরকারি খাদ্যগুদামের ওসিএলএসডি হিসাবে কর্মরত ছিলেন। সেখানে নিয়ম বহিভূক্তভাবে লাল চাল ক্রয় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ওই সময় তাকে নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমটিও গঠন করা হয়। ওই তদন্ত কমিটিকে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে ম্যানেজ করে তিনি ওই যাত্রায় রক্ষা পান বলে অভিাযোগ রয়েছে।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে চৌগাছা খাদ্য গুদামের ইনচার্জ মতিয়ার রহমান বলেন, তিনি নিয়ম মেনে সংগ্রহ অভিযান পরচালনা করছেন। অভিযোগ একবারে ভিত্তিহীন।
চৌগাছা উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা ফাতেমা সুলতানা বলেন, বিষয়টি তিনি জানেন না । এ ব্যাপরে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন।
যশোরের জেলা খাদ্য কর্মকর্তা শেফাউর রহমান বলেন, তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অভিযোগের বিষয়ি যাচাই-বাছাই করে ব্যাবস্থা নেবেন।