আগামি ৫ জুন যশোর সদর উপজেলা নির্বাচন !

আগামী ৫ জুন যশোর সদর উপজেলায় নির্বাচন। রোববার ২৬ মে আদালত
রায় দেয়ার পর নির্বাচন সংশ্লিষ্টরা এ তথ্য দিয়েছেন। তবে, যশোরের
জেলা নির্বাচনী অফিসে নির্বাচন অনুষ্ঠান সংক্রান্ত কোন চিঠি
আসেনি জানান জেলা নির্বাচন অফিসার আনিসুর রহমান। তবে তারা
টিভির খবরে দেখেছেন ৫ জুন যশোরে নির্বাচন অনুষ্ঠান হবে। এ
সংক্রান্ত রায় দিয়েছে আদালত। রায়ের কপি নির্বাচন কমিশনে আসার পর
কমিশন তারিখ নির্ধারণ করবে।

এরপর কমিশন সেটি রিটার্নিং অফিসারকে অবহিত করলে তিনি নির্বাচন গ্রহণের প্রস্তুতি নেবেন।
মাত্র পাঁচদিন বাকি থাকতে স্থগিত হয়ে যায় যশোর সদর উপজেলার
নির্বাচন। এ কারণে ২৯ মে আর ভোট হচ্ছে না। শাহারুল ইসলাম নামে
একজন চেয়ারম্যান প্রার্থীর একটি মামলার আদেশের পর ভোট গ্রহণ না
করার সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার ২৩ মে বিকেলে
কমিশনের এ সংক্রান্ত এক পত্র আসে যশোরে । ওইপত্রের স্মারক নম্বর উল্লেখ
করে রিটার্নিং অফিসার আব্দুর রশিদ ওইদিন সন্ধ্যায় নির্বাচন
স্থগিতের পত্র জারি করেন।

আগামি ২৯ মে যশোর সদর উপজেলা নির্বাচনে আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদ
চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা
দেন। এরপর একটি পদে থেকে আরেকটি পদে নির্বাচন করা যাবে না
উল্লেখ করে রিটার্নিং অফিসার তাকে প্রতীক বরাদ্দ দেননি বলে দাবি
করেন তিনি। এ কারণে তিনি তার মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করতে হাই
কোর্টে রিট পিটিশন করেন। রিট পিটিশন নম্বর ৫৫৭৫/২০২৪। এরপর গত
১৩ মে হাই কোর্ট শাহারুল ইসলামকে নির্বাচনে অংশগ্রহণসহ তার
অনুকূলে প্রতীক বরাদ্দের আদেশ দেয়।

ওই আদেশের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশন আপিল বিভাগে সিপিএলএ নম্বর ১৭১৩/২০২৪ দায়ের করলে গত ২০
মে ‘নো অর্ডার’ আদেশ জারি করে আপিল বিভাগ। আপিল বিভাগের
ওই আদেশ বাস্তবায়নে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত আগামী ২৯ মের
সকল পদের নির্বাচন স্থগিত রাখার জন্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত
নেয়। এ সংক্রান্ত পত্র যশোর সদর উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং
অফিসার আব্দুর রশিদের কাছে বৃহস্পতিবার বিকেলে পৌঁছে। যার
স্মারক নম্বর ১৭.০০.০০০০.০৭৯.৪০.০০৬.২৪-৩৫৮।

নির্বাচন স্থগিত সংক্রান্ত নির্বাচন কমিশনের পত্র পাওয়ার সাথে সাথে
২৯ মের ভোট স্থগিত করে পত্র জারি করেন রিটার্নিং অফিসার আব্দুর
রশিদ। তিনি তার স্বাক্ষরিত পত্রে উল্লেখ করেন,‘এতদ্বারা সর্বসাধারণের
অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, আগামী ২৯ মে অনুষ্ঠিতব্য যশোর
সদর উপজেলা পরিষদের সকল পদের নির্বাচন, মাননীয় নির্বাচন কমিশন
কর্তৃক ২৩ মে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশ বাস্তবায়নের
নিমিত্তে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়।
তদপ্রেক্ষিতে আমি মো. আব্দুর রশিদ, অতিরিক্ত জেলা নির্বাচন
অফিসার, যশোর ও রিটার্নিং অফিসার যশোর সদর উপজেলা পরিষদ
নির্বাচন-২০২৪ উক্ত উপজেলা পরিষদের সকল পদের র্নির্বাচন স্থগিত
করলাম।’
সন্ধ্যার পরপরই নির্বাচন স্থগিতের খবর ছড়িয়ে পড়লে ভোটারদের মধ্যে
নানা প্রশ্ন দেখা দেয়। অনেকেই নির্বাচন স্থগিত হওয়ার কারণ জানতে
চান। আবার কেউ কেউ জানতে চান নির্বাচন স্থগিতের বিষয়টি
সত্যি কিনা। এদিকে, সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সাতজন
চেয়ারম্যান, পাঁচজন ভাইস চেয়ারম্যান ও তিনজন মহিলা ভাইস
চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে গণসংযোগ ও প্রচার-
প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। দুপুর দুটো থেকে রাত আটটা পর্যন্ত
চলছে মাইকিং। প্রার্থীরা যাচ্ছেন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে। সবমিলিয়ে
ইতিমধ্যে ভোট জমে উঠেছে। এরমধ্যে স্থগিত হওয়ার খবরে প্রার্থীদের
মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।
এদিকে, চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহারুল ইসলাম দাবি করেছেন তিনি
জোড়া ফুল প্রতীক পেয়েছেন। তবে রিটার্নিং অফিসার আব্দুর রশিদ
জানিয়েছেন, নির্বাচন কমিশন তাকে না জানানো পর্যন্ত তিনি
কোন প্রতীক বরাদ্দ দিতে পারবেন না।